6.5 C
London
December 26, 2024
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)শীর্ষ খবর

বৈধ স্ট্যাটাস থাকা সত্ত্বেও যুক্তরাজ্যে আসতে পারছেন না আলী

শরনার্থী স্ট্যাটাস পাওয়া একজন ব্যক্তি ১৬ বছর ধরে পূর্ব আফ্রিকা হতে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করতে পারছেন না। কিশোর বয়সে যুক্তরাজ্য ছেড়ে যাওয়া এই শরণার্থী হলিডেতে নিজের দেশে গিয়ে আর ফেরত আসতে পারেন নাই বলে জানা যায়। যুক্তরাজ্য আদালতের সিনিয়র বিচারকেরা এই ঘটনাকে আশ্চর্যজনক বলে অভিহিত করেছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে আসে।

সালেহ আহমেদ আলী, যার বর্তমান বয়স ৩৩ বছর তিনি নয় বছর বয়সে ২০০০ সালের এপ্রিল মাসে তার মা এবং সোমালিয়া থেকে দুই ছোট ভাইবোনকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে এসেছিলেন। তার বাবা শরনার্থী মর্যাদা পাওয়ায় পুরো পরিবার বাবার সাথে যুক্তরাজ্যে যোগ দেওয়ার অনুমতি পেয়েছিল। পরিবারটি হোম অফিস কর্তৃক শরণার্থী হিসাবে স্বীকৃত পাওয়ায় আলীকে ২০০৪ সালে শরণার্থী সম্মেলনের অধীনে একটি ট্র্যাভেল ডকুমেন্ট দেওয়া হয়, যা ১০ বছরের জন্য বৈধ ছিল।

২০০৮ সালে সালেহ আলী’র যক্ষ্মা ধরা পড়ে। সেই বছরের ডিসেম্বরে উষ্ণ জলবায়ুতে থাকলে রোগমুক্তি ঘটবে এই আশায় স্বল্প ছুটি নিয়ে জিবুতি ভ্রমণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন আলী।

জিবুতি পৌঁছানোর এক পর্যায়ে, তিনি তার শরণার্থী ভ্রমণের নথি হারিয়ে ফেলেন। যার কারণে যুক্তরাজ্যের ব্রিস্টলে তার পরিবারের কাছে ফিরে যেতে পারেননি। জিবুতিতে কোনও ব্রিটিশ দূতাবাস না থাকায় তিনি প্রতিবেশী ইথিওপিয়ায় যান এবং সেখান হতে আদ্দিস আবাবায় পৌঁছান। বহু প্রচেষ্টার পর তিনি সেখানের যুক্তরাজ্য দুতাবাসে পৌঁছান তবে দুতাবাস হতে কোনো সহযোগিতা পান নাই।

তথ্যানুযায়ী জানা যায়, হোম অফিস তাদের ডাটাবেসের রেকর্ড রাখতে ব্যর্থ হয় বিধায় সালেহ আলীর শরনার্থী স্ট্যাটাস নিয়ে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়। যার কারণে দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে তিনি ইথিওপিয়ায় আটকা পড়েন।

সালেহ আলীর মা বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জটিলতায় ভুগছেন তাছাড়া ছেলের চিন্তায় আরো অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে খবরে জানা যায়। আলীর মা সলিসিটর নিয়োগ কর‍তে চান তার ছেলেকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য। তাই বেশ কয়েক বছর ধরে তিনি অর্থ সাশ্রয় করে যাচ্ছেন বলে সংবাদমাধ্যমকে জানান।

২০১৫ সালের জুন মাসে হোম অফিসের এন্ট্রি ক্লিয়ারেন্স অফিসার যুক্তরাজ্যে ফিরে আসার আলীর চেষ্টাকে প্রত্যাখ্যাত করেন। আলীর পরিবার পরবর্তীতে ইমিগ্রেশন কোর্টের উচ্চ ট্রাইব্যুনালে আপিল আবেদন করলে সেই আপিলও প্রত্যাখ্যাত হয়।

আলী ইথিওপিয়ায় অস্তিত্বের সাথে লড়াই করে কোনরকম জীবনযাপন করে যাচ্ছেন। তার মা তাকে যে অর্থ যুক্তরাজ্য হতে প্রেরণ করেন তা দিয়েই জীবন রক্ষা করে যাচ্ছেন আলী।

আলীর মা শামিস ডিরিয়া দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, “ আমি আমার ছেলের জন্য বছর বছর থেকে কেঁদে যাচ্ছি। আমরা চাই হোম অফিস তাকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দিক। তবে তারা আমাদের কথা শুনছে না। আমরা যখন ফোনে আলীর সাথে কথা বলি তখন সে চিৎকার করে কাঁদে। তাছাড়া গত তিন মাস ধরে ইথিওপিয়ায় তার কাছে কোনও ফোন নেই, তাই তার সাথে কথা বলাও অনেক সময় কঠিন হয়ে যায়। কখনও কখনও আমরা জানতে পারি না সে বেঁচে আছে কিনা। ”

পরিবারের তথ্য হতে জানা যায়, আলী যুক্তরাজ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উচ্চ বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেছিল। একটি হলিডে কাটাতে গিয়ে সালেহ আলী প্রথমে ইথিওপিয়া ও পরবর্তীতে জিবুতিতে গিয়ে আটকে পড়েন।

হোম অফিসের একজন মুখপাত্র সালেহ আলীর মামলা সম্পর্কে বলেন, ” এটি সরকারী নীতির বিষয় যাতে পৃথক মামলা হিসাবে আমরা মন্তব্য করতে অপারগ।”

সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান

এম.কে
২২ এপ্রিল ২০২৪

আরো পড়ুন

ইউক্রেন ইস্যুতে জাতিসংঘে বাংলাদেশের অবস্থানে অসন্তুষ্ট পশ্চিমা মিত্ররা

অনলাইন ডেস্ক

আইরিশ-স্কটিশ-ওয়েলশ ভাষায় প্রকাশ পেল বঙ্গবন্ধুর ভাষণ

অনলাইন ডেস্ক

First Homes scheme 🏠 বিলেতে বাড়ি কেনাবেচা