12 C
London
November 5, 2024
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)শীর্ষ খবর

ইঙ্গিতপূর্ণ বিজ্ঞাপন প্রচার নিয়ে যুক্তরাজ্যে সমালোচনার মুখে পুলিশ

সরকারী সংস্থা এবং পুলিশ বাহিনী সংখ্যালঘু গোষ্ঠীকে অভিবাসন, চাকরি এবং অপরাধ সম্পর্কিত বিষয়ে ইঙ্গিতপূর্ণ হাইপার-টার্গেটেড সোশ্যাল মিডিয়া বিজ্ঞাপন ব্যবহার করছে বলে এক প্রতিবেদনে জানা যায়।

অনেকগুলি স্যোশাল মিডিয়া তাদের বিজ্ঞাপনে জাতি, ধর্মীয় বিশ্বাস এবং যৌন দৃষ্টিভঙ্গি সহ বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।

একটি তরুণদের সাহায্য প্রকল্পের বিজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে যাদের, “আফ্রো-টেক্সচারযুক্ত চুল” রয়েছে তারা যেন বিজ্ঞাপনটি এড়িয়ে যান। এভাবে মেটা’র ফেসবুকে বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে হিজাব,দাঁড়ি, এলজিবিটিকিউ সহ বিভিন্ন শ্রেণীকে টার্গেট করে বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে যা রেসিজম উস্কে দেয়ার মতো বিষয় বলে মনে করেন সমাজবিজ্ঞানীরা।

মাইক্রোটার্গেটিংয়ের মাধ্যমে ১২,০০০ এরও বেশি বিজ্ঞাপন বিশ্লেষণে এইসব তথ্য প্রকাশিত হয়। ২০২০ হতে ২০২৩ সালের মধ্যে স্যোশাল মিডিয়া বিজ্ঞাপনের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। এরজন্য দায়ী প্রতিষ্ঠান হিসেবে মেটা’র ফেসবুক ও ইন্সটাগ্রামের মতো বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মকে দায়ী করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

যদিও ২০২১ সালে, ফেসবুক বৈষম্যমূলক বিষয়ের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতি, ধর্ম এবং যৌন দৃষ্টিভঙ্গির উপর ভিত্তি করে দেয়া বিজ্ঞাপনের উপর নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেয়। যার ফলে বিভিন্ন বিজ্ঞাপন প্রচার হতে অপসারণ করা হয়।

২০২২ সালের গ্রীষ্মে একটি প্রচারণায়, হোম অফিস আফগানিস্তান, সিরিয়া এবং ইরাকের লোকদের যুক্তরাজ্যে আসা রোধ করার লক্ষ্যে শত শত বিজ্ঞাপন প্রচার করেছিল। যদিও ফেসবুক বিজ্ঞাপনদাতাদের সরাসরি জাতীয়তার ভিত্তিতে লোককে টার্গেট করার অনুমতি দেয় না। তাই ইঙ্গিতপূর্ণ কথা যেমনঃ”আফগানিস্তান জাতীয় ক্রিকেট দল”, “ইরাকের ফুটবল” এবং “সিরিয়ান খাবার” ইত্যাদি বিজ্ঞাপনে প্রক্সি হিসাবে ব্যবহৃত হয়।

প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী জানা যায়, ক্রাইমস্টপার ২০২৩ সালের মার্চ মাসে সোমালিয়ান দুইজন সন্দেহভাজনের তথ্য জানতে ইঙ্গিতপূর্ণ শব্দ হিসেবে “মোগাদিশু”, “সোমালি ভাষা” এবং “সোমালিয়া জাতীয় ফুটবল দল” সহ নানা ধরনের শব্দ ব্যবহার করে। এইসব তথ্য বিশ্লেষণ করেন একদল গবেষণাকর্মী যারা
এডিনবার্গ, কেমব্রিজ, নেপিয়ার এবং স্ট্র্যাথক্লাইড বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত।

তবে এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজিটাল পদ্ধতির প্রভাষক বেন কলিয়ার বলেন, ” মানুষেরা নীতি হতে বেরিয়ে এসেছে তারা ভাষা প্রয়োগে যত্নশীল নয়। তারা এমন শব্দ ব্যবহার করে যাচ্ছে তা আপত্তিকর একটি সুন্দর সমাজ ব্যবস্থার জন্য।

অক্সফোর্ড ইন্টারনেট ইনস্টিটিউটের প্রযুক্তি ও নিয়ন্ত্রণের অধ্যাপক স্যান্ড্রা ওয়াচটার তার গবেষণায় উল্লেখ করেন, মানুষ নিজের মনের অগোচরে একটা পক্ষকে নিজের আর অন্য পক্ষকে তার বিরোধী বলে চিহ্নিত করে বসে। তার অবচেতন মন তাকে বাধ্য করে এইভাবে ভাবতে এর মূল কারণ সচেতনতা ও সঠিক শিক্ষার অভাব। আমাদের বিশাল পদ্ধতিগত বৈষম্য রয়েছে, যুক্তরাজ্যে পুলিশ সাদা মানুষের তুলনায় অনেক বেশি হারে কালো বর্ণের মানুষকে গ্রেফতার করে। এটাও অবচেতন মনেরই কাজ।”

লিসেস্টারের সোমালি সম্প্রদায়ের লক্ষ্য নিয়ে বিজ্ঞাপন চালানো ক্রাইমস্টপার্স জানায়, ইঙ্গিতপূর্ণ বিজ্ঞাপনগুলি প্রায়শই স্থানীয় পুলিশদের অনুরোধে প্রচার করা হয়।

গ্রেটার ম্যানচেস্টার পুলিশ জানিয়েছে বিজ্ঞাপন প্রচারে যায় অপরাধ সমাধানের জন্য এবং ক্ষতিগ্রস্থদের সমর্থন করার জন্য। তারা বলেন বিজ্ঞাপনগুলি বিধিবিধান মেনে তৈরি করা হয়।

সরকারের একজন মুখপাত্র মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন, “প্রচারগুলি সর্বদা কার্যকরভাবে মূল শ্রোতাদের কাছে পৌঁছানোর জন্য এবং করদাতার অর্থের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে ডিজাইন করা হয়। বিজ্ঞাপন চ্যানেলগুলি জাতীয়, আঞ্চলিক এবং স্থানীয় পর্যায়ে শ্রোতাদের কাছে পৌঁছানোর জন্য দক্ষতার ভিত্তিতে নির্বাচিত করা হয়। ”

এম.কে
১৩ আগস্ট ২০২৩

আরো পড়ুন

ডগটরেট ডিগ্রিধারী’ কুকুর

এবার করোনার টিকা ছাড়া হজের অনুমতি দিবে না সৌদি

অনলাইন ডেস্ক

বরিস জনসন কী ‘অর্থের বিনিময়ে প্রবেশের সংস্কৃতি’ তৈরি করেছে?