ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে আসা আশ্রয় প্রার্থীদের সামরিক ঘাঁটিতে রাখার ‘বিতর্কিত পরিকল্পনা’ বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে ব্রিটেন সরকার৷ পাশাপাশি নৌযানেও তাদের রাখার কথা বলেছেন অভিবাসন মন্ত্রী রবার্ট জেনরিক৷
ইংলিশ চ্যানেল দিয়ে ছোট ছোট নৌকায় করে আসা অভিবাসনপ্রত্যাশী ও শরণার্থীদের আগমন ঠেকাতে মরিয়া ব্রিটেনের সরকার৷ এজন্য একের পর এক কঠোর পদক্ষেপের ঘোষণা দেয়া হচ্ছে৷
এবার সমুদ্রেপথে আসাদের সামরিক ঘাঁটিতে রাখার কথা বললেন অভিবাসনমন্ত্রী রবার্ট জেনরিক৷ স্থান সঙ্কুলান না হওয়ায় অভিবাসীদের হোটেলে রাখা নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্কের পরিপ্রেক্ষিতে এই পরিকল্পনার কথা জানান তিনি৷ দেশটির পার্লামেন্টে তিনি বলেন, দক্ষিণপূর্ব ও পূর্ব ইংল্যান্ডের সামরিক এলাকাগুলোতে অভিবাসীদের ‘মৌলিক আবাসনের’ পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে সরকার৷
আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই কয়েক হাজার আশ্রয়প্রার্থীকে ‘ব্যারাক ব্লক’ ও ‘পোর্টেবল ক্যাবিন’ বা বহনযোগ্য কক্ষে রাখা হবে বলে অবহিত করেন তিনি৷
তবে সামরিক ঘাঁটিতে অভিবাসীদের রাখার এই পরিকল্পনা নিয়ে আগে থেকেই বিতর্ক চলছে ব্রিটেনে৷ মানবাধিকার সংগঠনগুলোর সমালোচনার পাশাপাশি ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলিও তার নির্বাচনী এলাকাতে এই উদ্যোগ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন৷
শুধু সামরিক ঘাঁটি নয়, উপকূলীয় অঞ্চলে সামুদ্রিক যানেও অভিবাসীদের রাখার সম্ভাবনার কথা জানান জেনরিক৷ এই বিষয়ে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে চার্টার্ড প্রমোদতরীতে ইউক্রেনীয়দের থাকার ব্যবস্থার উদাহরণ তুলে ধরেন তিনি৷ তিনি জানান, আমস্টারডামের সমুদ্রে প্রায় ২০ কিলোমিটার বাইরে একটি ভাসমান জাহাজে বর্তমানে সেইদেশের সরকার প্রায় ৯০০ জন আশ্রয়প্রার্থীকে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছে।
তবে আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য ভাসমান অবস্থায় বসবাসের ব্যবস্থা করায় নেদারল্যান্ডস সরকার সমালোচনার মুখে পড়েছে বলে বিশ্ব গণমাধ্যমের রিপোর্টে উঠে আসে। নেদারল্যান্ডস সরকারের একজন মুখপাত্র বলেন, আশ্রয়প্রার্থীদের ব্যাপারে তাদের সরকার বিভিন্নভাবে পরিকল্পনা করে যাচ্ছে। এতো বেশি শরনার্থীদের চাপ মোকাবেলা করা আসলেই কঠিন।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে ফ্রান্স থেকে বিপুল আশ্রয়প্রার্থী ছোট নৌকায় চেপে সমুদ্র পেরিয়ে ব্রিটেনে পৌঁছান৷ ২০১৮ সালে মাত্র ৩০০ জন ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে আসলেও, গত বছর তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৫ হাজারে৷ এই আগমন ঠেকাতে রুয়ান্ডা নীতি বাস্তবায়নসহ অভিবাসনবিরোধী নতুন আইন পার্লামেন্টে তুলেছে ঋষি সুনাকের সরকার৷ বিলটি ঠেকাতে সোমবার পার্লামেন্টের দুই কক্ষের আইনপ্রণেতাদের প্রতি চিঠি দিয়েছেন ইউরোপীয় কমিশনের মানবাধিকার বিষয়ক কমিশনার দুনিয়া মিয়াতোভিচ।