সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে তাদের বেশিরভাগ কূটনৈতিক কর্মী সরিয়ে নিচ্ছে ইসরায়েল। নিরাপত্তা ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল (এনএসসি) দেশটির নাগরিকদের জন্য ভ্রমণ সতর্কতা হালনাগাদ করার পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির স্থানীয় সংবাদমাধ্যম।
এমন পরিস্থিতিতে ইসরায়েল সম্প্রতি আমিরাতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ইয়োসি আব্রাহাম শেলিকেও প্রত্যাহার করেছে। রাষ্ট্রদূতের বিরুদ্ধে একাধিকবার ‘অশোভন আচরণ’ এবং আবুধাবির একটি বারে নারীদের সঙ্গে অনুপযুক্তভাবে প্রবেশ করার অভিযোগে আমিরাত আনুষ্ঠানিকভাবে আপত্তি জানিয়েছিল। পরে জানানো হয়, শেলিকে আর তারা গ্রহণ করতে ইচ্ছুক নয়। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম বলছে, আবুধাবির ঐ ঘটনার সময় রাষ্ট্রদূতের আচরণকে আমিরাতের কর্মকর্তারা ‘সীমা অতিক্রম’ এবং ‘অমর্যাদাকর’ বলে বর্ণনা করেন।
গত বৃহস্পতিবার এনএসসি জানায়, ইরানে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক ১২ দিনের সামরিক হামলার প্রতিক্রিয়ায় মধ্যপ্রাচ্যে বিশেষ করে আরব আমিরাতে ইহুদি ও ইসরায়েলিদের ওপর হামলার আশঙ্কা রয়েছে, বিশেষত শাব্বাত ও অন্যান্য ইহুদিধর্মীয় ছুটির সময়ে। গাজায় চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশটি ক্রমেই কোণঠাসা হয়ে পড়ছে এবং অনেক রাষ্ট্র ও মানবাধিকার সংস্থা ইসরায়েলের অভিযানে ‘গণহত্যা’র অভিযোগ তুলছে।
২০২০ সালে আমিরাত আনুষ্ঠানিকভাবে ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে, যা ছিল মিসর (১৯৭৯) ও জর্ডান (১৯৯৪)–এর পর তৃতীয় আরব রাষ্ট্র হিসেবে ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘটনা। এরপর ২০২২ সালে উভয় দেশ একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করে। একই বছর দুবাই ও তেল আবিবের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট চালু হলে ব্যবসা ও পর্যটন খাতে সম্পর্ক আরও গভীর হয়।
ইসরায়েলি কর্মকর্তারা এতদিন ধরে দাবি করে আসছিলেন, আরব আমিরাত ইসরায়েলিদের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ দেশগুলোর একটি। তবে চলতি বছরের মার্চে আমিরাতে এক ইসরায়েলি-মলদোভান রাবি জিভি কোগানকে হত্যার ঘটনায় তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার রায় এবং সর্বশেষ রাষ্ট্রদূতকে ঘিরে বিতর্ক—সব মিলিয়ে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক টানাপোড়েন স্পষ্ট হচ্ছে।
সূত্রঃ আরব নিউজ
এম.কে
০২ আগস্ট ২০২৫