অভ্যন্তরীণ বাজারে রান্নার তেল হিসেবে ব্যবহৃত পণ্যের ঘাটতি দেখা দিলে ইন্দোনেশিয়া পাম অয়েল রপ্তানিতে দেওয়া নিষেধাজ্ঞার আওতা বাড়াতে পারে বলে বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে হওয়া সরকারের এক বৈঠকের বিবরণীতে উঠে এসেছে। বিশ্বের শীর্ষ পাম অয়েল উৎপাদনকারী দেশটির এই ঘোষণা স্বাভাবিকভাবে বিশ্ববাজারে খাদ্যপণ্যের দাম আরেক দফা বাড়িয়ে দেবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারত, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের মতো আমদানিকারকরা মালয়েশিয়া থেকে পাম তেল ক্রয় বাড়ানোর চেষ্টা করবে, কিন্তু বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পাম তেল উৎপাদনকারী ইন্দোনেশিয়ার তৈরি শূন্যতা পূরণ করতে পারবে না। মালয়েশিয়া বিশ্বব্যাপী পাম তেলের ৩১% সরবরাহ করে, এদিকে ইন্দোনেশিয়া করে ৫৬%। ইন্দোনেশিয়া সাধারণত ভারতের মোট পাম তেল আমদানির প্রায় অর্ধেক সরবরাহ করে, যেখানে পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ তাদের পাম তেলের প্রায় ৮০% ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি করে।
মঙ্গলবার ইন্দোনেশিয়ার ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা মুজদালিফা মাহমুদ জানান, বৃহস্পতিবার থেকে বিশ্বের সর্ববৃহৎ পাম অয়েল রপ্তানিকারক দেশটি কেবল পরিশোধিত, হালকা ও গন্ধযুক্ত (আরবিডি) পাম ওলিনের রপ্তানি বন্ধ রাখার পরিকল্পনা করছে।
স্থানীয় বাজারে দামবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় শুক্রবার ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো রান্নার তেল ও এর কাঁচামাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞার কথা ঘোষণা করেন। অবশ্য সেসময় এই নিষেধাজ্ঞা বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
প্রতিকূল আবহাওয়া ও বিশ্বের অন্যতম শস্য উৎপাদক দেশ ইউক্রেইনে রাশিয়ার আক্রমণের কারণে এমনিতেই বিশ্বজুড়ে পণ্য সরবরাহে টান পড়েছে, তার মধ্যে ইন্দোনেশিয়ার এ ঘোষণায় বিশ্বব্যাপী ভোজ্য তেলের দাম চড়তে শুরু করেছে। ইন্দোনেশিয়া যে রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, তাতে পাম অয়েলজাত অনেক পণ্যই থাকছে বলে প্রথম দিকে ধারণা করা হয়েছিল।
সিঙ্গাপুরভিত্তিক বহুজাতিক ব্যাংক ডিবিএস এক নোটে বলেছে, “আমাদের দৃষ্টিতে এই বিধিনিষেধ অস্থায়ী হতে পারে, প্রদত্ত অভ্যন্তরীণ চাহিদা উৎপাদনের এক তৃতীয়াংশ হওয়ায় এবং পণ্যের মজুদ তৈরি হওয়ার পর মূল্য যখন স্থিতিশীল হবে, তখনই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।”
২৬ এপ্রিল ২০২২
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান