পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খানকে পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করেছে দেশটির নির্বাচন কমিশন। ফলে তিনি আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে পারছেন না। একইসাথে তার নির্বাচনী আসনটিও শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে।
শুক্রবার নির্বাচন কমিশনের চার সদস্য বিশিষ্ট একটি বেঞ্চ তোসখানা (রাষ্ট্রীয় কোষাগার) দুর্নীতির মামলায় ইমরান খানের বিরুদ্ধে এই রায় ঘোষণা করে।
এই মামলাইয় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি তোসখানা (রাষ্ট্রীয় কোষাগার) থেকে নেওয়া উপহারের বিষয়ে ‘তথ্য গোপন’ রেখেছেন, ‘ভুল ও মিথ্যা’ তথ্য দিয়েছেন। নির্বাচন কমিশনের কাছে দেওয়া ২০২০-২১ সালে নিজের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির হিসাবে তোসখানার বিষয়টি উল্লেখ করেননি বলে অভিযোগ রয়েছে ইমরানের বিরুদ্ধে।
তোসখানা হলো পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় কোষাগার। পাকিস্তানের কোনো প্রধানমন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও কূটনীতিক বিদেশি বন্ধুদের কাছ থেকে যখন কোনো উপহার পান তখন সেটি রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিতে হয়। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী নির্ধারিত অর্থ পরিষোধ করে সেগুলো কিনে নিতে পারবেন উক্ত ব্যাক্তি।
২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পর নিজের শুভাকাঙ্খীদের কাছ থেকে উপহার পেয়েছেন ইমরান খান। কিন্তু উপহারের বিষয়টি খোলাসা করেননি তিনি। এমনকি নির্বাচন কমিশন বলার পরও। ইমরান খানের দল দাবি করেছিল, বিদেশী উপহারের বিষয়টি সামনে আনলে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে এর প্রভাব পরতে পারে।
গত আগস্টে পাকিস্তানের বর্তমান জোট সরকার ইমরান খানের বিরুদ্ধে তোসখানার তথ্য গোপনের বিষয়টি সামনে আনে। তথ্য গোপন রাখায় ও তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় তারা ইমরান খানের বিরুদ্ধে সংবিধানের ৬২ ও ৬৩ ধারায় অভিযোগ আনে এবং তাকে অযোগ্য ঘোষণা করার দাবি জানায়।
এরপর জাতীয় পরিষদের স্পিকার পরবর্তীতে এটি নির্বাচন কমিশনের কাছে পাঠায়।
২৯ আগস্ট ইমরান খানকে ৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এর লিখিত জবাব দিতে নির্দেশ নির্বাচন কমিশন। ইমরান খান স্বীকার করেন তিনি প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় পাওয়া উপহারগুলোর মধ্যে অন্তত চারটি বিক্রি করে দিয়েছেন।
তবে ইমরান খান জানান বিক্রিত উপহারগুলো তিনি ২১.৫৬ মিলিয়ন রুপি দিয়ে কিনে নেন। যার মধ্যে ছিল গ্রাফ রিস্টঘড়ি, এক জোড়া বোতাম, একটি দামি রিং। উপহারগুলোর মধ্যে ছিল চারটি রোলেক্স ঘড়িও।
২২ অক্টোবর ২০২২
এনএইচ