একটি শরণার্থী দাতব্য সংস্থা জানিয়েছে,ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রমকারী অভিবাসীদের আটক ও বসবাসের ব্যবস্থার জন্য যুক্তরাজ্যের সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রথম তিন বছরে ৯ বিলিয়ন (১১ বিলিয়ন ডলার) এর বেশি ব্যয় হতে পারে।
শরণার্থী কাউন্সিল বলেছে এই ৩ বছরের ভিতরে, ৪৫,০০০ শিশু সহ ২৫০,০০০ এরও বেশি লোক অবৈধ অভিবাসন বিলের আওতায় পড়বে। তারা আশঙ্কা করছে বেকলগ ক্লিয়ারের নামে অনেক কেইস খারিজও হতে পারে।
খবরে জানা যায়, হোম অফিসের পরিকল্পনা অনুযায়ী এই তিন বছরে রুয়ান্ডাতে অন্তত ১০০০০ জন অভিবাসীকে প্রেরণ করা হবে। রুয়ান্ডায় ২৮ দিন পর্যন্ত অভিবাসীদের বসবাসের ব্যবস্থা ও অন্যান্য সুবিধা প্রদান করতে ৯ বিলিয়নের এই প্ল্যান নিয়ে এগিয়েছে তারা।
দাতব্য সংস্থা বিভিন্ন তথ্য যাচাই করে জানায়, প্রতি বছরেই বহু লোক ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রম করে যুক্তরাজ্যে এসে পৌঁছায়। প্রতিদিন অবৈধ আশ্রয়প্রার্থীদের প্রতিজনের পিছনে যুক্তরাজ্য সরকারের ১২০.৪২ পাউন্ড খরচ করতে হয়। এই খরচের ভিতরে তাদের বাসস্থান ও খাবার অন্তর্ভুক্ত থাকে।
দাতব্য সংস্থা আরো জানায়, হোম অফিস কখনও পরিষ্কারভাবে তথ্য জানায় না কতজন অভিবাসী ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রম করে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করে কিংবা কতজন ভিন্নপথে প্রবেশ করেছে। যুক্তরাজ্যে নতুন ইমিগ্রেশন বিল নিয়ে আলোচনা হচ্ছে সেই বিলের নিয়ম অনুযায়ী অবৈধভাবে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করলে তাদের আশ্রয় দেওয়া হবে না। যদিও জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা কর্তৃক এটাকে “আশ্রয় নিষেধাজ্ঞা” হিসাবে নিন্দা করেছে।
শরণার্থী কাউন্সিলের চিফ এক্সিকিউটিভ এনভার সলোমন আইনটিকে “ড্রাকোনিয়ান আইন” বলে অভিহিত করেছেন। তিনি আরও বলেন এই আইন আমাদের দেশের জন্য এক কলংক। সমস্ত প্রমাণ খুঁজলে দেখা যায় শরণার্থীরা বোমা,গুলি, সহিংসতা এবং নিপীড়ন থেকে রক্ষা পেতে যুক্তরাজ্যে গোপনে প্রবেশ করে নিজেদের জীবন রক্ষা করতে চায়। অনেক মহিলা, শিশু আসে ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রম করে কিন্তু এই আইন করে শুধু মানবাধিকারকে খর্ব করা বৈ আর কিছু হচ্ছে না।
যুক্তরাজ্য সরকার বলেছে, বর্তমানে আশ্রয় ব্যবস্থাপনায় হোটেলে আবাসনের ব্যবস্থা করে প্রতিদিন প্রায় ৬ মিলিয়ন ডলার সহ এক বছরে ৩ বিলিয়ন ডলার খরচ করছে।
শরণার্থী কাউন্সিলের বিশ্লেষণের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে হোম অফিসের এক মুখপাত্র বলেছেন, “ অবৈধ মাইগ্রেশন বিলের লক্ষ্য হল একটি প্রতিরোধক হিসাবে কাজ করা এবং কার্যকর হওয়ার পরে অবৈধ অভিবাসনকে উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করা। প্রায় অর্ধ মিলিয়ন পুরুষ, মহিলা এবং শিশুদের সুরক্ষা প্রদান করে নিরাপদ এবং আইনী রুটের মাধ্যমে অভিবাসীদের সমর্থন করার মতো যুক্তরাজ্যের গর্বিত ইতিহাস রয়েছে। আমরা বিশ্বজুড়ে দুর্বল ব্যক্তিদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের অবশ্যই অবৈধ অভিবাসনের উত্থানটি বন্ধ করতে হবে।