TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

এক ব্রিটিশ পর্যটক আমেরিকার ডিটেনশন সেন্টারে বন্দি

যুক্তরাজ্যের ২৮ বছর বয়সী রেবেকা বার্ককে ভিসা সংক্রান্ত সমস্যার কারণে গত ১২ দিন ধরে মার্কিন অভিবাসন ও কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (ICE) প্রসেসিং সেন্টারে আটকে রাখা হয়েছে।
রেবেকা’র বাবা, পল বার্ক, বলেছেন মনমাউথশায়ারের পোর্টস্কিউয়েটের এই গ্রাফিক শিল্পী সাম্প্রতিক মার্কিন অভিবাসন দমন অভিযানের কারণে “আটকা পড়েছেন”।

রেবেকা ৭ জানুয়ারি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চার মাসের ব্যাকপ্যাকিং ভ্রমণ শুরু করেছিলেন, কিন্তু ২৬ ফেব্রুয়ারি কানাডায় প্রবেশ করতে চাইলে তাকে “ভুল ভিসা” থাকার কারণে ফেরত পাঠানো হয়।

তিনি ভ্যাঙ্কুভারে একটি হোস্ট পরিবারের সঙ্গে থাকার পরিকল্পনা ছিল, যেখানে তিনি বাসস্থানের বিনিময়ে গৃহস্থালি কাজ করার পরিকল্পনা করেছিলেন।

কানাডিয়ান কর্তৃপক্ষ তাকে জানিয়েছিল পর্যটন ভিসার পরিবর্তে তার একটি কর্মসংস্থান ভিসার জন্য আবেদন করা উচিত ছিল।

তার বাবার মতে, রেবেকা যখন পুনরায় যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের চেষ্টা করেন, তখন তাকে “পুনরায় প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি এবং ‘অবৈধ অভিবাসী’ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে”।

মার্কিন কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রোটেকশন (CBP) জানিয়েছে যারা ভিসা ওয়েভার প্রোগ্রামের আওতায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ করেন, তারা “কোনো ধরনের পারিশ্রমিকের বিনিময়ে কাজ করতে পারেন না”, এমনকি থাকার ও খাওয়ার বিনিময়ে কাজ করাও এর অন্তর্ভুক্ত।

পল বার্ক, শনিবার (৮ মার্চ) এক ফেসবুক পোস্টে লেখেন: “উত্তর আমেরিকা জুড়ে চার মাসের জীবন পরিবর্তনকারী ভ্রমণ পরিণত হয়েছে এক দুঃস্বপ্নে।”

তিনি আরও জানান যে ” তার মেয়েকে একজন পর্যটক হওয়া সত্ত্বেও এবং কোনো অপরাধমূলক রেকর্ড না থাকা সত্ত্বেও” হাতকড়া পরানো হয়েছে এবং ওয়াশিংটনের টাকোমাতে একটি ডিটেনশন সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

ভেগান খাদ্যাভ্যাস অনুসরণকারী রেবেকাকে সেখানে চাল, আলু এবং বিনস দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া রেবেকার পিতা দাবি করেছেন তার ফোন ব্যবহারের সুযোগও সীমিত।

মার্কিন অভিবাসন ও কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (ICE) প্রসেসিং সেন্টারে জানিয়েছে রেবেকা স্বেচ্ছায় দেশত্যাগের জন্য যোগ্য। তবে এই কার্যক্রম একজন অভিবাসন বিচারকের মাধ্যমে সম্পন্ন হতে হবে।

রেবেকারচপরিবারের দাবি, রেবেকার মুক্তির জন্য কোনো সুস্পষ্ট সময়সীমা দেয়া হয় নাই এবং রেবেকা “বিচ্ছিন্ন” অবস্থায় আছেন।

পল বার্ক বলেন: “আমার মেয়ে বেকি একজন দয়ালু, সাহসী তরুণী, যে কেবল তার পরিবারের কাছে ফিরে আসতে চায়।”

তিনি ভ্রমণকারীদের সতর্ক করে বলেন, “বিদেশ ভ্রমণের সময় অবশ্যই ভিসার প্রয়োজনীয়তা যাচাই করতে হবে, কারণ আমি সত্যিই চাই না কেউ আমার মেয়ের মতো তিক্ত অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যাক।”

মনমাউথশায়ারের লেবার এমপি ক্যাথরিন ফুকস বলেন: “আমি আমার নির্বাচনী এলাকার এই বাসিন্দাকে নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন এবং এই পরিস্থিতি তার ও তার পরিবারের জন্য যে দুর্ভোগ সৃষ্টি করেছে তা উপলব্ধি করি। তার পরিবার তাকে ফিরিয়ে আনতে মরিয়া, এবং আমি দ্রুত সমাধানের জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি।

আমরা এই ঘটনা সম্পর্কে অবগত হওয়ার পর থেকে, নিয়মিতভাবে পররাষ্ট্র, কমনওয়েলথ ও উন্নয়ন অফিস (FCDO) এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছি দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ নিশ্চিত করতে।

একজন পররাষ্ট্র, কমনওয়েলথ ও উন্নয়ন অফিস (FCDO) মুখপাত্র বলেছেন: “আমরা যুক্তরাষ্ট্রে আটক এক ব্রিটিশ নাগরিককে সহায়তা করছি এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি।”

দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট মার্কিন অভিবাসন ও কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (ICE) প্রসেসিং সেন্টারের সাথে মতামতের জন্য যোগাযোগ করেছে। যদিও তারা কোনো তথ্য প্রদান করতে অপারগতা প্রকাশ করেছে।

সূত্রঃ দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট

এম.কে
১৪ মার্চ ২০২৫

আরো পড়ুন

ইস্টার সানডে হামলার সন্দেহভাজনের ব্রিটেনে আশ্রয় মামলার পুনরায় শুনানি

স্যার কিয়ার স্টারমার কর্তৃক আগাম সাধারণ নির্বাচন আয়োজনের সম্ভাবনা নাকচ

হেরফের হয়নি বেতনে, চার দিনের অফিস স্থায়ী করেছে অনেক প্রতিষ্ঠান ব্রিটেনে