9.5 C
London
February 24, 2025
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

গবেষকদের আশা ক্যান্সার চিকিৎসায় বিপ্লব আনতে পারে “তরল বায়োপসি”

যুক্তরাজ্যে ক্যান্সার চিকিৎসায় বিপ্লব আনার জন্য কাজ করছেন একদল গবেষক। একটি কার্যকর “তরল বায়োপসি” ক্যান্সার চিকিৎসায় পরিবর্তন আনতে পারে, এমনটাই আশা করছেন গবেষকরা। যদি এই পরীক্ষা সফল হয়, তাহলে এনএইচএসের লক্ষ্য হলো ক্যান্সার চিকিৎসা সকলের জন্য নিশ্চিত করা — যা জীবন বাঁচাবে এবং চিকিৎসাকে কম ঝুঁকিপূর্ণ ও কম ব্যথাদায়ক করে তুলবে।

স্কাই নিউজের ক্যাটেরিনা ভিটোজ্জি এমন একজন নারীর সাক্ষাৎকার নিয়েছে যার জীবন ইতোমধ্যেই এই উদ্ভাবনী পদ্ধতির মাধ্যমে বদলে গেছে।

প্রাথমিক এক গবেষণার পর, সাধারণ রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে ক্যান্সারের চিকিৎসাকে “জীবন রক্ষাকারী” হিসেবে প্রশংসিত করা হচ্ছে বলে সংবাদমাধ্যমের তথ্যানুযায়ী জানা যায়।

ম্যানচেস্টারের দ্য ক্রিস্টি হাসপাতালে ন্যাশনাল ট্রায়ালে রোগীর ডিএনএ বিশ্লেষণ করে। কোন ধরণের থেরাপি তার জন্য সবচেয়ে কার্যকর হবে তা নির্ধারণ করে এই ডিএনএ বিশ্লেষণ।

যদি এটি সফল হয়, গবেষকরা আশা করছেন, এই পদ্ধতিটি এনএইচএস-এ ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য দ্বার উন্মোচন করতে সক্ষম হবে।

গবেষণার প্রধান তদন্তকারী ডা. ম্যাথিউ ক্রেবস স্কাই নিউজকে বলেছেন, এই গবেষণা “নির্ভুল চিকিৎসাকে” আরও বিস্তৃত পরিসরে ক্যান্সার রোগীদের জন্য সহজলভ্য করছে।

তিনি বলেন, “ক্যান্সার থেকে নির্গত ছোট ছোট ডিএনএ টুকরো রক্ত প্রবাহে ঘুরে বেড়ায়, তাই আমরা নির্দিষ্টভাবে ক্যান্সার থেকে আসা ডিএনএ সংগ্রহ করতে পারি।”

এরপর সেই ডিএনএ বিশ্লেষণ করা হয়, যার মাধ্যমে ডাক্তাররা এর নির্দিষ্ট মিউটেশন দেখতে পারেন এবং রোগীর জন্য বিশেষভাবে তৈরি চিকিৎসার পরামর্শ দিতে পারেন।

ডা. ক্রেবস বলেন, “শুধু সাধারণভাবে কেমোথেরাপির মতো ওষুধ প্রয়োগের বদলে” এই পদ্ধতিতে রোগী আরো নিশ্চিত চিকিৎসা পেতে পারেন।

যদিও ক্যান্সার রোগীদের জন্য জেনেটিক এবং ডিএনএ টেস্ট ইতোমধ্যে হাসপাতালে করা হচ্ছে। তবে সাধারণত এটি বায়োপসির মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়।

এতে অস্ত্রোপচার জড়িত থাকতে পারে, যা অনেক সময় কষ্টদায়ক এবং কিছু ক্ষেত্রে দেরি হয়ে যায়।

দ্য ক্রিস্টি চ্যারিটি এবং স্যার ববি রবসন ফাউন্ডেশন দ্বারা অর্থায়নকৃত টার্গেট ন্যাশনাল স্টাডি ৬,০০০ রোগীকে অন্তর্ভুক্ত করতে চায়, যাতে তারা দেখতে চায় রক্ত পরীক্ষার এই পদ্ধতি — কার্যত একটি “তরল বায়োপসি” — রোগীর ফলাফলে উন্নতি আনে কি না।

ডা. ক্রেবস বলেন, তারা জানেন যে রক্ত পরীক্ষার এই পদ্ধতি “সব রোগীর ক্ষেত্রে কাজ নাও করতে পারে”, কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে এটি ইতোমধ্যে উন্নত পর্যায়ের ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীদের নতুন ওষুধ পরীক্ষার সুযোগ করে দিয়েছে।

৭৮ বছর বয়সী পামেলা গার্নার-জোন্স কে জানানো হয়েছিল তার চতুর্থ পর্যায়ের সার্ভিকাল ক্যান্সার “অপারেশন করা যাবে না” এবং ” তার শরীর আর চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছে না।”

এই অবস্থায়, গার্নার-জোন্সকে টার্গেট ন্যাশনাল স্টাডি-তে অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। তার রক্ত পরীক্ষার ফলাফল তাকে নতুন এক ইমিউনোথেরাপি ওষুধ পরীক্ষার সাথে সংযুক্ত করে, যার ফলে তার টিউমার দুই-তৃতীয়াংশ কমে যায়।

গার্নার-জোন্স বলেন, “সত্যি বলতে, এর চেয়ে বেশি আর কিছু চাই না। আমার এখন অনেক শক্তি, ক্ষুধা ফিরে এসেছে — এটা জীবন রক্ষাকারী।

এটা শুধু একটা সাধারণ রক্ত পরীক্ষা, আর আপনাকে অসংখ্য ওষুধে শরীর বিষিয়ে তোলা হয় না।”

গার্নার-জোন্স এখন বন্ধুদের সঙ্গে ছুটিতে যাওয়ার, বাইরে খাওয়ার এবং তার বাগানে সময় কাটানোর জন্য উদগ্রীব।

সূত্রঃ স্কাই নিউজ

এম.কে
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

আরো পড়ুন

হামাসের পক্ষে অবস্থান নিলে ক্ষমা নয়ঃ যুক্তরাজ্যের ইমিগ্রেশন মন্ত্রী

প্রিন্সেস ডায়ানার গাড়ি বিক্রি হলো সাড়ে ৬ লাখ পাউন্ডে

একজন আশ্রয়প্রার্থীর বিশ্বজয়ের গল্প