করোনা মহামারির বিরুদ্ধে ভ্যাকসিনের কোনো বিকল্প নেই। যদিও বিশ্বের কোথাও এখনো টিকা নেয়ার বিষয়টি বাধ্যতামূলক করা হয়নি। তবে কোনো ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা না থাকলে সবাইকেই এই টিকা নিতে উৎসাহিত করছেন বিশেষজ্ঞরা।
করোনা ভাইরাসের আবির্ভাবের পর থেকেই ভ্যাকসিনের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের শুরু হয়েছে৷ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু লোক লিখছে, করোনার ভ্যাকসিন নারীদের প্রজনন ক্ষমতায় প্রভাব ফেলে। ফাইজারের ভ্যাকসিনের কারণে নারীদের মধ্যে বন্ধ্যাত্বের লক্ষণ দেখা দিতে পারে। এটি তাদের প্লাসেন্টা বা গর্ভের ফুলের ক্ষতি করে।
লন্ডনের রয়্যাল কলেজ অব অবেস্টেট্রিশিয়ানস এবং গাইনোকোলজিস্টের মুখপাত্র প্রফেসর লুসি চ্যাপেল বলেছেন, এই ভ্যাকসিনে এমন কোনো ‘বায়োলজিকাল মেকানিজম’ নেই যার মাধ্যমে এটি আপনার প্রজনন ক্ষমতার উপর প্রভাব ফেলতে পারে।
গর্ভবতী নারীদের স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ এই প্রফেসর বলেন, এই ভ্যাকসিনে মানব দেহের প্রজনন ক্ষমতার জন্য ক্ষতিকারক কোনো উপাদান নেই। এটি গর্ভাবস্থায় ব্যবহারের জন্যেও পুরোপুরি নিরাপদ এবং প্রস্তাবিত।
ইংল্যান্ডের ডেপুটি চিফ মেডিকেলের অফিসার জোনাথন ভ্যান-ট্যাম বিবিসিকে বলেন, আমি উর্বরতার উপর প্রভাব ফেলে এমন কোনো ভ্যাকসিনের কথা কখনো শুনিনি।
এই গুজবকে ন্যক্কারজনক, ক্ষতিকারক ভয়ঙ্কর গল্প বলে বর্ণনা করেছেন তিনি ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, যেকোনো টিকারই সাধারণ কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে৷ যেমন, শরীরে ইনজেকশন দেয়ার স্থানটি লাল হয় বা ফুলে যায়৷ তিনদিনের মধ্যে অবসাদ, জ্বর, মাথা ব্যাথা, শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে ব্যাথা হতে পারে৷ তবে এর কোনটিই দীর্ঘস্থায়ী নয়৷ শরীরে টিকার কার্যকারিতা শুরু হলে অ্যান্টিবডি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হওয়ায় এমন প্রতিক্রিয়া স্বাভাবিক৷
অনুমোদন পাওয়া করোনা ভ্যাকসিনগুলোর ক্ষেত্রেও এমন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে৷ ফাইজার, অক্সফোর্ড ও মডার্নার ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রেও কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা বলা হচ্ছে। প্রতি ১০ জনের মধ্যে একজনের এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে বলে বলা হচ্ছে। এগুলো হচ্ছে, টিকার স্থানে ব্যথা, ফোলা বা লাল হওয়া, মাংসপেশি বা অস্থিসন্ধিতে ব্যথা, জ্বর, শীতল অনুভূতি, মাথাব্যথা ও ক্লান্তি।
সূত্র: বিবিসি
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১
এসএফ