21.4 C
London
May 12, 2025
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

স্কিলড ওয়ার্কার ভিসা বিধি, দেশ থেকে বহিষ্কার এবং ফি বৃদ্ধিঃ ইমিগ্রেশন হোয়াইট পেপারে কী রয়েছে

যুক্তরাজ্যের হোম অফিস তাদের বহু প্রতীক্ষিত ইমিগ্রেশন সংক্রান্ত নীতিপত্র প্রকাশ করেছে। কেয়ার স্টারমার তার নির্বাচনী ইশতেহারে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এই পার্লামেন্ট মেয়াদ শেষে যুক্তরাজ্যে আগত মানুষের সংখ্যা “গুরুত্বপূর্ণভাবে” কমে যাবে। হোয়াইট পেপারে তার সুস্পষ্ট ইঙ্গিত রয়েছে। নিচে এই হোয়াইট পেপারের মূল পয়েন্টগুলো তুলে ধরা হলো:

১. নেট মাইগ্রেশন কমবে

নীতিগত এই নথিতে রাজনৈতিক বক্তব্যও রয়েছে। স্টারমার এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়েভেট কুপার উভয়েই আগত সংখ্যা কমানোর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছেন, যদিও নির্দিষ্ট সংখ্যা বা লক্ষ্য নির্ধারণ করেননি।

স্টারমার বলেছেন, কনজারভেটিভদের অধীনে এক ধরনের “ওপেন বর্ডার” নীতির কারণে ২০২৩ সালে নেট মাইগ্রেশন ৯ লাখেরও বেশি হয়েছিল, যা জনসেবা ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

২. দক্ষ ভিসা ব্যবস্থার কড়াকড়ি বৃদ্ধি

দক্ষ শ্রমিকদের জন্য ভিসা পেতে হলে এখন RQF3 (A-লেভেলের সমতুল্য) যোগ্যতা দরকার হয়। নতুন নিয়মে তা বাড়িয়ে RQF6 (ডিগ্রির সমতুল্য) করা হবে। তবে RQF3-5 লেভেলের কাজের জন্য সীমিত সময়ের জন্য ভিসা দেওয়া যাবে যদি সরকারী পরামর্শ কমিটি ঘাটতি স্বীকার করে।

৩. সোশ্যাল কেয়ার ভিসা

সোশ্যাল কেয়ার খাতে বিদেশি কর্মী নিয়োগ পুরোপুরি বন্ধ করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। তবে ২০২৮ সাল পর্যন্ত একটি “পরিবর্তনকালীন সময়সীমা” থাকবে, যার মধ্যে বর্তমানে যুক্তরাজ্যে থাকা ব্যক্তিরা এই খাতে স্থানান্তরিত হতে পারবেন।

তবে অনেকেই আশঙ্কা করছেন, এতে করে কর্মী সংকট আরও বাড়বে এবং যত্নসেবা ব্যাহত হতে পারে।

৪. স্টুডেন্ট ভিসা

অতিরিক্ত শিক্ষার্থী আগমনের কারণে অভিবাসন সংখ্যা বেড়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। নিম্নমানের প্রতিষ্ঠানে ভর্তির কারণে উদ্বেগ প্রকাশ করে ভিসা স্পনসর প্রতিষ্ঠানের ওপর কড়া নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হচ্ছে। এছাড়া স্বল্পমেয়াদি ভাষা কোর্সের জন্য আগত শিক্ষার্থীদের রুটও পর্যালোচনা করা হবে।

৫. ভাষা দক্ষতার শর্ত

ইংরেজি ভাষা দক্ষতা সংক্রান্ত শর্ত আরও কঠোর করা হবে। যারা ভিসা এক্সটেনশন বা স্থায়ী বসবাসের জন্য আবেদন করবেন, তাদের ইংরেজি দক্ষতার অগ্রগতি প্রমাণ করতে হবে।

সব প্রাপ্তবয়স্ক নির্ভরশীলকেও অন্তত প্রাথমিক ইংরেজি জানাতে হবে এবং ধীরে ধীরে দক্ষতা উন্নয়নের প্রমাণ দিতে হবে।

৬. স্থায়ী বসবাসের জন্য অপেক্ষার সময় বাড়ানো

বর্তমানে ৫ বছর যুক্তরাজ্যে অবস্থান করলে “ইনডেফিনিট লিভ টু রিমেইন” বা স্থায়ী বসবাসের জন্য আবেদন করা যায়। নতুন নিয়মে সেটি বাড়িয়ে ১০ বছর করা হয়েছে, যা অনেকের মতে সমাজে একীভূত হওয়া কঠিন করে তুলবে।

৭. অপরাধ ও বহিষ্কার নীতি

কোনও বিদেশি নাগরিক অপরাধ করলে, এখন এক বছরের বেশি সাজা পেলেই তাকে বহিষ্কারের বিবেচনায় আনা হয়। নতুন নিয়মে সব ধরণের অপরাধের ক্ষেত্রে, বিশেষ করে যৌন অপরাধে, বহিষ্কারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

এছাড়া, মানবাধিকারের ৮ নম্বর ধারা (পারিবারিক জীবনের অধিকার) কীভাবে প্রয়োগ হবে, তা “স্পষ্ট করার” উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

৮. ভিসা ফি বৃদ্ধি

“ইমিগ্রেশন স্কিলস চার্জ” ৩২% বাড়ানো হয়েছে। এই চার্জ বিদেশি কর্মী নিয়োগে নিয়োগকর্তাকে দিতে হয় (গবেষকসহ কিছু পেশা বাদে)। ২০১৭ সালের পর এই চার্জ বাড়ানো হয়নি।

৯. ই-আইডেন্টিটি কার্ড চালু

বিদেশি নাগরিকদের চলাচল ও অবস্থান আরও ভালোভাবে নজরদারির জন্য নতুন ইলেকট্রনিক পরিচয়পত্র ব্যবস্থা চালু করা হবে, যা বর্তমানের বায়োমেট্রিক রেসিডেন্স পারমিট কার্ডের জায়গা নেবে।

সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান

এম.কে
১২ মে ২০২৫

আরো পড়ুন

নামে মিল থাকায় একজন মুসলিম ব্রিটিশ নাগরিককে বিমানবন্দরে হেনস্তা

এপ্রিলে কমেছে যুক্তরাজ্যের নিত্যপণ্যের মুদ্রাস্ফীতি

এক নজরে যুক্তরাজ্যের আসন্ন সাধারণ নির্বাচন