নতুন নাগরিকত্ব আইনের অনুমোদন দিয়েছে জার্মান সংসদের উচ্চকক্ষ৷ দুই সপ্তাহ আগে দেশটির সংসদের নিম্নকক্ষে আইনটি পাশের পর শুক্রবার উচ্চকক্ষে আইনটি পাশ হয়৷
ক্ষমাতাসীন জোটের পক্ষ থেকে আইনটিকে সাধুবাদ জানানো হলেও এর সমালোচনা করছেন বিরোধীরা৷
ক্ষমতাসীন জোট গ্রিন পার্টির অভিবাসনবিষয়ক বিশেষজ্ঞ ফিলিস পোলাট সরকারের নতুন এই আইনকে সাধুবাদ জানান৷ সেইসাথে বিরোধীদের সমালোচনাকে তিনি ‘আধুনিক অভিবাসন সমাজকে বুঝতে না পারার ব্যর্থতা’ বলেও মন্তব্য করেন৷
এদিকে বিরোধী খ্রিস্টীয় গণতন্ত্রী দল সিডিইউর সদস্য এবং জার্মানির বাডেন-ভুর্টেমব্যার্গ রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টমাস স্টোবল বলেন, ‘‘সরকারের এই পরিকল্পনা ভুল পথে ধাবিত হচ্ছে৷’’
তিনি বলেন, বর্তমানে একজন অভিবাসীকে ভাষা ও সমাজের নিয়মকানুন শিখে জার্মান সমাজে একীভূত হতে দীর্ঘ সময় লাগে৷ তার মতে, নতুন নাগরিকত্ব আইন পাশ হওয়ার ফলে যে সংখ্যক আবেদন জমা পড়বে তা যাচাই-বাছাইয়ের সক্ষমতাও সরকারের নেই।
নতুন আইনে অভিবাসীদের দ্বৈত নাগরিকত্ব রাখার সুযোগ দেওয়া হয়েছে৷ তাছাড়া জার্মানিতে পাঁচ বছর বৈধভাবে অবস্থান করার পরই দেশটির নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন অভিবাসীরা৷ আগের আইনে এই সময়সীমা ছিল আট বছর৷ আর অভিবাসীরা যদি জার্মান সমাজে একীভূত হওয়ার শক্তিশালী প্রমাণ দেখাতে পারে সেক্ষেত্রে দেশটিতে ৩ বছর বৈধভাবে থাকার পর নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবে৷ আগের আইনে এটি ছিল ৬ বছর৷
এদিকে বিদেশি বাবা-মায়েদের কোনো একজন যদি বৈধভাবে জার্মানিতে পাঁচ বছর অবস্থান করে থাকেন তাদের সন্তানেরা জার্মানির নাগরিকত্বের জন্য যোগ্য হবে৷ আগেই নিয়মে এটি ছিল আট বছর৷
নতুন আইনের একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো দ্বৈত নাগরিকত্বের বিধান। অভিবাসীরা এখন থেকে জার্মান নাগরিকত্ব গ্রহণের পাশাপাশি নিজ দেশের নাগরিকত্বও ধরে রাখতে পারবে৷ জার্মানি এই সুবিধা আগে শুধু ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর অভিবাসীদের জন্য প্রযোজ্য ছিল৷
একইভাবে জার্মান নাগরিকেরাও অন্য যেকোনো দেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করতে পারবেন৷ এরজন্য জার্মান সরকারের কাছ থেকে বিশেষ অনুমতি নেয়ার প্রয়োজন নেই৷
এদিকে শুক্রবার উচ্চকক্ষে পাশ হওয়া আইনটিতে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে৷ এরমধ্যে রয়েছে প্রত্যাবাসন আইনের পরিবর্তন৷ যেসকল অভিবাসনপ্রত্যাশী পাচরসহ নানা অপরাধমুলক কাজে যুক্ত তাদেরকে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার পক্ষে মত দেন আইনপ্রণেতারা৷
এম.কে
০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪