6 C
London
April 23, 2024
TV3 BANGLA
প্রবাসে বাংলাদেশশীর্ষ খবর

যুক্তরাষ্ট্রে একই পরিবারের ৬ বাংলাদেশির মরদেহ, যা লেখা ছিল সুইসাড নোটে

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের ডালাস শহরের উপকণ্ঠের একটি বাড়ি থেকে একই পরিবারের ৬ বাংলাদেশির মরদেহ উদ্ধারের পর একের এক বেরিয়ে আসছে রহস্য। পুলিশ জানিয়েছে, দুই সহোদর মিলে নানি, ভাই ও বাবা-মাকে খুন করেন এবং তারপর নিজেরা আত্মহত্যা করেন।

 

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ডালাস মর্নিং নিউজকে পুলিশ সার্জেন্ট জন ফেলতি জানান, ‘ধারণা করা হচ্ছে- ওই পরিবারের দুই ভাই আত্মহত্যা করার ব্যাপারে একমত হন এবং এর আগে তাদের পুরো পরিবারকে সঙ্গে করে নিয়ে যাওয়ার (হত্যার) সিদ্ধান্ত নেন।’

 

নিহতদের পরিচয় প্রকাশ করেনি পুলিশ। তবে জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে দু’জন টিনএজ বয়সী ভাই, তাদের এক বোন, তাদের বাবা-মা এবং দাদি রয়েছেন। সবচেয়ে কমবয়সী নিহতের বয়স ১৯ বছর।

 

পুলিশ জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের আগে ফারহান তৌহিদ ইনস্টাগ্রামে একটি দীর্ঘ ‘সুইসাইড নোট’ পোস্ট করেন। তাতে এ হত্যাকাণ্ডের পেছনের রহস্যও উন্মোচন হয়।

 

ফারহান সেই সুইসাইড নোটের শিরোনাম দিয়েছে , ‘পরিবারের সবাইকে হত্যার পর আমি আত্মহত্যা করলাম।’

 

পাঠকদের জন্য সেই দীর্ঘ ‘সুইসাইড নোটের’ কিছু অংশ তুলে ধরা হলো-

 

‘যদি মারা যাই, তাহলে হয়তো আমি কিছুটা নজর কাড়ব। সারাজীবন যে চারটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস মোকাবিলা করে এসেছি, আমি সেগুলো প্রকাশ করতে যাচ্ছি। কে জানে, হয়তো ভালো কোনো ফল আসতে পারে। যারা জানেন না, তাদের উদ্দেশে বলছি-  আমি নবম শ্রেণি (২০১৬) থেকে বিষণ্ণতায় ভুগতাম। প্রথমবার নিজের দেহ নিজের কাটার কথা মনে পড়ছে। এটা ছিল ২০১৭ সালের ২২ আগস্ট। আমি এই কাজটি করেছিলাম শিল্পকর্মের কাচি দিয়ে। তবে কাচি এতটাই ভোঁতা ছিল যে, এটা হাত কাটার চেয়ে চামড়ায় ঘষা খাচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত আমার চামড়া কাটল। কয়েকটি কাটা দাগের পর যন্ত্রণা কমা শুরু হলো।

 

এই অনুভূতির প্রতি আসক্ত হতে বেশি সময় লাগল না। দুর্ভাগ্যবশত ছোটদের জন্য তৈরি করা কাচিগুলো মাংস কাটার জন্য যথেষ্ট ছিল না। তাই, আমাকে ছুরির দিকে ঝুঁকতে হলো। রান্নাঘর থেকে এটা নেওয়া ছিল অনেক সহজ। এগুলো ভোঁতা ছিল, কিন্তু অনেক ভালো কাজ করত।

 

প্রথম দিকে আমি প্রত্যেক সপ্তাহ শেষে কাটতাম। কিন্তু স্কুল যাওয়ার পর আমি এটি বাড়িয়ে দিলাম। প্রত্যেক সপ্তাহে, প্রত্যেক দিন এবং শেষ পর্যন্ত এক দিনে একাধিকবার কাটতাম।

 

আমি যখন স্কুলে ছিলাম, তখন শরীর কাটতে মন চাইত। বাথরুমে যখন আমি আমার শরীর জখম করতে ব্যস্ত, তখন ক্যালকুলাস কুইজে বাদ পড়েছি, আমি গুনেও শেষ করতে পারব না।

 

পরিস্থিতি আরও খারাপ হলো, যখন আমার তিন ভালো বন্ধু আমাকে ছেড়ে গেল। তারা আমাকে এর আগে সাহায্যের চেষ্টা করেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বুঝতে পেরেছে, বিষণ্ণ একজনকে বোঝানো অনেক কষ্টসাধ্য। প্রথমে আমি রাগ করেছিলাম। কিন্তু এর বিপরীতে তাদের কী করা উচিত ছিল?

 

আমার প্রথম পয়েন্ট ছিল: সাহায্য পাওয়া। সবাই বলত, ‘তুমি আমার সঙ্গে কথা বলতে পার’ এবং তারা তাদের গল্পে অপ্রয়োজনীয় মানসিক স্বাস্থ্যের লিংকগুলো পোস্ট করত। কিন্তু আপনি যখন আসলে কোনো বিষণ্ণ ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগে থাকবেন, তখন এটা ঠিক করা কতটা অসম্ভব, তা বুঝতে পারবেন। আমি কতটা বিষণ্ণ, তা বলে কখনোই কারও কাছ থেকে উপকার পাইনি। শেষ পর্যন্ত তারা আমাকে ছেড়ে চলে গেছে। একমাত্র সেসব লোক যারা সত্যিকার অর্থে আঁকড়ে ছিল, তারা সেটা করতে বাধ্য ছিল। তারা স্রেফ যত্ন নেওয়ার ভান করত এবং কখনোই সরাসরি সাহায্য করত না। এটা ছিল আমাদের উভয়ের সময়ের অপচয়।

 

কোনো এক বছর শীতের একটি সময় অনুভূতিহীন হয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত আমি নিজের শরীর কেটে যাচ্ছিলাম। তখন আমি আমার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টটি আবিষ্কার করলাম। আমি বিষণ্ণতায় ভোগার বিষয়টি আর লুকাতে পারলাম না।’

 

সূত্র: সময় সংবাদ
৭ এপ্রিল ২০২১

আরো পড়ুন

ভূমিকম্প মোকাবেলায় কি প্রস্তুত বাংলাদেশ?

নিউজ ডেস্ক

ইউরোপে তাপপ্রবাহে বাড়ছে আতঙ্ক

আন্তর্জাতিক দুর্নীতিতে জড়িত ২২ ব্যক্তি যুক্তরাজ্যে নিষিদ্ধ

নিউজ ডেস্ক