TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

প্রতি আট তরুণের একজন কর্মহীনঃ যুক্তরাজ্যে নতুন তদন্ত শুরু

যুক্তরাজ্যে কাজ বা পড়াশোনায় যুক্ত নয় এমন তরুণদের সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে যাওয়ায় এ নিয়ে একটি স্বাধীন পর্যালোচনা শুরু করেছে সরকার। এই তদন্তের নেতৃত্ব দেবেন সাবেক লেবার হেলথ সেক্রেটারি অ্যালান মিলবার্ন।

“নিটস” (NEETs) – অর্থাৎ যারা শিক্ষা, কর্মসংস্থান বা প্রশিক্ষণের সঙ্গে যুক্ত নয় – এই শ্রেণির তরুণদের সংখ্যা সম্প্রতি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ওয়ার্ক অ্যান্ড পেনশনস সেক্রেটারি প্যাট ম্যাকফ্যাডেন বলেছেন, তরুণদের শিক্ষা বা কর্মজীবন থেকে ছিটকে পড়া এখন একটি “সুযোগের সংকট” এবং এটি মোকাবেলায় জরুরি পদক্ষেপ প্রয়োজন।

 

সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বর্তমানে প্রতি আটজন তরুণের মধ্যে একজন নিটস অবস্থায় রয়েছে। সংখ্যাটি প্রায় এক মিলিয়নের কাছাকাছি পৌঁছেছে। প্রায় এক-চতুর্থাংশ তরুণ দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতা বা অক্ষমতাকে কর্মজীবনে ফিরে আসার প্রধান বাধা হিসেবে উল্লেখ করেছে। একই সঙ্গে স্বাস্থ্য ও প্রতিবন্ধী ভাতা গ্রহণকারীর সংখ্যাও দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

সরকার জানিয়েছে, অ্যালান মিলবার্নের নেতৃত্বাধীন এই তদন্ত তরুণদের কর্মহীনতার মূল কারণ অনুসন্ধান করবে, তাদের ভাতা-নির্ভরতা কমিয়ে কর্মসংস্থানে যুক্ত করার উপায় খুঁজবে এবং দীর্ঘমেয়াদি সামাজিক ব্যয় হ্রাসের সম্ভাবনা পর্যালোচনা করবে। প্রতিবেদনের ফলাফল আগামী গ্রীষ্মে প্রকাশ করা হবে।

প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার স্বীকার করেছেন যে বর্তমান কল্যাণ ভাতা ব্যবস্থা “টেকসই বা ন্যায্য নয়”। তবে এই ব্যবস্থা সংস্কারে রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জও রয়েছে, বিশেষত লেবার পার্টির নিজস্ব সংসদ সদস্যদের মধ্যে।

ওয়ার্ক অ্যান্ড পেনশনস বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, গত পাঁচ বছরে ইউনিভার্সাল ক্রেডিট (UC) স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থান সহায়তা ভাতা গ্রহণকারী তরুণদের সংখ্যা ৫০ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে। তাদের মধ্যে ৮০ শতাংশ মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা বা নিউরোডেভেলপমেন্টাল অবস্থার কথা উল্লেখ করেছে।

ম্যাকফ্যাডেন সানডে টাইমস-কে বলেন, “আমি অপেশাদার ডাক্তার নই, তবে প্রশ্ন হচ্ছে—তরুণদের মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার এই বৃদ্ধি মোকাবেলায় সর্বোত্তম নীতি কী হতে পারে? আমি মনে করি না, প্রতিটি রোগ নির্ণয়ের সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভাতা প্রাপ্তির সম্পর্ক থাকা উচিত।”

তিনি আরও বলেন, “যদি আমরা এটি সঠিকভাবে করতে পারি, তবে এর ফলাফল হবে বিশাল—তরুণ প্রজন্মের সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে তাদের জীবন পরিবর্তন, অর্থনীতিতে নতুন গতি আনা এবং সবার জন্য একটি ভালো ভবিষ্যৎ নির্মাণ।”

অ্যালান মিলবার্ন বলেন, তার পর্যালোচনা হবে “অসংযত ও কঠোর”, যা কর্মসংস্থান সহায়তা, শিক্ষা, দক্ষতা, স্বাস্থ্য ও কল্যাণ ব্যবস্থায় বিদ্যমান দুর্বলতাগুলো উন্মোচিত করবে। “আমরা চুপচাপ বসে থাকতে পারি না এবং একটি প্রজন্মকে চাকরি ও ভবিষ্যৎহীন জীবনের দিকে ঠেলে দিতে পারি না,” তিনি যোগ করেন। “এখনই পদক্ষেপ নেওয়ার সময়।”

সূত্রঃ বিবিসি

এম.কে

আরো পড়ুন

যুক্তরাজ্যে কারাগারের ভয়াবহ ভুলে মুক্ত কেবাতু আবার হেফাজতে, জনরোষে চাপে লেবার সরকার

ইইউ বায়োমেট্রিক প্রকল্প হতে যাচ্ছে যুক্তরাজ্যের নতুন মাথাব্যথা

রানির শেষকৃত্যানুষ্ঠানের লাইভ আপডেট

অনলাইন ডেস্ক