অনিয়মিত পথে আসা অভিবাসন প্রত্যাশীদের ঠেকাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নজরদারি করতে যাচ্ছে যুক্তরাজ্য৷ এরই অংশ হিসেবে প্রথম সারির কয়েকটি সোশ্যাল মিডিয়া প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অংশীদারত্ব চুক্তি করেছে সরকার৷
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, অনিয়মিত পথে অভিসান ঠেকাতে দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কয়েকটি সোশ্যাল মিডিয়ার সঙ্গে একটি চুক্তি করেছে৷ চুক্তির আওতায়, যেসব অনলাইন কন্টেন্ট নৌকায় করে ঝুঁকিপূর্ণ ও অনিয়মিত পথে যুক্তরাজ্যে যেতে উৎসাহিত করছে সেগুলো চিহ্নিত করা হবে৷
নির্বাচনের ঠিক এক বছর আগে উত্তর ফ্রান্স থেকে ছোটো নৌকা নিয়ে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে অনিয়মিতভাবে যুক্তরাজ্য আসা অভিবাসীদের থামানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দল। কিন্তু পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়ছে সরকার৷
ব্রিটিশ সরকার জানায়, দেশটির ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম মেটা, টিকটক, এবং এক্স-এর সঙ্গে চুক্তি সই করেছে৷ যোগাযোগের এই মাধ্যমগুলো মানবপাচার বিষয়ক সব ধরনের কন্টেন্ট যেমন জাল কাগজপত্রের প্রস্তাব, শিশুদের জন্য বিনামূল্যের স্পেস, দলগত ডিসকাউন্ট এবং নিরাপদ অভিবাসনের রুট বিষয়ে মিথ্যা তথ্যগুলোকে টার্গেট করে কাজ করবে৷
প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেন, চ্যানেল পাড়ি দিয়ে আসা নৌকাগুলোকে থামাতে পাচারকারীদের ব্যবসায়িক মডেলের যে উৎস রয়েছে তা বন্ধ করতে হবে৷ তার মানে হলো, মানব পাচারকারীরা যে মানুষকে ঝুঁকিপূর্ণ এই যাত্রায় প্রলুদ্ধ করছে, সেটি বন্ধ করা৷
ঋষি সুনাক মনে করেন, প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে এই অংশীদারত্বের ফলে মানব পাচারকারীদের ঠেকাতে সরকারের প্রচেষ্টা দ্বিগুণ হবে৷
তবে সরকার বিরোধীরা অবশ্য এই সিদ্ধান্তে অতোটা সন্তুষ্ট নয়৷ প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টির স্বরাষ্ট্র বিষয়ক মুখপাত্র ইভেট্টে কুপার বলেন, ‘‘সরকার এই পরিকল্পনা প্রয়োজনের তুলনায় অল্প৷ তার মতে, সরকার নিজেই এই বিশৃঙ্খল অবস্থা তৈরি করেছে এবং এটি কীভাবে সামলাতে হবে তা সরকার জানে না৷’’
গত কয়েক বছর ধরেই ব্রিটেনের রাজনীতিতে অভিবাসন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ শুধু তাই নয়, এই বিষয়টি ২০১৬ সালে দেশটির ব্রেক্সিটের সময়েও অন্যতম আলোচ্য বিষয় হিসেবে ভূমিকা রেখেছে৷
উল্লেখ্য যে চ্যানেল পাড়ি দিয়ে অভিবাসীদের যুক্তরাজ্যে পৌঁছানোর ঘটনাও বাড়ছে। ২০২২ সালে মোট ৪৫ হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশী নৌকায় করে যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন, যা তার আগের বছরের অর্থাৎ ২০২১ সালের তুলনায় ৬০ ভাগ বেশি৷
এম.কে
০৮ আগস্ট ২০২৩