যুক্তরাজ্যের নাগরিক এক কিশোরীকে তার নিজের মায়ের মাধ্যমে অপহরণ করে সোমালিয়ায় নিয়ে গিয়ে একটি ইসলামিক ‘রি-এডুকেশন’ বা পুনঃশিক্ষা ডিটেনশন সেন্টারে ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার করা হয়েছে বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
ভুক্তভোগী আসমা হাসান আব্দুল্লাহি (১৮) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টিকটকে প্রকাশিত ভিডিও ও ছবিতে তার ওপর চালানো নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরেছেন। সেখানে দেখা যায়, তাকে মারধর করা হয়েছে, পর্যাপ্ত খাবার দেওয়া হয়নি এবং পায়ে শিকল পরিয়ে মেঝেতে বেঁধে রাখা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, তাকে সেখানে পাঠানো হয় এই অজুহাতে যে তিনি ‘অতিরিক্ত পাশ্চাত্য সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত’ হয়ে পড়েছিলেন।
আসমা জানান, তিনি একাধিকবার যুক্তরাজ্যে ফেরত নেওয়ার জন্য আকুতি জানিয়েছেন এবং সংশ্লিষ্ট ডিটেনশন সেন্টারসহ আগের দুটি কেন্দ্র থেকে পালানোর চেষ্টা করেন। সর্বশেষ পালানোর চেষ্টা করেন গত সপ্তাহে। তবে সোমালিয়ার পুলিশ তাকে উদ্ধার না করে তার মা ও সৎ বাবার কাছেই ফিরিয়ে দেয়, যদিও তিনি বারবার অনুরোধ করেছিলেন তাকে যেন রাজধানী মোগাদিশুতে অবস্থিত ব্রিটিশ দূতাবাসে নেওয়া হয়।
আসমার প্রকাশিত ছবিগুলোতে দেখা গেছে, তার একটি হাত ভাঙা, শরীরজুড়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে এবং পায়ে শিকল বাঁধা। পর্যাপ্ত খাবার না পাওয়ায় তার ওজন উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে। শাস্তির অংশ হিসেবে তার মাথার চুল কেটে ফেলা হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেছেন।
যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত তার পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, আসমার জন্ম ইংল্যান্ডের কোভেন্ট্রিতে এবং তিনি এর আগে কখনো সোমালিয়ায় যাননি। পরিবারের দাবি, তার মা সাগাল মাক্সামুদ রোবলে ছুটির ভ্রমণের কথা বলে প্রতারণার মাধ্যমে তাকে পূর্ব আফ্রিকার দেশ সোমালিয়ায় নিয়ে যান।
ঘটনাটি সামনে আসার পর যুক্তরাজ্যে মানবাধিকারকর্মী ও সংশ্লিষ্ট মহলে তীব্র উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের লঙ্ঘন, জোরপূর্বক আটক ও পারিবারিক অপহরণের অভিযোগে বিষয়টি তদন্তের দাবি উঠেছে। একই সঙ্গে যুক্তরাজ্য সরকার ও সংশ্লিষ্ট কূটনৈতিক কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপও জোরালোভাবে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
সূত্রঃ স্যোশাল মিডিয়া
এম.কে

