10.1 C
London
November 5, 2024
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)শীর্ষ খবর

যুক্তরাজ্যে চার দিনের কর্ম সপ্তাহ নিয়ে চলছে নানা পরীক্ষা নিরীক্ষা

চার দিনের কর্ম সপ্তাহ নিয়ে যুক্তরাজ্যে বেশ কয়েক বছর ধরেই নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। এবার সেই নিরীক্ষায় যোগ দিয়েছে সাউথ কেমব্রিজশায়ার কাউন্সিল। যুক্তরাজ্যের প্রথম কোনো কাউন্সিল হিসেবে এ নিরীক্ষায় অংশ নিয়ে দারুণ ইতিবাচক ফল পেয়েছে তারা।

সাউথ কেমব্রিজশায়ার কাউন্সিলের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চার দিনের কর্মসপ্তাহ কর্মীদের স্বাস্থ্য ও সুস্থতার জন্য অনেক বেশি ইতিবাচক ও কার্যকর। ফলে তারা চার দিনের কর্মসপ্তাহ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মেয়াদ আরও বাড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে।

লিবারেল ডেমোক্র্যাট নেতৃত্বাধীন সাউথ কেমব্রিজশায়ার কাউন্সিল প্রায় ৪৫০ জন ডেস্ক ভিত্তিক কর্মীকে নিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে তিন মাসের একটি পাইলট প্রক্রিয়া শুরু করে। তারা আশা করেছিল, সপ্তাহে চার দিন কাজ করলে কর্মীরা আরও বেশি উৎপাদনশীল হবেন। হয়েছেনও তা–ই। এতে তাদের বেতনে প্রভাব পড়েনি।

 

 

 

 

আগামী ২ মে চার দিনের কর্মসপ্তাহ নিয়ে একটি সভা হওয়ার কথা। সে জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত করা হয়েছে। এসব কাগজপত্রের সুপারিশ, এই নিরীক্ষা আরও ১২ মাস বৃদ্ধির জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। আরও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, পরিচ্ছন্নতাকর্মীদেরও চার দিনের কর্মসপ্তাহের জন্য তিন মাসের ভিন্ন এক পাইলট প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানানো হোক।

কাউন্সিলের নেতা ব্রিজেট স্মিথ ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমকে জানান, ‘ এই পরীক্ষা-নিরীক্ষা যেভাবে চালানো হয়েছে, তাতে আমি সন্তুষ্ট। আরও ভালো ও স্মার্টভাবে কাজ করার জন্য আমরা বছরে এই অতিরিক্ত ৫২ দিন ছুটিকে অধিকার হিসেবে নয়, বরং উপহার হিসেবে দেখি।’

ব্রিজেট স্মিথ আরও বলেন, ‘কর্মীদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলাপে জেনেছি, অনেকেই তাদের অতিরিক্ত ছুটির দিনটিকে “বিশেষ দিন” হিসেবে পরিবারের সঙ্গে অতিরিক্ত সময় বা অবসর উপভোগ করতে ব্যয় করেছেন। আগে এ সুযোগ ছিল না।’

 

 

 

 

সমীক্ষার ফলাফলে দেখা যায়, ৮৮ দশমিক ৫ শতাংশ কর্মী চাচ্ছেন, এই পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে নেওয়া হোক। এর ফলাফল স্বাস্থ্য ও সুস্থতার জন্য ‘দারুণ ইতিবাচক’ ছিল। নারী ও বয়স্ক কর্মীরা এতে সবচেয়ে বেশি সুবিধা পেয়েছেন।

ফোর ডে উইক ক্যাম্পেইনের পরিচালক জো রাইল বলেন, দক্ষিণ কেমব্রিজশায়ারের এই ঐতিহাসিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার সাফল্য সন্দেহাতীত। সারা দেশের অন্যান্য কাউন্সিল এখন এই পথ অনুসরণ করবে, সেই সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে।

তবে এ পরীক্ষা পরিচালনার ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা ছিল। কর্মক্ষেত্রের সমস্যা সমাধানে সপ্তাহে চার দিনের কাজের ধরন নিয়ে অল্পবয়সী ও নতুন কর্মীদের বিশ্বাস ছিল কম। খণ্ডকালীন কর্মীরাও এ পরীক্ষা নিয়ে ততটা উৎসাহী ছিলেন না, যদিও তাদের কর্মসময় ২০ শতাংশ কমানোর সুযোগ দেওয়া হয়েছিল।

তবে কাউন্সিল আশা করে, এ–জাতীয় সমস্যা দীর্ঘ মেয়াদে প্রশমিত করা যাবে। নতুন এ কাজের ধারণাটি কর্মী নিয়োগ ও কর্মী ধরে রাখার ক্ষেত্রে সহজ ও সাশ্রয়ী হবে।

 

 

 

 

 

এর আগে যুক্তরাজ্যে ৪ ডে উইক গ্লোবাল নামের এক বেসরকারি সংস্থা গবেষণা গোষ্ঠী অটোনমি, বোস্টন কলেজ ও কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে এই পাইলট প্রকল্প পরিচালনা করেছে। এরপর দেখা যায়, চার দিনের কর্মসপ্তাহ মানুষের কর্ম ও জীবনের মধ্যে অধিকতর ভারসাম্য এনেছে। এই নিরীক্ষায় অংশ নেওয়া বেশির ভাগ অংশগ্রহণকারীদের মতামত, উন্নত জীবনযাপনের জন্য কর্মদিবস সপ্তাহে চার দিনই হওয়া উচিত।

সেই পাইলট প্রকল্পের ফলাফল একনজরে এ রকম—৭৩ শতাংশ কর্মী বলেছেন, তারা এখন যাপিত জীবনের বিষয়ে আগের চেয়ে বেশি সুখী। ৪০ শতাংশ কর্মী বলেছেন, ঘুম নিয়ে এখন আর তেমন সমস্যা হচ্ছে না; চাকরি ছাড়ার প্রবণতা কমেছে ৬৪ শতাংশ, ক্লান্তি কমেছে ৭১ শতাংশ কর্মীর।

 

 

 

 

সবচেয়ে বড় কথা, সেই প্রকল্প চলাকালে কোম্পানিগুলোর রাজস্ব কমেনি, বরং ক্ষেত্রবিশেষে দেখা গেছে, আগের বছরের তুলনায় রাজস্ব ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।
তার আগেও চার দিনের কর্ম সপ্তাহ নিয়ে নিরীক্ষা করা হয়েছিল। তখনো দেখা গেছে, সপ্তাহে পাঁচ দিনের জায়গায় চার দিন কাজ করলে কর্মীদের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পায়। শুধু তা-ই নয়, ওই সব কোম্পানির রাজস্বও বেড়েছিল।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের এক সংবাদে বলা হয়, ইউরোপের যেসব দেশে কর্ম সময় সবচেয়ে কম, সেখানেই কর্মীদের উৎপাদনশীলতা সবচেয়ে বেশি। জার্মানি ও নেদারল্যান্ডসে কর্মসময় সবচেয়ে কম আর দুটি দেশেই কর্মীদের উৎপাদনশীলতা সবচেয়ে বেশি। এ ছাড়া মাইক্রোসফটের জাপান কার্যালয় যখন সপ্তাহে চার দিন কাজ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালু করল, তখন উৎপাদনশীলতা ৪০ শতাংশ বেড়ে যায়।

আরো পড়ুন

বাংলাদেশের মানবাধিকারকে জিএসপি প্লাসে যুক্ত করতে চায় ইইউ

করোনার টিকায় প্রজনন ক্ষমতা নষ্টের কোনো প্রমাণ মেলেনি

নিউজ ডেস্ক

দেশে ৩ কোটি ৬২ লাখ ডোজ করোনা টিকার প্রয়োগ

অনলাইন ডেস্ক