TV3 BANGLA
ইউরোপ

ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিতে প্রস্তুত ইউরোপের ৪ দেশকে ইসরায়েলের সতর্কবার্তা

ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে প্রস্তুত ইউরোপের চার দেশ—স্পেন, আয়ারল্যান্ড, স্লোভেনিয়া ও মাল্টা। তবে দেশগুলোকে সতর্ক করে ইসরায়েল বলেছে, ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনার মাধ্যমে দেশগুলো ‘সন্ত্রাসবাদের পুরস্কার’ দিতে চলেছে। এতে আলোচনার মাধ্যমে বিরোধ সমাধানের সম্ভাবনা হ্রাস পাবে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে খবরটি দিয়েছে।

আজ সোমবার ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেন, ‘৭ অক্টোবরের হত্যাযজ্ঞের পরও ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি হামাস এবং অন্যান্য ফিলিস্তিনি সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর কাছে এই বার্তা পাঠায় যে ইসরায়েলিদের ওপর হত্যাযজ্ঞ ও সন্ত্রাসী হামলা চালানোর প্রতিশোধ ফিলিস্তিনিদের উপর রাজনৈতিকভাবেই নেওয়া হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সংঘাতের সমাধান কেবল একভাবেই সম্ভব, আর সেটা হচ্ছে দুই পক্ষের মধ্যে সরাসরি আলোচনা। ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির বিষয়ে কেউ জড়ালে সেটা শুধু সমাধানে পৌঁছানোর দূরত্ব এবং আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতাই বাড়াবে।’

তবে ইসরায়েল কেমন সমাধান নিয়ে ভাবছে তা পরিষ্কার করেননি পররাষ্ট্রমন্ত্রী কাটজ। তার শাসক জোটে বসতিপন্থী উগ্র-ডানপন্থীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যাদের অবস্থান দীর্ঘদিন ধরেই ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির বিরুদ্ধে। শাসক জোটের এমন অবস্থার কারণেই পশ্চিমা বিশ্ব হামাসকে ধ্বংসের লক্ষ্যকে সমর্থন করছে। তবে যুদ্ধের পর কূটনৈতিক সমাধানও চায় পশ্চিমারা।

গত শুক্রবার বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে এক বৈঠকের পর স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার ব্যাপারে সম্মতির ঘোষণা দেন ইউরোপের চারটি দেশের নেতারা। তারা বলেন, যুদ্ধকবলিত এই অঞ্চলে শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের একমাত্র উপায় এটি।

বৈঠকে স্পেন, আয়ারল্যান্ড, স্লোভেনিয়া ও মাল্টার নেতারা স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। তারা একমত হন যে উপযুক্ত পরিস্থিতিতে যখন তাদের স্বীকৃতি একটি ইতিবাচক অবদান রাখবে, তখনই তারা ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবেন।

স্পেন, আয়ারল্যান্ড, স্লোভেনিয়া ও মাল্টার সরকারপ্রধানদের এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা একমত যে এই অঞ্চলে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতা অর্জনের একমাত্র উপায় হলো একটি দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধান বাস্তবায়ন। যেখানে ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনি জনগণের রাষ্ট্রে তারা পাশাপাশি শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রেখে বসবাস করবে।’

এই চার দেশ ছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭ দেশের মধ্যে আরও পাঁচটি দেশ স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে সমর্থন করে। দেশগুলো হলো—চেক প্রজাতন্ত্র, রোমানিয়া, বুলগেরিয়া ও স্লোভাকিয়া। এই দেশগুলো ১৯৮৮ সাল থেকে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের পক্ষে কথা বলেছে। এ ছাড়া, ইউরোপের একমাত্র রাষ্ট্র হিসেবে ২০১৪ সালে সুইডেনও সর্বসম্মতভাবে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের অধিকারের স্বীকৃতি দেয়।

এই দেশগুলো ১৯৬৭ সালের সীমান্ত অনুসরণ করে স্বাধীন ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাকে সমর্থন করে; যেখানে গাজা, পশ্চিম তীর ও জেরুজালেম যাবে স্বাধীন ফিলিস্তিনের নিয়ন্ত্রণে। অবশ্য এর আগে আরব বিশ্বের বিভিন্ন দেশও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের কথা বলেছে। সর্বশেষ সৌদি আরব ঘোষণা দিয়েছে, ১৯৬৭ সালের সীমান্ত অনুসারে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন না করা হলে তারা ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করবে না।

সূত্রঃ রয়টার্স

এম.কে
২৬ মার্চ ২০২৪

আরো পড়ুন

অভিবাসী দম্পতিদের আলাদা করায় বিচারের মুখে ডেনিশ মন্ত্রী

৭০ বছর পর আদিবাসী শিশুদের কাছে ডেনিস প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমা প্রার্থনা

অলিম্পিকে নিষিদ্ধ হিজাব, যা বললেন অস্ট্রেলিয়ান মুসলিম বক্সার