অভিবাসী বাচ্চাদের জন্মসনদে ব্রিটিশ সিটিজেনদের বাবা হিসেবে পরিচয় দিয়ে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব নেওয়ার নতুন স্ক্যাম প্রকাশ হয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের এক প্রতিবেদনে। প্রতিবেদনে প্রকাশ, প্রতিজন বাচ্চাকে ব্রিটিশ বাবার নাম ব্যবহার করার সুযোগ করে দিতে নেওয়া হয় দশ হাজার পাউন্ড পর্যন্ত।
বিবিসি সংবাদমাধ্যমের একটি তদন্তে দেখা গেছে যে স্ক্যামাররা ফেসবুককে ব্যবহার করছে এই স্ক্যামের বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য।
তবে ফেসবুক এই দায় নিতে অস্বীকৃতি জানায় এবং বলে এই জাতীয় বিজ্ঞাপন ফেসবুকে প্রকাশ করা ফেসবুকের আইনানুযায়ী সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
বিবিসির একজন গবেষক নিজের পরিচয় গোপন করে এই স্ক্যামারদের সাথে যোগাযোগ করেন। তিনি জালিয়াত চক্রের সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করতে সক্ষম হন। পরবর্তীতে এই স্ক্যাম পরিষেবাগুলি সরবরাহকারী লোকদের সাথেও কথা বলেন।
ব্রিটিশ সংবাদকর্মীর সাথে স্ক্যাম এজেন্টদের কথা হয় তাদের একজনের নাম থাই। থাই তাকে পুরো বিষয় বিশদভাবে ব্যাখ্যা করে এবং ১১০০০ পাউন্ডের একটি “পূর্ণ প্যাকেজ” অফার করেন।
প্রতিবেদনে আরো জানা যায়, থাই অ্যান্ড্রু নামক এক ব্রিটিশ ব্যক্তির সাথে আন্ডারকভার ব্রিটিশ সংবাদকর্মীকে পরিচয় করিয়ে দেয়। অ্যান্ড্রু তাকে ৮০০০ পাউন্ড দেয়ার অফার করে বিনিময়ে তার নাম ও পরিচয় অভিবাসী শিশুদের বাবার নামের স্থানে ব্যবহার করার শর্তারোপ করে।
যুক্তরাজ্যের আইনানুযায়ী কোনো অভিবাসী মহিলা অবৈধভাবে যুক্তরাজ্যে থাকলেও তার ঔরসে জন্ম নেওয়া একটি শিশু স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্রিটিশ হয় যদি ব্রিটিশ নাগরিক বা ইন্ডেফিনিট লিভ টু রিমেইন পাওয়া একজন পুরুষ সন্তানের পিতা হয়।
পরবর্তীতে মা পারিবারিক ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন, যা তাকে যুক্তরাজ্যে থাকার এবং যথাযথভাবে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করার অধিকার দেয়।
তবে ইচ্ছাকৃতভাবে জন্মসনদে মিথ্যা তথ্য দেওয়া একটি ফৌজদারি অপরাধ।
হোম অফিস হতে জানানো হয় মিথ্যা জন্মসনদ ব্যবহার করে অভিবাসন জালিয়াতি প্রতিরোধ এবং সনাক্ত করার জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা রয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে ভারত, পাকিস্তান, নাইজেরিয়া এবং শ্রীলঙ্কার বিভিন্ন অভিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে এই স্ক্যামের ব্যাপক অনুশীলন রয়েছে এবং তা বহুবছর হতে ঘটে আসছে।
তদন্তে দেখা গেছে যে অবৈধ এই পন্থার বিজ্ঞাপন ফেসবুকের ভিয়েতনামী কিছু পেজ ও গ্রুপে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়। যেখানে ‘জবসিকার’ শব্দ ব্যবহার করে সকলের নজরে আসার জন্য স্ক্যামাররা বিজ্ঞাপন প্রদান করতে থাকে।
ফেসবুকের মালিকানাধীন সংস্থা মেটা জানায়, “কোন ধরনের আইন বহির্ভূত কাজে আমরা কাউকে উৎসাহিত করি না। নিয়মনীতি পালন করে যে কেউ ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিতে পারে। ফেসবুকের কড়া নজরদারি ব্যবস্থা রয়েছে।”