চলতি বছরের জুলাইয়ের সাধারণ নির্বাচনে বড় জয় নিয়ে যুক্তরাজ্যের ক্ষমতায় এসেছে লেবার পার্টি৷ নতুন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন দলেন প্রধান কিয়ার স্টারমার৷ দলটি ক্ষমতা নেয়ার পর থেকে অন্তত ২০ হাজার অভিবাসী উত্তর ফ্রান্স উপকূল থেকে যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন৷
এর আগে রক্ষণশীল কনজারভেটিভ পার্টির প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের সময়ে ৫০ হাজার ৬৩৭ জন অনিয়মিত অভিবাসী ছোট নৌকায় যুক্তরাজ্যে এসেছিলেন৷ ২০২২ সালের ২৫ অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের জুলাই পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন সুনাক৷
ব্রিটিশ হোম অফিসের পরিসংখ্যান বলছে, ঋষি সুনাক প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব নেয়ার পর অন্তত আট মাস সময় লেগেছিল চ্যানেল পেরিয়ে আসা অভিবাসীর সংখ্যা ২০ হাজার পূর্ণ হতে৷
কিন্তু কিয়ার স্টারমার ক্ষমতায় এসেছেন গ্রীষ্মে৷ গ্রীষ্ম ও শরতে চ্যানেলে সবচেয়ে বেশি অভিবাসী আগমনের প্রবণতা দেখা যায়৷ এ কারণেই মাত্র সাড়ে চার মাসেই ২০ হাজার অভিবাসী ফ্রান্স থেকে ব্রিটেনে পৌঁছেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷
একটি সরকারি সূত্র পিএ নিউজ এজেন্সিকে জানিয়েছে, “রক্ষণশীল নেতা রবার্ট জেনরিক গত সপ্তাহে সত্য কথা বলেছেন৷ তিনি বলেন ‘টোরি পার্টির অভিবাসন নীতি দেশকে খারাপ অবস্থায় নিয়ে গেছে এবং দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি করেছে’৷’’
সূত্রটি আরো জানিয়েছে, ‘‘এমন পরিস্থিতিতে জনসাধারণের ক্ষোভ প্রকাশ করবেই, তাদের অধিকার রয়েছে৷ কনজারভেটিভ পার্টির এজন্য লজ্জিত হওয়া উচিত৷ আমরা একই ভুলের পুনরাবৃত্তি করব না৷’’
সূত্রটির মতে, ‘‘মানুষ পরিবর্তনের পক্ষে ভোট দিয়েছেন৷ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গত সপ্তাহে ইরাক সফর করেছেন৷ তিনি চ্যানেলে পাচারকারীদের মোকাবিলায় প্রথমবারের মতো একটি চুক্তিতে সই করেছেন৷’’
কনজারভেটিভ পার্টির নতুন নেতা কেমি ব্যাডেনোচ স্বীকার করেছেন তার দল অভিবাসন মোকাবিলায় ব্যর্থ হয়েছে৷
প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার সম্প্রতি ডাউনিং স্ট্রিটে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “গত সরকারের প্রকল্প আমাদের ব্যর্থ করেছে৷ তারা অভিবাসনের হার বাড়িয়েছে৷ আমরা এটি কমিয়ে আনব৷’’
সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানগুলোতে দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যের আশ্রয় ব্যবস্থার ব্যয় বেড়েছে পাঁচশ কোটি পাউন্ড৷ এটি হোম অফিসের অতীতের সব ব্যয়ের মধ্যে সর্বোচ্চ৷
দেশটির ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ) জানিয়েছে, এটি সংগঠিত অপরাধ ও মানবপাচার সম্পর্কিত প্রায় ৭০টি ঘটনার তদন্ত করছে৷
সূত্রঃ রয়টার্স, দ্য ইনডিপেনডেন্ট ইউকে
এম.কে
০৪ ডিসেম্বর ২০২৪