যুক্তরাজ্যের অর্থনৈতিক দুরবস্থার সাথে সাথে অপরাধপ্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে বৃটিশ গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়। বর্তমান সরকার এসাইলাম প্রার্থীদের নিয়ে যেমন সমস্যা মোকাবেলা করছে ঠিক একইভাবে দেশের ভিতরে অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়া নিয়েও শংকিত বলে খবরে জানা গেছে।
যুক্তরাজ্য প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেন,“ আমি জানুয়ারিতে একটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম যে আমরা অসামাজিক আচরণকে বন্ধ করার জন্য সর্বোচ্চ কঠোর হব। কিছু মানুষ দীর্ঘকাল ধরে অসামাজিক কার্যকলাপের মাধ্যমে পরিবেশ নষ্ট করে চলেছে। এগুলি ছোট অপরাধ নয়। তারা মানুষের দৈনন্দিন জীবনকে ব্যাহত করে চলছে। তারা সুরক্ষা এবং সম্প্রদায়ের বোধশক্তিকে ক্ষয় করে যাচ্ছে।”
যুক্তরাজ্য সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কনজারভেটিভ সরকার এইসব আচরণ বন্ধের জন্য পরিকল্পনা হাতে নিতে যাচ্ছে।
একটি বেসরকারি সংস্থার প্রতিবেদনে জানা যায়, কনজারভেটিভ সরকার সামাজিক অপরাধীদের জন্য কঠোর শাস্তি আনার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। যারা ভাঙচুর বা গ্রাফিটিংয়ের মতো অপরাধের সাথে জড়িত তারা অপরাধী প্রমাণ হবার ৪৮ ঘন্টার ভিতরে তাদের নিজেদের সৃষ্ট সমস্যা নিজ হাতে পরিষ্কার করতে হবে বলে এই প্রতিবেদনে নিশ্চিত করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ক্ষতিগ্রস্থ সমাজ বা ব্যক্তি স্থানীয় পুলিশ এবং অপরাধ কমিশনারদের সাথে নিয়ে সামাজিক অপরাধগুলো মোকাবেলা করতে পারবে। পাশাপাশি কি ধরণের শাস্তি অপরাধীদের দেওয়া উচিত তা নিয়ে নিজেদের মতামত জানাতে পারবে।
সরকারের একজন মুখপাত্র বলেন, আমরা নাইট্রাস অক্সাইড নিষিদ্ধ করেছি। আমাদের পার্কগুলিতে যাতে কেউ আবর্জনা ফেলতে না পারে সেই ব্যবস্থাও করা হবে। স্থানীয় পার্ককে ভীতিমুক্ত করতে হবে যাতে আশেপাশের মানুষ সহজভাবে পার্কে এসে সময় কাটাতে সক্ষম হয়। তাছাড়া যারা অবৈধ ড্রাগ ব্যবহার করে তাদের ক্র্যাকডাউন করতে হবে। পুলিশকে এখন ড্রাগ টেস্ট পরীক্ষা করতে সক্ষম করে তোলা হবে। যারা এক্সট্যাসি এবং মেথামফেটামিনের মতো অবৈধ ড্রাগ গ্রহণ করে তাদের দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। সমাজকে মহিলাদের জন্য নিরাপদ করতে হবে।
ঋষি সুনাক বলেন, “আমরা লিটার, গ্রাফিটি এবং ফ্লাই-টিপিংয়ের জন্য আরও শক্ত জরিমানা প্রবর্তন করতে যাচ্ছি। আমরা জঞ্জাল ও গ্রাফিটিংয়ের জন্য জরিমানা ১৫০ পাউন্ড থেকে ৫০০ পাউন্ড এবং ফ্লাই-টিপিংয়ের জন্য জরিমানা ৪০০ পাউন্ড হতে ১০০০ পাউন্ড বৃদ্ধি করবো।
আমরা কাউন্সিলগুলিকেও আহ্বান করবো যাতে জরিমানা আদায়ের পর তারা এই জরিমানার টাকা ব্যবহার করে কাউন্সিলের ভিতরের এলাকা সুন্দর করার কাজে ব্যয় করে।”
বৃটিশ গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, যেইসব ভাড়াটেরা ভাড়াটে বাড়িতে অসামাজিক কার্যকলাপ চালায় তাদের উচ্ছেদও আরো সহজ করা হবে। অনেক সময় দেখা যায় প্রাইভেট ভাড়াটেদের নোটিশ দেওয়ার পরেও তারা বাড়ি ছাড়তে আপত্তি জানায়। এইসব বিষয়ে আর বরদাস্ত করা হবে না। অসামাজিক ভাড়াটেদের দ্রুত উচ্ছেদ করতে এবং সমাজে ক্ষতিকারক ক্রিয়াকলাপ বন্ধ করতে কাউন্সিলকে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হবে।
কনজারভেটিভ সরকারের একজন মুখপাত্র বলেন, সরকার এন্টি স্যোশাল বিহেভিয়ার দ্রুততার সাথে মোকাবেলা করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ও বদ্ধপরিকর। যাতে সমাজের ভালো বাসিন্দাদের আত্মবিশ্বাস পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয় এবং দ্রুত দৃশ্যমানভাবে শাস্তি দেওয়া যায়।