পর্যাপ্ত তহবিলের অভাবের কারণে ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয় গুলো পড়ুয়াদের কাছে আকর্ষণ হারাতে পারে। বিশেষ করে সীমাবদ্ধ অভিবাসন নীতির কারণে ব্রিটেনে বিদেশি শিক্ষার্থীদের আসার শর্ত কঠোর হওয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
রক্ষণশীল ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের অভিবাসন নীতিতে দেশটিতে আসা আন্তর্জাতিক পড়ুয়াদের আসার ক্ষেত্রে বেশ কিছু বিধিনিষেধ আরোপ হয়েছে। এর ফলে ব্রিটিশ ইউনিভার্সিটিগুলো মাত্রাতিরিক্ত ডাউনগ্রেডিং বা আকর্ষণ হারানোর সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে দেশটির সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী, সুয়েলা ব্র্যাভারম্যান ব্রিটেনে উচ্চ শিক্ষার জন্য এসে পরবর্তীতে স্থায়ীভাবে কিংবা চাকরির জন্য থাকতে চান এমন বিদেশিদের সংখ্যা হ্রাস করার লক্ষ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন।
যেমন, বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য পারিবারিক পুনর্মিলন ভিসার সুবিধা বাতিল করা হয়। অর্থাৎ একজন শিক্ষার্থীর সাথে তার স্পাউস বা স্বামী/স্ত্রী এবং ১৮ বছরের কম বয়সি সন্তানদের আনার পদ্ধতি বাদ দেয়া হয়।
শুধু মাত্র নির্দিষ্ট গবেষণা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ এবং কয়েকটি ব্যতিক্রমী ভিসায় আসা ব্যক্তিদের পরিবার আনার সুযোগ বহাল রাখা হয়।
এই আইনের ফলাফল হিসেবে ব্রিটেনে আবেদন করা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ভিসা আবেদনের হার কমে এসেছে। ২০২৪ সালের প্রথম চার মাসে ২০২৩ সালের একই সময়ের তুলনায় ভিসা আবেদনের সংখ্যা কমেছে ৩০ হাজার।
সরকারের এমন ব্যবস্থার কঠোর সমালোচনা করেছে সংশ্লিষ্টরা। বিশেষ করে ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এ আইনের বিরুদ্ধে সরব। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বাজেটের বড় অংশ আসে বিদেশি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পাওয়া উচ্চমাত্রার টিউশন ফি থেকে।
ব্রিটেনে পড়াশোনা করতে স্থানীয় শিক্ষার্থীদের তুলনায় এশিয়া ও আফ্রিকা থেকে আসা বিদেশিদের অনেক বেশি টিউশন ফি দিতে হয়।
গড়ে বিদেশি শিক্ষার্থীরা প্রতি বছর ২২ হাজার পাউন্ড বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ফি হিসেবে পরিশোধ করে বলে এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ছাড়াও যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিল্প ও বৃহৎ গোষ্ঠীর কর্তারাও মে মাসে প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাককে অভিবাসনবিরোধী পদক্ষেপের জন্য চ্যালেঞ্জ করেছেন। তাদের আশঙ্কা, এই অভিবাসন নীতিগুলো কর্মী নিয়োগে বাধা দেবে এবং অভিবাসীদের ইউরোপ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার মতো দেশগুলোর দিকে ত্বরান্বিত করবে।
এমন অনেক প্রশ্নকে সামনে রেখে ব্রিটেনে আগামী ৪ জুলাইয়ের সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা। নির্বাচনী প্রচারণার কেন্দ্রবিন্দুতে অভিবাসন এবং শিক্ষার মতো বিষয়গুলো জরুরি গুরুত্ব পাচ্ছে।
সূত্রঃ রয়টার্স
এম.কে
১৮ জুন ২০২৪