14.6 C
London
March 29, 2025
TV3 BANGLA
আন্তর্জাতিক

বোরকা পরায় প্রথমবারের মতো জরিমানা করল সুইজারল্যান্ড

২০২১ সালের গণভোটে পাস হওয়া একটি আইন অনুযায়ী, সুইজারল্যান্ডে এখন জনসমক্ষে মুখ ঢেকে রাখা নিষেধ। এরই ধারাবাহিকতায়, দেশটির কর্তৃপক্ষ প্রথমবারের মতো বোরকা পরার জন্য এক নারীকেই জরিমানা করেছে।

সোমবার (২৪ মার্চ) রুশ সংবাদমাধ্যম আরটির প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ ঘটনা ঘটেছে জুরিখ শহরে, যেখানে এক নারী প্রকাশ্যে বোরকা পরেছিলেন। সুইস পুলিশ মুখপাত্র মাইকেল ওয়াকার এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সুইজারল্যান্ডের নতুন আইন অনুযায়ী—জনসমক্ষে মুখ ঢেকে রাখা নিষিদ্ধ। এতে মুসলিম নারীদের বোরকা ও নিকাবের পাশাপাশি বিক্ষোভকারী বা ক্রীড়াপ্রেমীদের মুখোশ ও বালাক্লাভাও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে স্বাস্থ্যগত কারণ, ঠান্ডা আবহাওয়া, কার্নিভ্যাল ইভেন্ট, নির্দিষ্ট ধর্মীয় উপাসনালয়, কূটনৈতিক বা সাংস্কৃতিক পারফরম্যান্সের ক্ষেত্রে কিছু ব্যতিক্রম রাখা হয়েছে।

পুলিশের মুখপাত্র ওয়াকার জানিয়েছেন, গোপনীয়তা আইনের কারণে তিনি ওই নারীর বয়স বা তার পোশাক সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করতে পারেননি। তবে তিনি নিশ্চিত করেছেন, ওই নারী কোনো পর্যটক নন, সুইজারল্যান্ডেরই বাসিন্দা।

ওয়াকার আরও জানিয়েছেন, জরিমানার ১০০ সুইস ফ্রাঁ (প্রায় ১১০ মার্কিন ডলার) দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন ওই নারী। ফলে এই মামলাটি এখন প্রাদেশিক গভর্নরের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।

২০২১ সালের গণভোটে ৫১.২ শতাংশ ভোটার বোরকা নিষিদ্ধের পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন। মূলত ‘উগ্র ইসলাম’ রোধের উদ্দেশ্যে দেশটির ডানপন্থী সুইস পিপলস পার্টি এই আইনের সপক্ষে প্রচারণা চালিয়েছিল। পরে এটি জননিরাপত্তা উন্নয়নের একটি উপায় হিসেবে পাস হয় এবং বিক্ষোভ ও খেলাধুলার ইভেন্টে মুখোশ পরার ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। যারা এই আইন লঙ্ঘন করবেন, তাদের প্রথমবার ১০০ ফ্রাঁ এবং আদালতে আপিল করা হলে ১ হাজার ফ্রাঁ পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।

জানা গেছে, আইনটি পাস হওয়ার আগেই সুইজারল্যান্ডের অর্ধেকের বেশি ক্যান্টন (প্রদেশ) জনসমক্ষে মুখ ঢাকার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। তবে জাতীয়ভাবে আইনটি পাস হলে তা আরও বেশি কার্যকর হয়ে ওঠে।

এই আইন নিয়ে বিতর্কও রয়েছে। সমালোচকেরা বলছেন, এটি সুইজারল্যান্ডের ৪ লাখ মুসলিম নাগরিকের ওপর অন্যায়ভাবে প্রভাব ফেলছে, যদিও তাদের মধ্যে খুব কমসংখ্যকই বোরকা বা নিকাব পরেন। সুইস সরকারও শুরুতে এই আইনের বিরোধিতা করেছিল। কারণ এটি পর্যটন শিল্পের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, এমন আশঙ্কা করা হয়েছিল। দেশটির মুসলিম সংগঠনগুলোও এই আইনটির নিন্দা জানিয়েছে।

বোরকা ও নিকাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রথম চালু হয় ফ্রান্সে ২০১১ সালে। এরপর অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, বুলগেরিয়া, ডেনমার্ক, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, জার্মানি এবং স্পেনসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ধর্মীয় এই পোশাকের ওপর আংশিক বা সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে।

সূত্রঃ আরটি

এম.কে
২৬ মার্চ ২০২৫

আরো পড়ুন

ডাক শুনে এআই বলে দেবে মুরগি উত্তেজিত, ক্ষুধার্ত বা ভীত কিনা!

ইটালিতে স্বাস্থ্যসেবা: বছরে দুই হাজার ইউরো গুণতে হবে বিদেশিদের

শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত জাতিসংঘের মহাসচিব