কানাডা ৪১ কূটনীতিককে প্রত্যাহার করার পর ভারতকে ১৯৬১ সালের ভিয়েনা কনভেনশন স্মরণ করিয়ে দিল যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। দেশ দুটি বলছে, কূটনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে দিল্লিকে কনভেনশনের নিয়মগুলো মেনে চলা উচিত।
গত জুনে কানাডার ভ্যাঙ্কুভারে শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা হারদীপ সিং নিজারের হত্যার ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতি হওয়ার মধ্যে এটি সর্বশেষ খবর। গত মাসে দিল্লিতে জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের পর কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো অভিযোগ তোলেন, ওই হত্যাকাণ্ডে নয়াদিল্লির হাত রয়েছে।
কানাডার নাগরিক হারদীপ ভারত সরকারের নথিতে একজন তালিকাযুক্ত সন্ত্রাসী।
ভারতে কূটনৈতিক উপস্থিতি কমাতে জোর না করা ও এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তে অটোয়াকে সহযোগিতা করার জন্য নয়াদিল্লির প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দেশ দুটি।
অবশ্য নিজার হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে মন্তব্য করেছে ভারত। কূটনীতিক প্রত্যাহার করতে বলে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগও প্রত্যাখ্যান করেছে। বরং অটোয়ায় নিজেদের কূটনীতিকদের সংখ্যার সঙ্গে সমতা আনা হয়েছে।
ভারত সরকার এক বিবৃতিতে অভিযোগ তুলেছে, আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ক্রমাগত হস্তক্ষেপের কারণে নয়াদিল্লি ও অটোয়াতে পারস্পরিক কূটনৈতিক উপস্থিতিতে সমতা নিশ্চিত করা হয়েছে।
দিল্লির দাবির মুখে কানাডার কূটনীতিক সরিয়ে নেয়ায় ‘উদ্বিগ্ন’ বলে জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার। তিনি বলেন, মতভেদ সমাধানের জন্য ভারতের মাটিতে কূটনীতিকদের থাকা প্রয়োজন। ভারত কূটনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ১৯৬১ সালের ভিয়েনা কনভেনশনের বাধ্যবাধকতা মেনে চলবে বলে আমরা আশা করি।
অন্যদিকে ব্রিটেনের পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র জানান, ভারত সরকারের সিদ্ধান্তের সঙ্গে তারা একমত নন। ভিয়েনা কনভেনশনের উদ্ধৃতি দিয়ে তারা বলেন, কূটনীতিকদের নিরাপত্তা প্রদান করে এমন সুযোগ-সুবিধা একতরফাভাবে অপসারণ করা ভিয়েনা কনভেনশনের নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
এর আগে গতকাল ২০ অক্টোবরের মধ্যে ৪১ জন কূটনীতিককে সরিয়ে নেয়ার জন্য সময় বেঁধে দিয়েছিল ভারত। সময়সীমার আগেরদিনই তারা দেশটি ছেড়ে যায়। এরপর কানাডা জানায়, জনবল সংকটের কারণে বেশ কয়েকটি ভারতীয় শহরে কনস্যুলেটের কার্যক্রম অস্থায়ীভাবে স্থগিত থাকবে। এ কারণে ভিসা প্রক্রিয়াকরণে দেরি হবে। এর কয়েক ঘণ্টা পরই ভিয়েনা কনভেনশনকে টেনে এনে প্রতিক্রিয়া জানায় ওয়াশিংটন ও লন্ডন।
এম.কে
২১ অক্টোবর ২০২৩