স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল ইউরোপের দুই দেশ স্পেন ও আয়ারল্যান্ড। দেশ দুটি আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিতে জোট বাঁধার ঘোষণাও দিয়েছে। এ ছাড়া ইউরোপের দেশ নরওয়েও ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র স্বীকৃতি দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার আয়ারল্যান্ডের রাজধানী ডাবলিনে এক বৈঠকে স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ ও নয়া আইরিশ প্রধানমন্ত্রী সিমন হ্যারিস যৌথভাবে এ সিদ্ধান্তে পৌঁছান। এ সময় তারা ফিলিস্তিন-ইসরায়েল দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানের বিষয়টি প্রতিষ্ঠা করতে নিজের প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করেন।
বৈঠকের পর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে সিমন হ্যারিস বলেন, ‘ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের স্বীকৃতি অনেকটা কাছাকাছি চলে এসেছে। আয়ারল্যান্ড সঠিক সময়ে স্পেন ও অন্যান্য দেশের সঙ্গে মিলে বিষয়টি নিশ্চিত করবে।’ তবে কোন কোন দেশ এবং কবে নাগাদ এই স্বীকৃতি আসতে পারে, সে বিষয়ে কোনো তথ্য দেননি সিমন হ্যারিস।
সিমন হ্যারিস আরও বলেন, ‘আমরা যখন এগিয়ে যাই, তখন আমরা অন্য সবার সঙ্গে মিলে এই সিদ্ধান্ত শক্তিশালী করতে চাই।’ তিনি আরও বলেন, ‘ইসরায়েলের জনগণের একটি নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ ভবিষ্যৎ প্রাপ্য, ফিলিস্তিনের জনগণেরও তাই। তারা সমান সার্বভৌমত্ব, সমান সম্মান নিয়ে এমন একটি অঞ্চলের অধিকার রাখে, যেখানে সব ধর্মের মানুষ ও সব ঐতিহ্যের মানুষ শান্তিতে একসঙ্গে বসবাস করবে।’
গাজা ও ইউক্রেনের পরিস্থিতি প্রসঙ্গে এ সময় স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ বলেন, ‘কোনো একটা বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য কারও অপেক্ষা করাটা গ্রহণযোগ্য নয়। পথিকই পথ তৈরি করে, কোনো একটি জায়গা দিয়ে হাঁটলেই কেবল রাস্তা তৈরি হয়। আর এই প্রসঙ্গে আমাদেরই সেটা করতে হবে, যাতে অন্যরাও এই পথে শামিল হয়।’
এদিন, স্প্যানিশ প্রধানমন্ত্রী সানচেজ নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী ইউনাস গর স্তোরার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। নরওয়ের রাজধানী অসলোতে অনুষ্ঠিত এই সাক্ষাতে সানচেজ স্তোরাকে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়ে মাদ্রিদের ইচ্ছার কথা জানান।
জবাবে স্তোরা বলেন, ‘নরওয়েও ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে প্রস্তুত। প্রশ্ন হলো, কখন এবং কোন পরিস্থিতিতে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র বলে স্বীকৃতি দেওয়া হবে।’ এ সময় স্তোরা এ বিষয়ে সমমনা দেশগুলোর সঙ্গে পরামর্শ ও সমন্বয়ের জন্য স্প্যানিশ প্রধানমন্ত্রীর প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা আগামী সপ্তাহগুলোতে এই সমন্বয় জোরদার করব।’
এর আগে, গত মার্চের শেষ সপ্তাহে বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে এক বৈঠকের পর যৌথ ঘোষণায় ইউরোপের চার দেশ স্পেন, আয়ারল্যান্ড, স্লোভেনিয়া ও মাল্টার প্রধানমন্ত্রীরা জানান, তাদের দেশ স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে প্রস্তুত। তারা সে সময় বলেন, যুদ্ধকবলিত এই অঞ্চলে শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের একমাত্র উপায় এটি।
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
১৩ এপ্রিল ২০২৪