অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর প্রকল্পের অনুরূপ আরও কয়েকটি দেশের সঙ্গে চুক্তি করতে চায় যুক্তরাজ্য। দেশটির গণমাধ্যম ফাঁস হওয়া গোপন নথির বরাত দিয়ে জানিয়েছে এই তথ্য।
দ্য টাইমসের তথ্য অনুসারে ‘তৃতীয় দেশে আশ্রয় প্রক্রিয়াকরণ চুক্তি’ নিয়ে যুক্তরাজ্য এরই মধ্যে আর্মেনিয়া, আইভরি কোস্ট, কোস্টারিকা এবং বতসোয়ানার সঙ্গে এরই মধ্যে আলোচনা শুরু করেছে।
সম্ভাব্য অন্য বেশ কয়েকটি দেশের মধ্যে এই চারটি দেশ রয়েছে তালিকার উপরের দিকে। তবে রুয়ান্ডা প্রকল্পটি নিয়ে আইনি ও রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ায় এইসব দেশের সঙ্গে আলোচনাও এখন থমকে রয়েছে।
এই প্রকল্পের সম্ভাব্য গন্তব্য হিসাবে দক্ষিণ অ্যামেরিকার দেশ প্যারাগুয়ে, পেরু, ব্রাজিল এবং ইকুয়েডরসহ দক্ষিণ আমেরিকার রাজ্যগুলিকেও বিবেচনা করেছে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তর। কিন্তু নথিতে দেখা যাচ্ছে, এসব দেশ এই ধরনের চুক্তিতে কম আগ্রহী হতে পারে বলে মত দেয়া হয়েছে।
সম্ভাব্য দেশগুলোর রিজার্ভ তালিকায় রয়েছে কেপ ভার্দ, সেনেগাল, তানজানিয়া এবং সিয়েরা লিওন। যুক্তরাজ্যের পছন্দের তালিকার শীর্ষের দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা সফল না হলে এই দেশগুলোর সঙ্গেও পরবর্তীতে যোগাযোগ করা হতে পারে।
মরক্কো, টিউনিশিয়া এবং নামিবিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশ এই অভিবাসী স্থানান্তর বিষয়ক আলোচনায় অংশ নিতে ‘স্পষ্টত আপত্তি জানিয়েছে’ বলে জানা গেছে।
দ্য টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত শরতে রুয়ান্ডার মতো আরো দুটি দেশের সঙ্গে চুক্তি করতে স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সময় বেঁধে দিয়েছিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। এরপরই আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়।
সরকারি কর্মকর্তারা কোন দেশের সঙ্গে চুক্তি করা যায়, কিছু মানদণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে তার একটি সম্ভাব্যতা যাচাই করছেন। জনসংখ্যার অনুপাতে কোন দেশ কত বড়, সেটিও বিবেচনায় রাখা হচ্ছে। এই মানদণ্ডে সুরিনাম এবং বেলিজের মতো কিছু ছোট দেশকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, রুয়ান্ডা চুক্তি নিয়ে জটিলতার প্রভাব পড়তে পারে অন্য দেশের সঙ্গে আলোচনাতেও। যেমন আর্মেনিয়া এরই মধ্যে জানিয়েছে, তারা রুয়ান্ডা চুক্তির ব্যাপারে কী হয় সেটা দেখতে আগ্রহী।
প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বারবার বলে আসছেন, এই বসন্তেই অভিবাসীদের রুয়ান্ডায় স্থানান্তর শুরু হবে। তবে এখনও তার সরকারের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট কোনো তারিখ জানানো হয়নি।
২০২২ সালের জুন থেকে এই প্রকল্পে অচলাবস্থা রয়েছে। ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালতে এই চুক্তি চ্যালেঞ্জের পরে শেষ মুহূর্তে লন্ডন-কিগালি ফ্লাইট বাতিল করা হয়।জুনের মধ্যেই অভিবাসীদের রুয়ান্ডায় নেয়ার কাজ শুরু করতে চায় ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র দপ্তর। কিন্তু এই লক্ষ্যে এখনও কোনো এয়ারলাইনের সঙ্গে চুক্তি করতে পারেনি তারা।
সূত্রঃ দ্য টাইমস
এম.কে
১৬ এপ্রিল ২০২৪