গ্রীষ্মকালীন ছুটি শেষে সংসদ অধিবেশন শুরু হতেই প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সরকার সামনে পাচ্ছে নানা চ্যালেঞ্জ। একদিকে বাজেট ঘাটতি ও অর্থনৈতিক অস্থিরতা, অন্যদিকে অভিবাসন সংকট এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্ভাব্য সফর—সব মিলিয়ে সরকারের জন্য এটি এক অগ্নিপরীক্ষার সময়।
সাম্প্রতিক ইউগভ জরিপে লেবারের জনপ্রিয়তা নেমেছে ২০ শতাংশে, যা গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। রিফর্ম ইউকের চেয়ে আট পয়েন্ট পিছিয়ে পড়ায় সরকারের ভেতরে অস্থিরতা বেড়েছে। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে গিয়ে কর বৃদ্ধি সীমিত রাখা হলেও বাজেট ঘাটতি ৪০ বিলিয়ন পাউন্ড ছাড়ানোর পথে। ইনকাম ট্যাক্স, ন্যাশনাল ইনস্যুরেন্স বা ভ্যাট বাড়ানোর সুযোগ নেই বলে উত্তরাধিকার কর ও ব্যয়বহুল বাড়ির ওপর মূলধনী মুনাফা কর বৃদ্ধির চিন্তা করছে কোষাগার।
অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেও চাপ সামলাতে হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীকে। বেনিফিট কাটছাঁট নিয়ে সংসদীয় বিদ্রোহের মুখে নীতি পরিবর্তন করতে হয় সরকারকে। একই সঙ্গে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি মন্ত্রিসভা থেকেই ওঠে। এসব সংকট সামলে স্টারমার নতুন অর্থনৈতিক উপদেষ্টা নিয়োগ দিয়েছেন এবং জুনিয়র মন্ত্রীদের পুনর্বিন্যাসের পরিকল্পনা করছেন।
কূটনৈতিক ক্ষেত্রেও ঝুঁকি বাড়ছে। ট্রাম্পের সফর নিয়ে ইতিমধ্যেই শঙ্কা তৈরি হয়েছে। ওয়াশিংটনে এবং স্কটল্যান্ডে বৈঠকের সময় ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন, চাইলে তিনি যুক্তরাজ্যের অর্থনৈতিক চুক্তি পরিবর্তন করতে পারেন। গাজা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের অবস্থান ভিন্ন; স্টারমার যেখানে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, সেখানে ট্রাম্প প্রকাশ্যে ইসরায়েলকে সমর্থন দিচ্ছেন। একই সঙ্গে ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তার প্রশ্নেও দুই দেশের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে।
এদিকে অভিবাসন সংকট সরকারের জন্য সবচেয়ে বড় মাথাব্যথা হয়ে উঠেছে। ছোট নৌকায় সীমান্ত অতিক্রমের ঘটনা বাড়ছে, আশ্রয়প্রার্থীদের হোটেল ঘিরে বিক্ষোভও তীব্র হচ্ছে। ধাপে ধাপে প্রক্রিয়া দ্রুত করা, ফরাসিদের সঙ্গে প্রত্যাবর্তন চুক্তি এবং ইসিএইচআর অনুচ্ছেদ ৮ পর্যালোচনা—এসব উদ্যোগ জনগণকে আশ্বস্ত করতে ব্যর্থ হয়েছে। রিফর্ম ইউকেই বরং এ ইস্যুতে সমর্থন বাড়াচ্ছে। আগামী বছরে স্থানীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে এটি লেবার সরকারের জন্য প্রথম বড় রাজনৈতিক পরীক্ষা হতে যাচ্ছে।
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫