TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

যুক্তরাজ্যে ডিউটি চলাকালীন যৌনকর্মী নিয়ে ফূর্তিঃ মেট পুলিশে নতুন কেলেঙ্কারি

মেট্রোপলিটন পুলিশের সাবেক কর্মকর্তা ইমরান প্যাটেল দায়িত্ব পালনকালে যৌনকর্মী ব্যবহার ও প্রাপ্তবয়স্ক ওয়েবসাইটে প্রবেশের অভিযোগে তদন্তের মুখে পড়েছেন। ব্রিটেনের পুলিশ আচরণ তদারকি সংস্থা ইন্ডিপেন্ডেন্ট অফিস ফর পুলিশ কন্ডাক্ট (IOPC) এই তদন্ত পরিচালনা করছে। অভিযোগ ওঠার পর প্যাটেল গত বছর জুলাইয়ে বাহিনী থেকে পদত্যাগ করেন।
তদন্তে জানা গেছে, ২০২২ সালের মে মাসে ডিউটির সময় প্যাটেল যৌনকর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। সেই সময়ই লন্ডনের মেয়র সাদিক খানের নির্দেশে সাবেক সিভিল সার্ভেন্ট ব্যারোনেস লুইস কেসি মেট পুলিশের সংস্কৃতি ও আচরণবিধি নিয়ে স্বাধীন তদন্ত করছিলেন। ওই তদন্তের মূল উদ্দেশ্য ছিল নারী বিদ্বেষ ও যৌন সহিংসতার অভিযোগ যাচাই করা, যা ২০২১ সালে সারা এভারার্ড হত্যাকাণ্ডের পর ব্যাপক আলোচনায় আসে।
পুলিশ কর্মকর্তা ওয়েন কুজেন্সের হাতে সারা এভারার্ডের অপহরণ, ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় পুরো দেশ ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। এই ঘটনার পর থেকেই মেট পুলিশের ভেতরে লুকিয়ে থাকা নারীবিদ্বেষী সংস্কৃতি নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। কেসি প্রতিবেদনে ২০২৩ সালে উপসংহারে বলেন, “মেট পুলিশ প্রাতিষ্ঠানিকভাবে নারীবিদ্বেষী। নারী সদস্যরা এখনো সমান মর্যাদা পান না; নতুন নারী সদস্যদের পদত্যাগের হার গড়ের চেয়ে চার গুণ বেশি, এবং ১২ শতাংশ নারী সরাসরি যৌন হয়রানি বা হামলার শিকার হয়েছেন।”
এর আগেও মেট পুলিশের ভেতরে যৌন অসদাচরণ ও নারীবিদ্বেষের নজির পাওয়া গেছে। IOPC–এর পূর্ববর্তী তদন্তে দেখা যায়, লন্ডনের চারিং ক্রস থানার কর্মকর্তারা একে অপরের সঙ্গে বার্তায় ধর্ষণ নিয়ে রসিকতা করেছেন এবং যৌনকর্মীদের নিয়ে আলোচনা করেছেন। সম্প্রতি বিবিসি প্যানোরামা–এর গোপন অনুসন্ধানেও একই ধরনের আচরণের প্রমাণ মেলে—এক সার্জেন্ট সহকর্মীদের সামনে নিজের যৌন জীবনের অশ্লীল বিবরণ দেন, নারী সহকর্মীরা আপত্তি জানালেও তিনি থামেননি।
ইমরান প্যাটেলের বিরুদ্ধে শুধু যৌন অসদাচরণ নয়, আরও একাধিক অভিযোগ রয়েছে। ২০২১ সালের আগস্টে তিনি এক সাধারণ নাগরিকের কাছ থেকে ড্রাইভিং লাইসেন্স ও অর্থ আত্মসাৎ করেছিলেন বলে অভিযোগ। এছাড়া ২০২২ সালের মার্চে তার বাসা থেকে একটি বুলেটপ্রুফ ভেস্ট উদ্ধার করা হয়, যার কোনো বৈধ কারণ বা অনুমতি তার কাছে ছিল না।
IOPC জানায়, তাকে চুরির অভিযোগে অপরাধমূলকভাবে তদন্ত করা হয়েছিল, তবে ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে সিদ্ধান্ত হয় যে বিষয়টি ক্রাউন প্রসিকিউশন সার্ভিসে পাঠানো হবে না। তবুও তার বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গজনিত পূর্ণাঙ্গ অভিযোগ শুনানি (misconduct hearing) আগামী জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে।
মেট পুলিশ বর্তমানে অভ্যন্তরীণ সংস্কার প্রক্রিয়ায় রয়েছে, তবে ধারাবাহিক যৌন অসদাচরণ, দুর্নীতি ও নারী বিদ্বেষের ঘটনাগুলো আবারও প্রতিষ্ঠানটির ভাবমূর্তি ও জনআস্থাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে।
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে

আরো পড়ুন

হিথ্রো বিমানবন্দরে ইউরেনিয়াম পরিবহনের দায়ে গ্রেফতার ১

নিউজ ডেস্ক

আউটসোর্সিং-এর কারণে চাকরি ঝুঁকিতে ব্রিটিশরা!

অনলাইন ডেস্ক

যুক্তরাজ্যে ছোট নৌকায় করে অভিবাসী আসা কমেছে ৩৬ শতাংশ