8.8 C
London
November 8, 2024
TV3 BANGLA
বাংলাদেশশীর্ষ খবর

বাংলাদেশের ত্রিশ ব্যাংকের এমডি একযোগে আমেরিকা যাচ্ছেন

বাংলাদেশের সরকারি–বেসরকারি খাতের ত্রিশটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) একযোগে যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছেন। এ নিয়ে নানা আলোচনা হচ্ছে দেশের গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ব্যাংকের টাকা ব্যয় করে এত এমডির একযোগে বিদেশ সফরে যাওয়ায় কেউ কেউ সমালোচনা করলেও শীর্ষস্থানীয় একটি ব্যাংকের এমডি জানিয়েছেন, তারা যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অফ জাস্টিস বা বিচার বিভাগের আমন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন। ওই কর্মসূচি শেষে চারটি ব্যাংকের এমডি অফশোর ব্যাংকিংয়ের আওতায় প্রবাসীরা যাতে দেশের ব্যাংকে ডলার জমা করেন, তা নিয়ে প্রচারণামূলক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অফশোর ব্যাংকিংয়ের আওতায় সিঙ্গাপুর বা দুবাইয়ের মতো বাংলাদেশেও ডলার এলে ভালো। তবে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে অফশোর ব্যাংকিংয়ে লাভবান হতে হলে ব্যাংকিং খাতে সুশাসন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নজরদারি ও ব্যবস্থাপনাগত দক্ষতা উন্নয়ন জরুরি বলে মনে করেন তারা।

অর্থনীতিবিদদের কেউ কেউ ব্যাংক কর্মকর্তাদের একযোগে বিদেশ সফরের সমালোচনা করলেও অন্যরা বাণিজ্যের দিক দিয়ে কিছু সুফল আসতে পারে বলে মনে করছেন। যদিও ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, এটা বিনোদনমূলক কোনো সফর নয়। বরং ব্যবসা–বাণিজ্যের স্বার্থেই তারা এই সফরে যাচ্ছেন।

সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, আমি বিস্মিত যে, মিডিয়া এই ট্রিপ নিয়ে বাঁকা কথা বলছে। ৪৭০ বিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির সাপেক্ষে এইসব কার্যক্রমকে দেখতে হবে। যে দুই কাজে এমডিরা যাচ্ছেন বা যে সত্যিকারের বড় একটা কাজে ডেপুটি গভর্নর মহোদয় নিউ ইয়র্ক যাচ্ছেন, তার দুটোই এই অর্থনীতির বিকাশের জন্য জরুরি।

তিনি জানান, তার ইউরোপে একটি সফরের মাধ্যমে অফশোর ব্যাংক ফিক্সড ডিপোজিট ব্যাল্যান্স সিটি ব্যাংকের একাই এখন বিশ মিলিয়ন ডলারের উপরে। তিনি বলেন, যারা যাচ্ছে সবাই বড় ব্যাংক। এসব ব্যাংক সরকারকে আটশ মিলিয়ন থেকে এক বিলিয়ন ডলার কর দিয়েছে। সেখানে সব এমডির খরচ হবে সোয়া দুই লাখ ডলার। অনেক ট্রেড পার্টনারের সঙ্গে আমাদের আবার অনেক দ্বিপক্ষীয় মিটিং আছে। এমডিদের কয়েকজন ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছেড়েছেন। বাকিরা আজকালের মধ্যে রওনা দেবেন বলে জানা গেছে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক অর্থনীতিবিদ ড. মইনুল ইসলাম এমডিদের দল বেঁধে বিদেশ সফরের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, যেসব কাজে উনারা যাচ্ছেন এর কোনোটার জন্যই এমডিদের দল বেঁধে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তা নেই। সবসময় এমন ভালো কথা শুনি। সব বেড়ানোর আয়োজন।

প্রসঙ্গত, অফশোর ব্যাংকিং সারা পৃথিবীতে প্রচলিত ব্যাংকিংয়ের একটি অংশ। বিশ্বজুড়ে অনেক ব্যাংকের জন্য এটা বড় আয়ের অংশ। সিঙ্গাপুর ও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ অনেক দেশ এভাবে লাভবান হয়েছে।

তবে বাংলাদেশের নাজুক ব্যাংকিং খাতকে বিবেচনায় রেখে এ ধরনের অফশোর ব্যাংকিংয়ের বিষয়ে সুফল পেতে হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীন নজরদারি, মনিটরিং এবং ব্যাংকিং খাতে সুশাসন জরুরি বলে মনে করেন গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, আমাদের দেশের ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যে, ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনায় যে দুর্বলতা, সুশাসনের ক্ষেত্রে দুর্বলতা, সংস্কারের ক্ষেত্রে শ্লথতা, তার সুযোগে উল্টো দেশের অর্থ পাচার না হয় সে ধরনের সুরক্ষা নিশ্চিত করা দরকার।

সূত্রঃ বিবিসি বাংলা

এম.কে
১৯ মে ২০২৪

আরো পড়ুন

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ও উত্থান ঠেকাতেই হত্যা করা হয় মুহিবুল্লাহকে

আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল ও নিষিদ্ধের দাবি কর্নেল অলির

আয়ারল্যান্ডে নিজস্ব অর্থায়নে মসজিদ নির্মাণ করলেন বাংলাদেশি প্রবাসীরা

অনলাইন ডেস্ক