যুক্তরাজ্যের স্থানীয় নির্বাচনের পর টাউন হলগুলোতে কনজারভেটিভ ও রিফর্ম ইউকে কাউন্সিলরদের মধ্যে কোয়ালিশন গঠনের ব্যাপারে কেমি ব্যাডেনকের প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছেন নাইজেল ফারাজ।
ব্যাডেনক বলেন, যদি স্থানীয় জনগণের জন্য উপযুক্ত হয়, তাহলে টরি এবং রিফর্ম কাউন্সিলররা একত্রে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ পরিচালনার জন্য আনুষ্ঠানিক চুক্তিতে প্রবেশ করতে পারেন।
কিন্তু রিফর্ম পার্টির নেতা নাইজাল ফারাজ জবাবে বলেন, তার দলের “কোনও ইচ্ছা নেই” ১ মে-র পর টরিদের সঙ্গে যেকোনো স্তরে কোয়ালিশন গঠনের।
বৃহস্পতিবার বিবিসি ব্রেকফাস্ট-এ বক্তব্যে কনজারভেটিভ নেতা ব্যাডেনক বলেন, জাতীয় স্তরে ফারাজ চুক্তির সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দিলেও, টরি কাউন্সিলররা নিয়মিতভাবেই লেবার ও লিবারেল ডেমোক্রেটসহ নানা দলের সঙ্গে কোয়ালিশনে যান।
তিনি বলেন, “স্থানীয় নির্বাচনে পুনরায় ভোট হয় না, তাই আমি দেশের সমস্ত স্থানীয় নেতাদের বলছি, তাদের যা স্থানীয় জনগণের জন্য সঠিক, সেটাই করতে হবে।”
ফারাজ পাল্টা বলেন, “রিফর্মের টরিদের সঙ্গে কোনও স্তরে কোয়ালিশন গঠনের কোনও ইচ্ছা নেই” কারণ “টরিরা গত ১৪ বছরে জাতীয়ভাবে ব্রিটেনকে ধ্বংস করেছে, আর তাদের কাউন্সিলগুলো স্থানীয় কমিউনিটিকে সর্বোচ্চ ট্যাক্স ও সবচেয়ে বাজে সেবা দিয়ে দুর্দশায় ফেলছে।”
এই বিতর্ক তৈরি হয়েছে আসছে মে মাসে ইংল্যান্ডের ২০টিরও বেশি কাউন্সিলে নির্বাচন হবার মাত্র তিন সপ্তাহ আগে। রিফর্ম পার্টি সেখানে উল্লেখযোগ্য সাফল্য পেতে চায়।
প্রত্যাশা করা হচ্ছে, কনজারভেটিভরা বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হবে, কারণ এই আসনগুলো শেষবার নির্বাচিত হয়েছিল ২০২১ সালে। যখন কোভিড-১৯ টিকাদান কার্যক্রমের কারণে তাদের জনপ্রিয়তা ছিল অনেক বেশি। জরিপ অনুযায়ী, ১ মে-তে অনেক কাউন্সিলেই কোনও দলই একক নিয়ন্ত্রণে থাকবে না।
কনজারভেটিভ ও রিফর্ম উভয়েই জাতীয় স্তরে জোট গঠনের সম্ভাবনা প্রত্যাখ্যান করেছে, যদিও কিছু এমপি ডানপন্থী দলগুলোকে এক করার চাপ দিচ্ছেন।
তবুও ব্যাডেনক বলেন, “স্থানীয় কাউন্সিলগুলোর সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত তাদের নিজেদের উপযোগ অনুযায়ী” যতক্ষণ তারা “কনজারভেটিভ নীতিগুলো মেনে চলে।”
এ প্রসঙ্গে লেবার পার্টির চেয়ার এলি রিভস বলেন, “এখন বিষয়টি পরিষ্কার, আপনি যদি রিফর্ম বা কনজারভেটিভকে ভোট দেন, তাহলে আপনি আরও ১৪ বছরের টরি বিশৃঙ্খলার দরজা খুলে দিচ্ছেন।”
লিবারেল ডেমোক্রেটদের ডেপুটি লিডার ডেইজি কুপার বলেন, “ব্যাডেনক আর ফারাজের নীতির মধ্যে পার্থক্য খুঁজে পাওয়া যায় না” এবং “তার নেতৃত্বে কনজারভেটিভ ও রিফর্ম কার্যত এক হয়ে গেছে, শুধু নামটাই আলাদা।”
ব্যাডেনক স্বীকার করেন, এবারের নির্বাচন হবে “চ্যালেঞ্জিং” কারণ দলটি গত গ্রীষ্মে জাতীয় নির্বাচনে পরাজয়ের স্বাদ পেয়েছে।
লেবার পার্টির গবেষণায় দেখা গেছে, এ বছর রিফর্মের ৬০ জনেরও বেশি কাউন্সিল প্রার্থী কনজারভেটিভ পার্টি থেকে আসা।
রিফর্ম পার্টি রানকর্ন ও হেলসবির উপনির্বাচনে এক প্রাক্তন কনজারভেটিভকে প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করেছে, এই নির্বাচনটিও ১ মে অনুষ্ঠিত হবে। গ্রেটার লিংকনশায়ারের মেয়র পদে তাদের প্রার্থী হচ্ছেন সাবেক টরি এমপি আন্দ্রেয়া জেনকিনস।
বৃহস্পতিবার ব্যাডেনক-এর কাছে প্রশ্ন করা হয়, তিনি রানকর্ন ও হেলসবিতে প্রচারণা চালাচ্ছেন না কেন। এর আগে সংবাদে প্রকাশ, টরির প্রাক্তন মন্ত্রী এস্থার ম্যাকভে বলেছিলেন, কনজারভেটিভ দল যেন “রিফর্মকে ওই আসনটি জিততে দেয়।”
ব্যাডেনক বলেন, তার দল “প্রত্যেকটি আসনের জন্য লড়ছে” কিন্তু তিনি একসাথে সব জায়গায় থাকতে পারেন না। তিনি বলেন, “আমি এখন ল্যাঙ্কাশায়ারে আছি, আর আমি দেশের বিভিন্ন কাউন্টি কাউন্সিল প্রার্থীদের ও আমাদের মেয়র প্রার্থীদের সমর্থন জানাচ্ছি।”
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
১০ এপ্রিল ২০২৫