6.9 C
London
April 28, 2024
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

ইমিগ্রেশন ওয়াচডগের প্রধান পরিদর্শককে বরখাস্ত করল যুক্তরাজ্য সরকার

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের উপর নতুন অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। ইমিগ্রেশন নীতিমালা ভেঙ্গে জুম মিটিংয়ের মাধ্যমে ইমিগ্রেশন ওয়াচডগের প্রধান পরিদর্শককে বরখাস্ত করায় টোরি দলের ভিতরেই চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে।

ইমিগ্রেশন ওয়াচডগের বর্ডারস অ্যান্ড ইমিগ্রেশনের চিফ ইন্সপেক্টর ডেভিড নিলকে মঙ্গলবার সরকারের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, জেমস ক্লেভারলি তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে তাকে চাকুরীচ্যুত করার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন।

নিল, যিনি বহুদিন ধরে ইমিগ্রেশন ওয়াচডগের বর্ডারস অ্যান্ড ইমিগ্রেশনের চিফ ইন্সপেক্টরের ভূমিকায় ছিলেন। তিনি আগামী মাসে চাকুরী হতে অব্যাহতি পাবেন বলে জানা যায়। নিল সম্প্রতি তার উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন কয়েক মাস ধরে ওয়াচডগের ভূমিকায় কেউ ছিল না কারণ সরকারের বিমাতা সূলভ আচরণ। তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলি ও ঋষি সুনাকের বিতর্কিত রুয়ান্ডা নীতিমালারও একজন কঠোর সমালোচক ছিলেন।

ডাউনিং স্ট্রিট নিলের পূণনিয়োগকে আটকে দেয় বলে খবরে জানা যায়। হোম অফিস জানিয়েছে, ডেভিড নিল একজন প্রাক্তন পুলিশ অফিসার এবং সেনাবাহিনীতে সৈনিক হিসাবে কর্মরত ছিলেন। নিল ২০১৬ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ফার্স্ট মিলিটারি পুলিশ ব্রিগেডে কর্মরত ছিলেন। ডেভিড নিলকে অ্যাপয়েন্টমেন্টের শর্তাদি লঙ্ঘনের জন্য দায়ী করে হোম অফিস।

শ্যাডো হোম সেক্রেটারি ইয়ভেট কুপার বলেন, “বর্ডার এবং ইমিগ্রেশনে জোড়ে যে বিশৃঙ্খলা চালাচ্ছে টোরিরা এই ঘটনা তারই বহিঃপ্রকাশ মাত্র। কনজারভেটিভ দলের হোম সেক্রেটারিদের বিভিন্ন দূর্বলতা নিয়ে ডেভিড নিল কথা বলেছেন এবং জনসম্মুখে প্রকাশ করে দিয়েছেন বিধায় তার উপর এই খড়গ নেমে এসেছে। গত বছরের এপ্রিল হতে বিভিন্ন স্পর্শকাতর ১৫ টি অপ্রকাশিত ফাইল রয়ে গিয়েছে যা প্রকাশ করা জরুরি জাতীয় স্বার্থে। স্বরাষ্ট্রসচিবকে এখন অবশ্যই এই প্রতিবেদনগুলি সম্পূর্ণ প্রকাশ করতে হবে। কনজারভেটিভরা আমাদের সীমানার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছে, সত্যকে আড়াল করতে চাইছে এবং সীমান্ত সুরক্ষাকে ঝুঁকিতে ফেলেছে।”

মঙ্গলবার ডেইলি মেল কর্তৃক প্রকাশিত ডেভিড নিলের মন্তব্যের কারণে তার অ্যাপয়েন্টমেন্টের শর্তাদি ভঙ্গ করার অভিযোগ উত্থাপন করে সরকার। নিল দাবি করেছিলেন বেসরকারী বিমানগুলির চেকিং যুক্তরাজ্যের সুরক্ষার জন্য আবশ্যকীয়।

বর্ডার ফোর্স অফিসারদের সাধারণত বিমান ১০০% পরীক্ষা করার কথা রয়েছে। কারণ বেসরকারি বিমানকে “উচ্চ ঝুঁকি” হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়ে থাকে। তবে ইমিগ্রেশন ওয়াচডগের বর্ডারস অ্যান্ড ইমিগ্রেশনের পরিদর্শকেরা গত বছর দেখতে পেয়েছিলেন লন্ডন সিটি বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন অফিসাররা মাত্র ২১% চেকিং করেছিলেন। নিল দাবি করেন আশ্রয়প্রার্থীদের যেভাবে রাখা হচ্ছে তাতে বড় ধরনের সংঘাত ছড়িয়ে পড়তে পারে এসাইলাম সেন্টারগুলোতে, বিশেষ করে এসেক্স অঞ্চলে। নিলের এই বক্তব্যও ভালোভাবে নেয় নাই সরকার।

এর আগে মঙ্গলবার ইমিগ্রেশন বিভাগের মন্ত্রী টম পার্সগ্লোভ নিলের সকল বক্তব্যকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।

মন্ত্রী হাউস অব কমন্সে সাংসদদের উদ্দেশ্যে বলেন, “এটি বিরক্তিকর যে তথ্যগুলির কোনও ভিত্তি নেই তা চিফ ইন্সপেক্টর একটি জাতীয় সংবাদপত্রে ফাঁস করেছেন হোম অফিসের প্রতিক্রিয়া জানার আগেই। আমরা জরুরীভাবে গোপনীয় তথ্যের এই লঙ্ঘনকে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিব।”

ডেভিড নিলের একজন বন্ধু জানান, নিল গত বছর হতে প্রায় ১৫ টি প্রতিবেদন নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন। যা সরকারের প্রকাশ করা উচিত ছিল কিন্তু সরকার টালবাহানা করে প্রতিবেদনগুলো প্রকাশ করে নাই।

উল্লেখ্য যে, সরকারের সাথে ডেভিড নিলের মতের অমিল হচ্ছিল বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে। এরমাঝে উল্লেখযোগ্য হল আশ্রয়প্রার্থী শিশুদের যথাযথ নিরাপত্তা প্রদান না করে হোটেলে রাখা, এসাইলাম সেন্টার গুলোর অব্যবস্থাপনা এবং অভিবাসন নিয়ে সরকারের সঠিক পরিকল্পনার অভাব। অবশেষে এই বনিবনা না হওয়াতেই সরকার এমন কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা।

সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান

এম.কে
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

আরো পড়ুন

লন্ডনে ইন্টারনেটের গতি এতো ধীর কেন?

নিউজ ডেস্ক

লন্ডনের রাস্তায় কোটিপতি ভিখারি

বৃটেনে ভারত সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন রাহুল