যুক্তরাজ্যের বাজার দখল করে নিতে খুব শীঘ্রই আসছে ল্যাবে তৈরি বিভিন্ন ধরনের মাংসজাত পণ্য। ল্যাবে ইতিমধ্যে স্টেক, গরুর মাংস, মুরগীর মাংস প্রস্তুতের জন্য কার্যপ্রণালী শুরু হয়েছে। যুক্তরাজ্যে আগামী দুই বছরের মধ্যে ফুড ইন্ড্রাস্ট্রির জন্য এক ব্যাপক পরিবর্তনে কাজ করে যাচ্ছে বলে তথ্যমতে জানা যায়।
ফুড স্ট্যান্ডার্ডস এজেন্সি (এফএসএ) খাবারের একটি দক্ষ সুরক্ষা মূল্যায়ন প্রক্রিয়া বিকাশের জন্য প্রায় ১.৬ মিলিয়ন পাউন্ড সরকারী তহবিল প্রদান করে। এফএসএ’র মতে যুক্তরাজ্য একটি আকর্ষণীয় বাজার যেখানে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে নিরামিষাশী এবং আমিষভোজনকারী ক্রেতা। অন্যান্য অনেক ইউরোপীয় দেশের তুলনায় নতুন খাবারের প্রতি আগ্রহের দিকে যুক্তরাজ্য কয়েক ধাপ এগিয়ে রয়েছে। যার কারণে বিভিন্ন স্টার্টআপ সংস্থাগুলির পিছনে যুক্তরাজ্য সরকার ব্যয় করতে বৃহত আর্থিক ফান্ড রিলিজ করতে প্রস্তুতি নিয়েছে।
ল্যাবে চাষ করা মাংস ক্রমবর্ধমান কোষ দ্বারা উৎপাদিত হয় এবং এই প্রক্রিয়ায় প্রাণী হত্যার প্রয়োজন হয় না। ২০২০ সালে সিঙ্গাপুরে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ল্যাবে মাংসের চাষ অনুমোদিত হয়েছিল বলে জানা যায়। বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যে শুয়োরের মাংস এবং বিভিন্ন প্রকার মাছের ল্যাব উৎপাদন শুরু করেছে।
উল্লেখ্য যে, প্রাণিসম্পদ লালনপালনের কারণে জলবায়ু উত্তপ্ত হয়ে পড়ছে যা প্রকৃতি ধ্বংসের একটি প্রধান কারণ। ল্যাবে চাষ করা মাংস উৎপাদনের জন্য অনেক কম জমি এবং পানির প্রয়োজন হয়।
এফএসএর প্রধান বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা অধ্যাপক রবিন মে জানিয়েছেন, চাষ করা মাংস ও পশু জবাইয়ের মাংসে একই প্রকৃতির কোষ থাকে। এটি নিশ্চিত যে ল্যাবে উৎপাদিত মাংস মানুষের ব্যবহারের জন্য নিরাপদ। ল্যাবে জন্মানো কোষ একটি তরল পদার্থের উপর জন্মে। পরবর্তীতে তা পেশী, রক্ত এবং ফ্যাট টিস্যুতে বিকশিত হয়।
গুড ফুড ইনস্টিটিউট ইউরোপের লিনাস পার্ডো বলেন, “ যুক্তরাজ্যের নতুন সরকার সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ল্যাবে মাংসের চাষের উপর জোর দিয়েছে। এইজন্য তারা শক্তিশালী বিনিয়োগ ও বাজার তৈরিতেও মনোনিবেশ করেছে। তবে চাষ করা মাংসের সম্ভাবনা পুরোপুরি উপলব্ধি করতে সরকারের অবশ্যই এফএসএর বাজেটকে দীর্ঘমেয়াদী করতে হবে।”
উল্লেখ্য যে, ইতালি এবং যুক্তরাষ্ট্রের দুই রাজ্যে ল্যাবে চাষ করা মাংস বিক্রি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। গত মে মাসে, ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিসান্টিস জানিয়েছিলেন, ফ্লোরিডা ল্যাবে জন্মানো মাংস খেতে বিশ্বকে বাধ্য করার বিশ্ব অভিজাতদের যে পরিকল্পনা তার বিরুদ্ধে লড়াই করে যাবে।
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
০৮ অক্টোবর ২০২৪