14.8 C
London
February 21, 2025
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

অভিভাবকদের ঘরে বসে কাজ করার ফলে স্কুলে উপস্থিতি কমছেঃ অফস্টেড প্রধান

মহামারির পর ঘরে বসে কাজ করার প্রবণতা স্কুলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির উপর প্রভাব ফেলছে, বলে জানিয়েছেন ইংল্যান্ডের শিক্ষা পরিদর্শন সংস্থা অফস্টেডের প্রধান।

অফস্টেডের প্রধান পরিদর্শক, মার্টিন অলিভার, সানডে টাইমস-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, মহামারির পর মানুষের কাজের অভ্যাস ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয়েছে, যা শিক্ষার্থীদের মানসিকতায়ও পরিবর্তন এনেছে।

অলিভার বলেছেন, “ যদি আমার মা-বাবা সারা দিন বাড়িতেই থাকতেন, তাহলে আমি কি সত্যিই সকালবেলায় উঠে বাড়ি থেকে বের হতে চাইতাম, যখন জানতাম যে তারা দুজনই বাড়িতে আছেন? আমি হয়তো বলতাম: ‘আমি কি তোমাদের সঙ্গে থাকতে পারি না?”

তিনি আরও বলেন, “ মহামারির পর হঠাৎ করেই মানুষ ঘরে বসে কাজ করতে অভ্যস্ত হয়ে যায় এবং অনেক ক্ষেত্রে আমি মনে করি না যে তারা এখন আগের মতো আর চাইছেন তাদের সন্তান স্কুলে যাক। লকডাউনের সময় প্রায় দেড় বছর ধরে তারা এটা নিয়মিতভাবে করছিলেন। এটি শিক্ষার্থীদের মনোভাব বদলে দিয়েছে।”

সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ইংল্যান্ডে প্রায় এক-সপ্তমাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং এক-চতুর্থাংশ সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নিয়মিতভাবে স্কুল মিস করছে, অর্থাৎ তারা প্রতি দুই সপ্তাহে অন্তত এক দিন স্কুলে যায় না। ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে যেখানে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর নিয়মিত অনুপস্থিতির হার ছিল ১৩%, তা ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে বেড়ে ২৪% হয়েছে।

কিছু কিছু স্কুল আংশিকভাবে “ফ্লেক্সি-স্কুলিং” চালু করেছে, যেখানে অভিভাবকেরা সপ্তাহের একটি অংশ তাদের সন্তানদের বাড়ি থেকে পড়াতে পারেন। তবে অলিভার বলেন, শুক্রবার স্কুলে উপস্থিতির হার সবসময়ই সবচেয়ে কম থাকে।

অলিভার বলেন, “ সকালবেলায় উঠে জুতা পরা, স্লিপারের পরিবর্তে বাইরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হওয়া, স্কুলে যাওয়া, অফিসে যাওয়া, এবং একটি পূর্ণ কর্মদিবস বা স্কুলের দিন সম্পন্ন করা—এসবই আসলে একটি অভ্যাস গড়ে তোলে।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন যে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা, উদ্বেগ, বিষণ্নতা এবং স্কুলের জন্য প্রয়োজনীয় তহবিলের অভাব—যেমন স্কুল নার্স ও শিশু মনোবিজ্ঞানীদের জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকা এবং অতিরিক্ত গ্যাজেট ব্যবহার শিক্ষার্থীদের স্কুলে কম যাওয়ার অন্যতম কারণ।

যদিও JP Morgan, Amazon, Boots-এর মতো কিছু প্রতিষ্ঠান মহামারির পর কর্মীদের পুরো সময় অফিসে ফেরার নির্দেশ দিয়েছে, তবে অনেক প্রতিষ্ঠান এখনও নমনীয় কর্মপদ্ধতি অনুসরণ করছে, যেখানে কর্মীদের কমপক্ষে তিন দিন অফিসে আসতে বলা হচ্ছে।

অলিভার মনে করেন, “ওয়ার্ক-ফ্রম-হোম” সংস্কৃতি দীর্ঘদিন থাকবে এবং এর ফলে স্কুলগুলোর জন্য চ্যালেঞ্জও অব্যাহত থাকবে।

তিনি বলেন, “এখন অনলাইনের মাধ্যমে খুব কার্যকরভাবে অনেক কিছু করা যায়, এ কথা অস্বীকার করা যাবে না। তবে এটি মানতেই হবে যে শিশুরা যখন একে অপরের সংস্পর্শে আসে, বড়দের সঙ্গে মেশে এবং সামাজিক দক্ষতা শেখে, তখনই স্কুলের প্রকৃত উপকারিতা পাওয়া যায়।”

সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান

এম.কে
২০ফেব্রুয়ারি ২০২৫

আরো পড়ুন

স্থুলতা মহামারী আকার ধারন করতে যাচ্ছে যুক্তরাজ্যে

ফ্রান্সের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নে তৎপর যুক্তরাজ্য

রুয়ান্ডানীতি বাস্তবায়নের জন্য সুয়েলা ব্র্যাভারম্যানের রুয়ান্ডা যাচ্ছেন