কয়েক দশক ধরে সুইজারল্যান্ডে কাজ করতে আসা অভিবাসীদের সন্তানরা সেদেশের একটি ইমিগ্রেশন আইন নিয়ে কথা বলে আসছে। এই আইনের কারণে বহু পরিবার ধ্বংস এবং অনেককে বিধ্বস্ত করেছে।
১৯৫০ এর দশক থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত, কয়েক হাজার শ্রমিক ইতালি, স্পেন, পর্তুগাল এবং তৎকালীন যুগোস্লাভিয়া থেকে সুইজারল্যান্ডে যাত্রা করেছিলেন।
তারা কারখানায়, রাস্তা, বিভিন্ন নির্মাণ কাঠামো, রেস্টুরেন্ট এবং হোটেলগুলিতে কাজ করেছিলেন। সুইজারল্যান্ডের অত্যন্ত সফল অর্থনীতি এবং ভালো অবকাঠামোর জন্য সন্দেহাতীতভাবে তাদের অবদান রয়েছে।
কিন্তু দেশটির অভিবাসন নীতিতে বেশ বড় রকমের ভুল ছিল যা অভিবাসীদের জন্য দুর্দশার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এই সিজনাল পারমিটে কেবল ৯ বা ১২ মাসের থাকার অধিকার দেওয়া হতো। তাদেরকে ব্যারাকে রাখা হতো এবং কেবলই কাজ করানো হতো।
পরিবারের সদস্য এমনকি সন্তানদেরও থাকার অনুমোতি দেওয়া হতো না। তবে স্বামী-স্ত্রী দুইজনই কাজ করলে আসতে পারতেন। কিন্তু তাদের সন্তানকে দেশে রেখে আসতে হতো।
অভিবাসী শ্রমিকরা যদি স্বল্প মেয়াদে থাকতেন তাহলে একটা কথা ছিল, তাদের ওয়ার্ক পারমিট বছরের পর বছর নবায়ন করা হয়েছে। কেউ কেউ তাদের পুরো জীবন সুইজারল্যান্ডে কাটিয়েছেন। অনেকে পারমিশনের আশায় সেখানে বসতি স্থাপন করেন, কিন্তু আশার আলো মেলে না।
সন্তানদের দেশে রেখে কাজ করতে গিয়ে এভাবে বহু পরিবার বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ভাগ্যের গ্যাঁড়াকলে পরিবার ধ্বংস হওয়ার মতো মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
সিজনাল ওয়ার্ক পারমিট অবশেষে ২০০২ সালে বিলুপ্ত হয়। আজ, অভিবাসী শ্রমিকদের শিশুরা প্রাপ্তবয়স্ক। তারা অনেকে মিলে একটি দল গঠন করেছেন।
বিবিসির সাক্ষাৎকারে বাবা-মায়ের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া এই সন্তানেরা তাদের দুঃখ দুর্দশার কথা বর্ণনা করেন। তাদের বিশ্বাস, এই অভিবাসী আইনের কারণেই এই দুর্দশা।
১৪ নভেম্বর ২০০২
এনএইচ