11.2 C
London
March 19, 2024
TV3 BANGLA
আন্তর্জাতিকশীর্ষ খবর

আফগান আভিবাসীদের ডিপোর্ট করার কথা ভাবছে জার্মানি

২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতায় আসার পর থেকে কোনো আফগান নাগরিককে জোর করে দেশটিতে ফেরত পাঠায়নি জার্মানি। শুধু আফগান আশ্রয়প্রার্থীদেরই নয়, যারা জার্মানিতে অপরাধী হিসেবে সাব্যস্ত হয়েছেন বা যাদের সমাজের জন্য হুমকি হিসেবে দেখা হয়েছে, তাদেরকেও ফেরত পাঠানো হয়নি বা ডিপোর্ট করাও হয়নি।

কিন্তু আফগানিস্তান থেকে আসা অভিবাসীদের মধ্যে যারা অপরাধে জড়িত কিংবা সমাজের জন্য হুমকিস্বরূপ তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়াটি আবারও শুরু করা যায় কিনা তা বিবেচনা করছে জার্মান সরকার। দেশটির সংবাদপত্রগুলোতে আসা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ সালে স্থগিত হওয়া ডিপোর্ট প্রক্রিয়া পুনরায় শুরু করতে চাপের মধ্যে রয়েছে কর্তৃপক্ষ।

 

 

 

 

 

 

জার্মান গ্রিনস পার্টি বা সবুজ দলের অভিবাসন বিষয়ক মুখপাত্র ফিলিস পোলাট এক সাক্ষাৎকারে সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, “আফগানিস্তানে মানবাধিকার পরিস্থিতি এখনও ভয়াবহ। ফলে দেশটির নাগরিকদের ফেরত পাঠানো হলে তারা গুরুতর মানবিধাকার লঙ্ঘনের ঝুঁকির মুখে পড়বে।”

জোর করে ফেরত পাঠানোর ক্ষেত্রে আরো একটি বাঁধা রয়েছে। সেটি হলো, আফগানিস্তানের বর্তমান তালেবান সরকারের সঙ্গে জার্মানির কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। ফলে আইনি কিংবা ব্যবহারিক দিক বিবেচনায় নিলে আফগান নাগরিকদের ডিপোর্ট করা কঠিন।

ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়ার পূর্বশর্ত হলো, একটি স্থিতিশীল নিরাপত্তা পরিস্থিতি, যাদের ফেরত পাঠানো হবে তাদের সঙ্গে থাকা বিমান এবং নিরাপত্তাকর্মীদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা এবং আফগানিস্তানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সম্পর্ক। কিন্তু তার কোনোটিই করা আপাত দৃষ্টিতে কঠিন।

জার্মান সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, এত কিছুর পরেও জার্মান কোয়ালিশন সরকারের বিভিন্ন দল, এমনকি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নিজস্ব সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এসপিডি) দাবি, নিষেধাজ্ঞা আংশিক প্রত্যাহার করে হলেও আফগান নাগরিকদের ফেরত পাঠানো হোক।

সংবাদ মাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এসপিডির পার্লামেন্টারি ভাইস-চেয়ার ডির্ক ভিজে বলেছেন, “আফগান অভিবাসীদের বিরুদ্ধে আসা অভিযোগগুলো নিয়ন্ত্রণ করার জন্য একটা সমাধান দরকার, বিশেষ করে, যেগুলো গুরুতর এবং নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।”

উদারপন্থী এফডিপি পার্টির স্টিফান থমাই বলেছেন, “বিদেশ থেকে আসা লোকেরা যদি আমাদের আইনি ব্যবস্থা মেনে না চলে, তারা যদি ফৌজদারি অপরাধ করে এবং আমাদের নিরাপত্তাকে বিপন্ন করে, তাহলে তাদের আমাদের দেশ ছেড়ে চলে যেতে হবে।”

তিনি আরো বলেন, তবে সিদ্ধান্ত গ্রহণেরে ক্ষেত্রে প্রতিটি ঘটনা খতিয়ে দেখার পাশাপাশি সিদ্ধান্তগুলো আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মূল্যায়নের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হওয়া উচিত।

জার্মানির সবচেয়ে বড় শরণার্থী অ্যাডভোকেসি বিষয়ক প্রতিষ্ঠান প্রো অ্যাসাইল তাদের টুইটারে এই বিতর্কটিকে অযৌক্তিক আখ্যায়িত করেছে। তাদের মতে, “তালেবানের সঙ্গে সহযোগিতা থাকলেই ডিপোর্ট করা যেতে পারে।”

সংস্থাটির দাবি, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী কাউকে জোর করে তার নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হলে সেই দেশে নির্যাতন বা গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঝুঁকি থাকবে না, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।

ডিপোর্ট ইস্যুতে সরকারের সমালোচনা নতুন কিছু নয়। সিরিয়ার আশ্রয়প্রার্থীদের জোর করে ফেরত পাঠানোর ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে জার্মানি এবং অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলোতেও বিতর্ক হয়েছে।

উল্লেখ্য ২০১২ সালে জার্মানিতে আশ্রয় নেওয়া সিরীয়দের ডিপোর্ট না করার একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু দেশটির অভিবাসীদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের কারণে ২০২০ সালের শেষ দিকে সেই সিদ্ধান্তটি রাজনৈতিক চাপের মুখে প্রত্যাহার করতে হয়।

 

 

আরো পড়ুন

কনজার্ভেটিভ সরকারের আরো একজন মন্ত্রীর পদত্যাগের খবর

গান্ধী আশ্রমে চরকায় সুতা কাটার চেষ্টা বরিস জনসনের

বৃটেনে ‘পরিবেশবান্ধব’ রমজানে মসজিদ হবে প্লাস্টিকমুক্ত