ব্রেক্সিট-পরবর্তী বাণিজ্য চুক্তিতে একমত হয়েছে যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। বাণিজ্য আলোচনা নিয়ে কয়েক মাসের বিরোধ ও অচলাবস্থার পর দু’পক্ষ চুক্তিতে পৌঁছল।
বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রধান উরসুলা ভন ডার লিয়েনের মধ্যকার বৈঠকে চূড়ান্ত চুক্তিতে পৌঁছানোর সিদ্ধান্ত হয়।
ডাউনিং স্ট্রিটের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘আমরা ব্রেক্সিট সম্পন্ন করেছি এবং যেসব সুযোগ আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে, তার পুরো সুবিধা তুলে নিতে পারব।’
টুইট বার্তায় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে।
The deal is done. pic.twitter.com/zzhvxOSeWz
— Boris Johnson (@BorisJohnson) December 24, 2020
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভনদার লিয়েন বলেন, অবশেষে আমরা একটি চুক্তিতে পৌঁছেছি।
চুক্তিতে পৌঁছানোর পথ দীর্ঘ ও কঠিন ছিল বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, চূড়ান্তভাবে আমরা একটা ভালো চুক্তিতে পৌঁছাতে পেরেছি। একক বাজার সুষ্ঠু হবে এবং থাকবে।
বাণিজ্য আলোচকদলের রাতভর আলোচনার পর চুক্তির বিস্তারিত খুঁটিনাটি বিষয়গুলো চূড়ান্ত হয়েছে। চুক্তির বিস্তারিত বিবরণ এখনও জনসম্মুখে প্রকাশ করা হয়নি।
লন্ডন এবং ব্রাসেলসে চুক্তিটি আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন করার জন্য দু’পক্ষের হাতে ১ সপ্তাহ সময় আছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
যুক্তরাজ্য গত ৩১ জানুয়ারিতে ইইউ ছাড়লেও ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ইইউ এর বাণিজ্য নীতির আওতাতেই থাকছে। তাই এ সময়ের মধ্যেই দু’পক্ষকে বাণিজ্য চুক্তিটি সই করে নিতে হবে।
২০১৬ সালের গণভোটে ৫২ শতাংশ ব্রিটিশ নাগরিক ইইউ ত্যাগের পক্ষে মত দেন। বিরোধিতা করেন ৪২ শতাংশ। এরপরই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন পদত্যাগ করেন।
২০১৭ সালের ২৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন থেরেসা মে। আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া শুরু করেন। ২০১৯ সালের ২৯ মার্চ ব্রেক্সিট সম্পন্ন করার তারিখ নির্ধারিত ছিল। ২০১৭ সালের জুনে ব্রিটেনে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। যার কারণে ব্রেক্সিট কার্যক্রম পিছিয়ে পড়ে।
নির্বাচনের ফলাফলে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টি সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায়। সর্বাধিক আসন পেলেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায় পরবর্তী সরকার গঠনের পর ব্রেক্সিট নিয়ে মহাসাগরে পড়ে থেরেসা মে সরকার। পার্লামেন্টে মতানৈক্যের কারণে ব্রেক্সিট কার্যকরের জন্য আর্টিকেল ৫০ ব্যবহার করে তিনদফা সময় বাড়ায় ব্রিটেন।
সবশেষ ব্রেক্সিট অসম্ভব জানিয়েছে ক্ষমতা ছাড়েন থেরেসা মে। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে আবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ব্রিটেনে। সংখ্যাগরিষ্ঠতা ফিরে পায় কনজারভেটিভ পার্টি। প্রধানমন্ত্রী হন ব্রেক্সিটপন্থী নেতা সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন।
সব বাধা কাটিয়ে অবশেষে ব্রেক্সিট চুক্তিতে সম্মত হয়েছে ব্রিটেন ও ইইউ। এ চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে।
২৪ ডিসেম্বর ২০২০
এনএইচ