২০১৫ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে ইসলামিক স্টেটে (আইএস) যোগ দিতে লন্ডন থেকে সিরিয়ায় পাড়ি জমান শামীমা বেগম। জঙ্গিবাদে জড়ানোর অভিযোগে ২০১৯ সালে খুয়েছেন ব্রিটিশ নাগরিকত্ব। এবার তার আইনজীবীদের দাবি, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শামীমা বেগম যৌন নিগ্রহের জন্য মানবপাচারের শিকার হয়েছিলেন।
সোমবার (২১ নভেম্বর) যুক্তরাজ্যের ‘স্পেশাল ইমিগ্রেশন আপিলস কমিশন’ (এসআইএসি)-এ শামীমার আইনজীবীরা এ ধরনের যুক্তি তুলে ধরেন। যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব অপসারণকে চ্যালেঞ্জ করার বিষয়টি নিয়ে পাঁচ দিনের অভিবাসন শুনানি চলছে সেই আদালতে।
আইনজীবীরা বলেন, ২০১৯ সালে যুক্তরাজ্যের তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ শামীমার ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিলের যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিলেন তা বেআইনি। কারণ, শামীমা পাচারের শিকার হওয়া শিশু ছিলেন কিনা সে বিষয়টি বিবেচনা করা হয়নি।
শামীমা বেগমকে যে যৌন শোষণের জন্য আইএস এর দলে ভেড়ানো, স্থানান্তরিত করা এবং সিরিয়ায় আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল তার অকাট্য প্রমাণ আছে বলে জানান আইনজীবীরা।
তারা আরও বলেন, যেসব প্রমাণ পাওয়া গেছে তাতে শামীমা যে মানবপাচারের শিকার একজন শিশু ছিলেন সেটি ‘সন্দেহাতীত’ এবং ‘জাতীয় নিরাপত্তার ঝুঁকির কথা বলে অসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে তাকে তার ব্রিটিশ নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে’।
শামীমা উত্তর সিরিয়ার একটি শরণার্থী শিবিরে আছেন। ২০১৯ সালে সেখানে প্রথম তার খোঁজ মেলে। সেখানে তার একটি সন্তানও হয়েছিল, যদিও পরে শিশুটি মারা যায়। শামীমা সে সময় জানান, এটি তার তৃতীয় সন্তান।
তবে শামীমাকে কানাডার নিরাপত্তা সংস্থার এক গুপ্তচর সিরিয়ায় পাচার করেছিল বলে গত আগস্টে সংবাদ প্রকাশ করে বিবিসি। তাদের কাছে এমন কিছু নথিও আছে, যাতে এই গুপ্তচর দাবি করেন, তিনি শামীমা বেগমের পাসপোর্টের বিস্তারিত তথ্য কানাডাকে জানিয়েছিলেন এবং আরও ব্রিটিশ নাগরিককে লড়াই করার জন্য পাচার করেন।
পূর্ব লন্ডনের তিন স্কুলছাত্রী শামীমা বেগম, খাদিজা সুলতানা ও আমিরা আবাসি ২০১৫ সালে সিরিয়ায় পাড়ি জমান। ইস্তাম্বুলের প্রধান বাস স্টেশনে তাদের সঙ্গে মোহাম্মদ আল রশিদ নামে এক ব্যক্তির দেখা হয়। এই ব্যক্তি তাদের সিরিয়ায় আইএস নিয়ন্ত্রিত এলাকায় যেতে সাহায্য করেন। জানা গেছে, মোহাম্মদ আল রশিদ যখন এভাবে সিরিয়ায় লোকজনকে পাচার করছিলেন, তখন তিনি কানাডার একটি নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার কাছে তথ্য পাঠাতেন।
২২ নভেম্বর ২০২২
সূত্র; বিবিসি