যুক্তরাজ্যের জাতীয় নিরীক্ষা অফিসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইংল্যান্ডের অনিয়ন্ত্রিত কলেজগুলি হতে কমপক্ষে ৬০ মিলিয়ন পাউন্ডের স্টুডেন্ট লোন জালিয়াতি সংগঠিত হয়েছে।
পাবলিক স্প্যান্ডিং ওয়াচডগের মতে, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্র্যাঞ্চাইজির অধীনে ডিগ্রি প্রদান করতে গিয়ে নানা ধরনের জালিয়াতি সংগঠিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। যা যুক্তরাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থা ও ডিগ্রি নিয়ে হাস্যরসের জন্ম দিতে পারে। এই সব কিছুই ঘটছে বানিজ্য ব্যবস্থাকে সামনে রেখে যার জন্য মূলত সরকারের অব্যবস্থাপনা দায়ী। এমন মানুষ গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রি সম্পন্ন করতে যাচ্ছে যাদের নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ প্রকাশ করেছে এই ওয়াচডগ প্রতিষ্ঠান।
কোর্স সম্পন্ন করার যথার্থ জ্ঞান নেই বা কোর্স শেষ করার সদিচ্ছা নেই এমন লোক এনরোল হচ্ছে সরকার সমর্থিত এই বানিজ্যিক শিক্ষা ব্যবস্থা সিস্টেমে। সরকার কর্তৃক তাদের ১৩ হাজার পাউন্ড পর্যন্ত গ্র্যান্ট প্রদান করা হচ্ছে যার মধ্যে ৯,২৫০ পাউন্ড টিউশন ফি হিসাবে এবং বাকি অর্থ ফ্র্যাঞ্চাইজিং ফি হিসাবে বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রদান করা হচ্ছে।
খবরে আরো জানা যায়, এজেন্টদের শিক্ষার্থীদের সাইন আপ করার জন্য লাভজনক কমিশন দেওয়া হয়। গ্র্যান্ট প্রাপ্তিতে বিভিন্ন ধরনের জালিয়াতির আশ্রয় নেয়া একটি নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। অনেক ক্ষেত্রে আইডেন্টিফিকেশন জালিয়াতি, মিথ্যা ডকুমেন্টেশন তৈরির মতো ঘটনাও ঘটছে হরহামেশা। কমিশনের জন্য এজেন্টরা প্রতিনিয়ত সাহায্য করে যাচ্ছে জালিয়াতিতে যার সঙ্গে অনিয়ন্ত্রিত কলেজেরও সহযোগিতা রয়েছে।
হাউস অফ কমন্সের পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি এই সপ্তাহে ঘোষণা করেছে, তারা ফ্র্যাঞ্চাইজি সরবরাহকারীদের নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে তদন্ত করবে এবং যারা যারা এই ধরনের জালিয়াতির সঙ্গে যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কমিটির সভাপতিত্বকারী সাংসদ মেগ হিলিয়ার বলেছেন, “শিক্ষা বিভাগকে অবশ্যই এই নিয়ন্ত্রণগুলি নিয়ে স্পষ্ট ভাবে কাজ করতে হবে যাতে ব্রিটেনের শিক্ষাব্যবস্থা দূর্নাম না কুড়ায়।”
এসএলসি -র প্রধান নির্বাহী ক্রিস লারার বলেছেন, তার সংস্থা নিয়মিতভাবে সন্দেহজনক ক্রিয়াকলাপ সনাক্ত করার জন্য অ্যাপ্লিকেশনগুলিকে পর্যবেক্ষণ করে থাকে। পাশাপাশি কোনও অর্থ প্রদানের আগে শিক্ষার্থীদের নিবন্ধন এবং সরবরাহকারীদের উপস্থিতি নিশ্চিতকরণের প্রয়োজন হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় নেতাদের প্রতিনিধিত্বকারী ইউনিভার্সিটি ইউকের একজন মুখপাত্র বলেন, ” বিশ্ববিদ্যালয়গুলি ইতোমধ্যে সমস্ত অংশীদারিত্ব দায়বদ্ধতার সাথে সম্পন্ন করেছে, এছাড়া দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করার জন্য নীতিমালাও রয়েছে। তবে বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম যে ঘটছে না তা বলা যাবে না। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক বিভিন্ন জনের হতে জানা যায় অনেক শিক্ষার্থী নিজেদের কাজ বা এসাইনমেন্ট জালিয়াতির মাধ্যমে সম্পাদনা করে যাচ্ছেন। তাই নিয়ন্ত্রণ সংস্থাগুলোকে এই গুরুতর সমস্যাগুলি মোকাবেলা করা উচিত।”
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
১৮ জানুয়ারি ২০২৪