যুক্তরাজ্যের অনেক অভিবাসী আইনীভাবে ত্রুটিযুক্ত সরকারের সিদ্ধান্তের কারণে দক্ষতা থাকার পরেও চাকরি- ব্যবসা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন। নির্বাসনের ভয়ে বন্দিদের মতন দুর্বিসহ জীবন কাটাচ্ছেন তারা। ন্যায়বিচারের আশায় বছরের পর বছর অপেক্ষা করছেন। একটি প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
হোম অফিস ইমিগ্রেশন আইনের একটি অংশ প্রয়োগ করার পরে, শত শত এনএইচএস কর্মী, হিসাবরক্ষক এবং অন্যান্য দক্ষ ব্যক্তি যারা ১৭ বছর ধরে যুক্তরাজ্যে বসবাস করেছেন তারা হুমকির মুখে পড়েন। ট্যাক্স রেকর্ডে আইনী সংশোধন করার জন্য তাদের চাকরি ছেড়ে দিতে বাধ্য করা হয়। এর পরে হোম অফিস আবার অভিবাসন আইনের একটি অংশ প্রয়োগ করেন, যাতে বলা হয়েছে জাতীয় সুরক্ষার জন্য হুমকি আছে এমন লোকদের অপসারণ করা হবে।
২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে আদালত রায় দিয়েছেন, তাদের আগের সিদ্ধান্তটি আইনত ত্রুটিযুক্ত ছিল এবং আবেদনকারীদের উপর দেয়া অভিযোগের বিরুদ্ধে তাদের উপযুক্ত প্রমান দেয়ার সুযোগ দেওয়া হয়নি।
ওই দক্ষ অভিবাসীদের ৪৫ শতাংশ বলেছেন যে তারা এখন নিঃস্ব, গৃহহীন বা ভাড়া দিতে অক্ষম এবং ৩৪ শতাংশ বলেছেন তারা খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, তিনি ১৫ বছর ধরে যুক্তরাজ্যে আছেন। সরকারের ভুলের কারণে চাকরি চলে যাওয়ায় ভয়াবহ জীবন কাটাচ্ছেন এখন। পরিবারের রেখে যাওয়া অল্প মূল্যবান জিনিসপত্র বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন জীবন ধারনের জন্য। একমাত্র বন্ধু এবং স্থানীয় খাদ্য ব্যাংকের উদারতার কারণে তিনি এখনো টিকে আছেন।
এতো অসুবিধা সত্ত্বেও তিনি জানান, তার স্ত্রী এবং তিনি এনএইচএস স্বেচ্ছাসেবক দলের গর্বিত সদস্য। করোনা মহামারিতে এনএইচএসের স্বেচ্ছাসেবক হয়ে কাজ করছেন।
আরেক অভিবাসী শাহরিয়ার বলেন, তিনি এবং তার পরিবার স্বরাষ্ট্র অফিসের সিদ্ধান্তের কারণে মানসিক চাপে থাকতে থাকতে মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পরেন। এখন তারা আর ‘সাধারণ পরিবার’ নয় সরকারের কাছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, এইসব দক্ষ অভিবাসীদের বেশিরভাগ (প্রায় ৯৯ শতাংশ) চাকরি চলে যাওয়ায় তাদের আইনী ফি ও জীবন ধারনের খরচ চালাতে যেয়ে নিজেদের নির্দোষ প্রমাণের জন্য মামলা চালিয়ে যেতে পারছেন না।
প্রতিবেদনটিতে হোম অফিসের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে, এই ভুল সংশোধন করে তা পর্যালোচনা এবং বাতিল করার জন্য। নিয়মটি সাধারণত অপরাধী এবং সন্ত্রাসিদের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করার জন্য বলা হয় তাতে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই অত্যন্ত দক্ষ অভিবাসীদের প্রতি হোম অফিসের অমানবিক নীতিগুলো সংশোধন করার জন্য।
সূত্র: ইন্ডিপেন্ডেন্ট
২৮ জানুয়ারি ২০২১
এসএফ