যুক্তরাজ্যের এনএইচএস ট্রাস্ট হাসপাতালে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুলস ব্যবহার শুরু করেছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুলস সফলভাবে ১১ জন মহিলার স্তন ক্যান্সারের ক্ষুদ্র কোষ সনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছে। যা মানব চিকিৎসকরা ধরতে ব্যর্থ হয়েছিলেন বলে বিবিসির প্রতিবেদনে প্রকাশ পায়।
এমআইএ নামে পরিচিত এই সরঞ্জামটি এনএইচএস চিকিৎসকদের পাশাপাশি চিকিৎসার কাজে চালিত হচ্ছে।যা ইতোমধ্যে দশ হাজারেরও বেশি মহিলার ম্যামোগ্রাম বিশ্লেষণ করেছে। তাদের বেশিরভাগই ক্যান্সারমুক্ত ছিল, তবে এমআইএ সফলভাবে ১১ জন রোগীকে সনাক্ত করতে সক্ষম হয় যারা ক্যান্সার কোষ দ্বারা আক্রান্ত।
প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সার কোষগুলো অত্যন্ত ছোট থাকে বিধায় সনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়ে। যা মানুষের চোখে কার্যত অদৃশ্য হিসাবেই থাকে। তবে এই কোষগুলো পরবর্তীতে দ্রুত বৃদ্ধি এবং ছড়িয়ে পরতে পারে।
১১ জন রোগীর মধ্যে একজন বারবারা যিনি ক্যান্সার আক্রান্ত বলে এমআইএ দ্বারা চিহ্নিত হোন। ৬ মিমি সাইজের টিউমার চিহ্নিত হবার পর দ্রুত অপারেশন সম্পন্ন করা হয় বলে বারবারা বিবিসি নিউজকে জানান। তারপর তাকে পাঁচ দিনের রেডিওথেরাপি দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। উল্লেখ্য যে, টিউমারযুক্ত স্তন ক্যান্সারে রোগীদের ১৫ মিমি’র চেয়ে ছোট যখন চিহ্নিত করা সম্ভব হয় তখন ৯০% রোগীদের বাঁচানো সম্ভব হয় বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞদে মতে এআই সরঞ্জামের সহায়তা ব্যতীত, বারবারার ক্যান্সার সনাক্ত করা প্রায় অসম্ভব ছিল। সাধারন রুটিণ অনুযায়ী ম্যামোগ্রামের মাধ্যমে ক্যান্সার কোষ সনাক্ত করতে তিন বছর পর্যন্ত সময় লাগতো। এইসময়ের ভিতরে রোগী তার শরীরে কোনো লক্ষণীয় পরিবর্তন অনুভব করেন না।
ক্যান্সার রিসার্চ ইউকে-র স্বাস্থ্য তথ্যের প্রধান ডাঃ জুলি শার্প বলেন, এআই প্রযুক্তির ব্যবহারে এনএইচএস পরিষেবাদি উন্নত করা সক্ষম হবে এবং তা কর্মীদের উপর চাপ কমাতেও সহায়তা করবে। তবে তিনি যোগ করেন, ক্যান্সার রোগীদের চিহ্নিত করার ফলাফল উন্নত করতে হলে প্রযুক্তিটি ব্যবহারের সর্বোত্তম উপায় খুঁজে বের করতে হবে, তারজন্য প্রয়োজন আরও গবেষণার।
তথ্যানুযায়ী জানা যায় এনএইচএস ট্রাস্ট হাসপাতালে কেবল এমআইএ দ্বারা বিশ্লেষণ করা হয় না – প্রত্যেকেরও মানবিক চিকিৎসক দ্বারাও পরীক্ষা করা হয়ে থাকে। বর্তমানে দুইজন রেডিওলজিস্ট প্রতিটি পৃথক স্ক্যানের দিকে নজর রাখেন। তবে আশা করা যায় অদূর ভবিষ্যতে তাদের মধ্যে একটি এমআইএ দ্বারা প্রতিস্থাপন করা হবে। যা কার্যকরভাবে কাজের চাপকেও অর্ধেক করে দিবে। ক্যান্সার স্ক্রিনিং পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ১০,৮৮৯ জন মহিলার মধ্যে কেবল ৮১ জন এআই সরঞ্জাম দ্বারা তাদের স্ক্যান পর্যালোচনা করতে চাননি বলেও জানান এনএইচএসের একজন কর্মকর্তা।
সূত্রঃ বিবিসি
এম.কে
২১ মার্চ ২০২৪