যুক্তরাজ্যের মেট্রোপলিটন পুলিশ “ঘৃণাসূচক একাধিক ঘটনা”-র তদন্ত করছে। যা “খুবই মর্মান্তিক” ঘৃণাজনিত অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
এই মাসে লন্ডনের সাতটি স্থানে ইসলামবিরোধী গ্রাফিতি পাওয়া গিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে মসজিদ, কমিউনিটি সেন্টার এবং একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
মেট্রোপলিটন পুলিশ জানিয়েছে তারা “হেইট ক্রাইম সংক্রান্ত একাধিক ঘটনা” তদন্ত করছে এবং এগুলোকে “মর্মান্তিক” ঘৃণাজনিত অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
এই ঘটনাগুলো ৬ জানুয়ারি সোমবার থেকে ২৩ জানুয়ারি বৃহস্পতিবারের মধ্যে ঘটেছে এবং পুলিশ সেগুলো পরস্পরের সাথে সম্পর্কিত কি না তা তদন্ত করছে বলে জানা যায়। যার মধ্যে তারা সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করবে বলেও জানিয়েছে।
“হেইট ক্রাইম সংক্রান্ত”-এই ঘটনাগুলো একটি টেলিগ্রাম চ্যানেলের হেইট গ্রুপের উসকানি দ্বারা সম্পাদিত হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। মেট পুলিশ জানিয়েছে যে তাদের তদন্ত চলমান।
প্রভাবিত এলাকাগুলোতে পুলিশ টহল বাড়িয়েছে এবং স্থানীয় ধর্মীয় নেতাদের সাথে তারা যোগাযোগ রক্ষা করছে বলে সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানা যায়।
টার্গেট করা স্থান এবং তারিখঃ
ওয়েস্ট নরউড মসজিদ, SE27: সোমবার, ৬ জানুয়ারি
সাউথ নরউড ইসলামিক কমিউনিটি সেন্টার, ক্রয়ডন, SE25: সোমবার, ৬ জানুয়ারি
থর্নটন হিথ ইসলামিক সেন্টার, CR7: বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি
স্ট্রাটফোর্ড মসজিদ, নিউহ্যাম, E15: বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারি
লেটন জামিয়া মসজিদ, E10: বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারি
আলবির ফাউন্ডেশন মসজিদ, E10: বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারি
নূর উল ইসলাম প্রাইমারি স্কুল, E10: শনিবার, ২৫ জানুয়ারি
স্ট্রাটফোর্ড মসজিদ এবং লেটন জামিয়া মসজিদের উপাসকরা স্কাই নিউজকে জানিয়েছেন তাদের ভবনগুলোতে ইসলামবিরোধী গ্রাফিতি আঁকা হয়েছে।
মেট পুলিশের ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার জন সাভেল বলেছেন, ” আমরা বুঝতে পেরেছি ধারাবাহিক মর্মান্তিক ঘৃণাজনিত অপরাধের পর মুসলিম সম্প্রদায়গুলো তাদের নিরাপত্তা নিয়ে বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে।
ঘৃণার কোনো স্থান আমাদের কাছে নেই এবং এটি মোকাবিলা করা আমাদের অন্যতম কাজ। যাতে লন্ডনের সব সম্প্রদায়ের মানুষ নিরাপদ বোধ করেন।
আমাদের স্থানীয় অফিসাররা বিভিন্ন সম্প্রদায়ের নেতাদের সাথে কাজ চালিয়ে যাবেন এবং নিশ্চিত করেছেন একটি পূর্ণাঙ্গ তদন্ত পরিচালিত করা হবে।”
স্ট্রাটফোর্ড ইসলামিক অ্যাসোসিয়েশন স্কাই নিউজকে এক বিবৃতিতে বলেছেন, ” আমাদের মসজিদ ১৯৯৩ সাল থেকে এই সম্প্রদায়ের অংশ এবং এতদিন আমরা আমাদের প্রতিবেশীদের কাছ থেকে শুধু সদয়তা এবং সম্মানই পেয়েছি।
আমরা এই সম্প্রদায়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে গর্বিত এবং আজ আমরা বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের কাছ থেকে অভূতপূর্ব সমর্থন পেয়ে গভীরভাবে মুগ্ধ।”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে,
“পরিষদ এবং পুলিশ আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং তাদের দ্রুত এবং সহানুভূতিপূর্ণ প্রতিক্রিয়ার জন্য আমরা সত্যিই কৃতজ্ঞ।
যারা এই ঘৃণার কাজ করেছে, তারা কেবল নিজেদেরই লজ্জিত করেছে। এটি বিশ্বাসের কাজ নয় – এটি কাপুরুষতার কাজ। কিন্তু তারা আমাদের ভীত করতে পারবে না। আমরা ভয়ে বাস করব না। ঐক্যবদ্ধ সম্প্রদায় হিসেবে আমরা দৃঢ়ভাবে তা মোকাবেলা করবো।”
পুলিশ এই ঘটনার বিষয়ে যে কোনো তথ্যের জন্য ১০১ নম্বরে যোগাযোগ করতে অনুরোধ জানিয়েছে।
এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি বলেও সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানা যায়।
সূত্রঃ বিবিসি
এম.কে
২৫ জানুয়ারি ২০২৫