7.9 C
London
April 20, 2024
TV3 BANGLA
শীর্ষ খবরসারাদেশ

বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ কর দিতে হয় বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ খাতে

‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ পরিপূর্ণ বাস্তবায়নে মোবাইল টেলিযোগাযোগ খাতে কর নীতি সংস্কারের পরামর্শ দিয়েছে গ্লোবাল সিস্টেম মোবাইল কমিউনিকেশন অ্যাসোসিয়েশন (জিএসএমএ)।

 

বৃহস্পতিবার (৬ মে) ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে বাংলাদেশের মোবাইল টেলিযোগাযোগ খাতে কর কাঠামো নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ পরামর্শ দেওয়া হয়।

 

এতে বলা হয়, বর্তমানে বাংলাদেশের মোবাইল টেলিযোগাযোগ খাতে ৪৪ শতাংশ কর দিতে হয়, যা বিশ্বে তৃতীয় সর্বোচ্চ। উচ্চ করের চাপ কমানো গেলে এ খাত থেকে সরকারের রাজস্ব বাড়বে বছরে প্রায় ১৭৮ মিলিয়ন ডলার।

 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। তিনি বলেন, ডিজিটাল সংযুক্তি হচ্ছে ডিজিটাল যুগের মহাসড়ক। তার মতে, ডিজিটালাইজেশন হচ্ছে বাংলাদেশের অগ্রগতির লাইফ লাইন।  এরই ধারাবাহিকতায় টেলিযোগাযোগ খাত হচ্ছে ব্যক্তিগত থেকে রাষ্ট্রীয় জীবনের মুখ্য বিষয়।

 

তিনি গ্রাহক সেবার মানোন্নয়নে টেলিযোগাযোগ খাতের সংশ্লিষ্টদের আরও যত্মশীল হওয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ‘উন্নত গ্রাহকসেবার বিষয়টি এখনও পর্যাপ্ত নয়। মোবাইল ফোন অপারেটরসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে এ বিষয়ে আরও তৎপর হতে হবে।’

 

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, টেলিযোগাযোগ খাতের বিদ্যমান কর কাঠামোর কারণে অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হলে এই কর কাঠামো পুনর্বিবেচনা করাই যুক্তিসংগত।

 

তবে পুনর্বিবেচনার ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে, এ খাত থেকে সরকারের রাজস্ব আদায়েও যেন নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে।

সভায় আরও সংযুক্ত ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব আফজাল হোসেন, বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম, বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য প্রদ্যুত কুমার সরকার, অ্যামটব সভাপতি ও রবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহতাব উদ্দিন আহমেদ এবং অ্যামটবের সাধারণ সম্পাদক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এসএম ফরহাদ। সভা সঞ্চালনা করেন জিএসএমএ টিমের জুলিয়ান গোরম্যান।

 

অনুষ্ঠানে জিএসএমএ বাংলাদেশ বিষয়ে একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে।  তাতে বলা হয়, অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারকে ত্বরান্বিত করা এবং ডিজিটাল বৈষম্য কমিয়ে আনতে মোবাইল টেলিযোগাযোগ খাতে কর হ্রাস বাংলাদেশের জন্য উৎকৃষ্ট কৌশলগত নীতিগুলোর অন্যতম বলে বিবেচিত হতে পারে। গবেষণায় বলা হয়, মোবাইল টেলিযোগযোগ খাতে বাংলাদেশে ৪৪ শতাংশ কর দিতে হয়, যা বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ।

 

প্রকৃতপক্ষে, বাংলাদেশে মোবাইল সেবাদাতাদের প্রতি ১০০ টাকা রাজস্বের প্রায় অর্ধেকই কর এবং নানা ধরনের রেগুলেটরি ফি হিসেবে প্রদান করতে হয়, যা এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের অন্যদেশগুলোর এ ধরনের গড় ফি’র প্রায় দ্বিগুণ। এই অর্থ দেশের জনগণকেই পরিশোধ করতে হয়, যার প্রভাব অর্থনীতিতে পড়ে।

 

গবেষণা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের অনেক নাগরিকের জন্য ২০০ টাকা সিম ট্যাক্স বোঝা হয়ে দাঁড়ায়, যদিও তা সাশ্রয়ী করে তোলার জন্য অনেক ক্ষেত্রে মোবাইল অপারেটররাই দিয়ে দেয়।  এছাড়া মোবাইল সেবার ওপর মোট ৩৫ শতাংশ কনজিউমার ট্যাক্স বা ভোক্তা পর্যায়ে কর আরোপিত আছে, যা সরকারের কোষাগারে যুক্ত হয়। এর ১৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক এবং ১ শতাংশ সারচার্জ।

 

গবেষণা বলছে, ২০১০ সাল থেকে বাংলাদেশের মোবাইল অপারেটরগুলো এ পর্যন্ত ৬ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে। ফলে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে বাংলাদেশে সর্বাধিক ৯৫ শতাংশ ফোরজি নেটওয়ার্ক কাভারেজ সম্ভব হয়েছে। কিন্তু দেশের দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ এখনও ডিজিটাল প্রযুক্তির সুফল থেকে বঞ্চিত। ডিজিটাল অর্থনীতিতে এই বিপুল সংখ্যক জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণ করতে না পারা ২০৩১ সাল নাগাদ বাংলাদেশের উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার পথে বড় ধরনের প্রতিবন্ধক হতে পারে।

 

৯ মে ২০২১
নিউজ ডেস্ক

আরো পড়ুন

ধর্মঘটে শাস্তির বিধান রেখে ‘অত্যাবশ্যক পরিষেবা আইন’ অনুমোদন

কনজারভেটিভ সরকারের বিতর্কিত রুয়ান্ডা নির্বাসন মামলায় পরাজয়

মাদকের সঙ্গে জড়িতদের পাসপোর্ট ও ড্রাইভিংলাইসেন্স বাতিল করবে যুক্তরাজ্য