ব্রিটেন ও ফ্রান্সের মধ্যে শরণার্থী বিনিময় চুক্তির ঘোষণার একদিন পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপার জানিয়েছেন, ইউরোপীয় কমিশন এই উদ্যোগে অনুমোদন দেবে বলে ব্রিটেন আত্মবিশ্বাসী। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসার আগেই ফ্রান্স জানিয়ে দিয়েছে, এটি কার্যকর করতে হলে আইনগত অনুমোদন প্রয়োজন হবে।
চুক্তি অনুযায়ী, ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে ছোট নৌকায় ব্রিটেনে প্রবেশ করা শরণার্থীদের একটি অংশকে ফ্রান্সে ফিরিয়ে দেওয়া হবে, এবং এর বিনিময়ে ফ্রান্স থেকে কিছু শরণার্থীকে ব্রিটেনে আশ্রয় দেওয়া হবে—যাদের পরিবারের সদস্যরা ইতিমধ্যে ব্রিটেনে আছেন।
এই পাইলট প্রকল্পের কথা বৃহস্পতিবার যৌথভাবে ঘোষণা করেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার এবং ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। যদিও এটি একটি বড় কূটনৈতিক অগ্রগতি হিসেবে দেখানো হচ্ছে, প্রকৃতপক্ষে এখনো জানা যায়নি কতজনকে ফিরিয়ে দেওয়া হবে বা এই প্রকল্প কবে থেকে চালু হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কুপার বলেন, এই পরিকল্পনা ইউরোপীয় দেশগুলোর উদ্বেগ মাথায় রেখে সাজানো হয়েছে এবং কমিশনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগের মাধ্যমে বিষয়টি এগিয়েছে। তবে স্পেন, ইতালি, গ্রিস, মাল্টা ও সাইপ্রাসের মত সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রতিক্রিয়া কেমন হবে, তা এখনো পরিষ্কার নয়।
এই পাইলট প্রকল্পের আওতায় ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করবে কাদের ফিরিয়ে দেওয়া হবে, এবং এই শরণার্থীদের ফ্রান্সের উত্তরের উপকূল থেকে দূরে অন্য অঞ্চলে পাঠানো হবে। অপরদিকে, যেসব শরণার্থীর ব্রিটেনে পারিবারিক যোগসূত্র রয়েছে, তাদের ব্রিটেনে আনার কথা বলা হয়েছে।
সরকার বলছে, এই উদ্যোগ চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার ঝুঁকিপূর্ণ চেষ্টা নিরুৎসাহিত করবে। কিন্তু চুক্তির আওতায় শুরুর দিকে মাত্র ৫০ জন শরণার্থীকেই সপ্তাহে ফিরিয়ে দেওয়া হবে—যা মোট আগত শরণার্থীর মাত্র ৬ শতাংশ। ফলে সমালোচকরা বলছেন, এই পরিকল্পনায় বাস্তবিক কোনো প্রভাব পড়বে না।
কনজারভেটিভ পার্টির ছায়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস ফিলিপ বলেন, “এই সংখ্যাগুলো খুবই নগণ্য। এতে করে ৯৪ শতাংশ অবৈধ অভিবাসনকারীকেই ব্রিটেনে থাকতে দেওয়া হবে। ফলে এটা কোনো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নয়।”
লেবার সরকার এই চুক্তিকে ব্রেক্সিট-পরবর্তী নতুন কূটনৈতিক যুগের প্রতীক হিসেবে তুলে ধরতে চাইলেও, বাস্তবায়নের আগে এখনো অনেক দিকেই রয়েছে অনিশ্চয়তা। ইউরোপীয় ইউনিয়নের চূড়ান্ত অনুমোদনের দিকেই এখন নজর সবার।
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
১১ জুলাই ২০২৫