TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

স্কিল্ড ওয়ার্কার ভিসায় বেতন জটিলতাঃ যুক্তরাজ্য ছাড়তে বাধ্য হিল্ডা কোয়োফি

যুক্তরাজ্যে কয়েক বছর ধরে লিগ্যাল এইড সেক্টরে কাজ করা এবং বহু কৃষ্ণাঙ্গ, এশীয় ও সংখ্যালঘু নারীদের আইন পেশায় প্রবেশে সহায়তা করা সলিসিটর হিল্ডা কোয়োফিকে শেষ পর্যন্ত ঘানায় ফিরে যেতে হয়েছে। স্কিল্ড ওয়ার্কার ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় বেতনসীমা পূরণ করতে না পারায় যুক্তরাজ্যে তাঁর থাকা আর সম্ভব হয়নি।

২০১৬ সালে স্টুডেন্ট ভিসায় যুক্তরাজ্যে আসা কোয়োফি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে পড়াশোনা শেষ করে এলপিসি এমএসসি সম্পন্ন করেন। এরপর দুই বছরের গ্র্যাজুয়েট ভিসায় কমিউনিটি কেয়ার ও মানসিক স্বাস্থ্য আইন বিষয়ে পারালিগাল হিসেবে কাজ করে তিনি মানসিক স্বাস্থ্য আইন বিশেষায়িত ট্রেনিং কনট্র্যাক্ট নিশ্চিত করেন। ছোটবেলা থেকেই আইনজীবী হয়ে সমাজের সবচেয়ে দুর্বল মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর স্বপ্ন ছিল তার।

তবে গ্র্যাজুয়েট ভিসার মেয়াদ শেষ হতে যখন মাত্র ছয় সপ্তাহ বাকি, তখনই সামনে আসে বড় বাধা। স্কিল্ড ওয়ার্কার ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় ৪১,৭০০ পাউন্ড বেতনসীমার তুলনায় কোয়োফির বেতন অনেক কম ছিল। একজন ইমিগ্রেশন সলিসিটরের পরামর্শে তিনি মানবিক ভিত্তিতে ভিসার জন্য আবেদন করেন। ফি, আইনি ব্যয় ও স্বাস্থ্য সারচার্জ মিলিয়ে কোয়োফিকে গুনতে হয় ৫,০০০ পাউন্ড।

আবেদন সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত তিনি যুক্তরাজ্যে কাজ চালিয়ে যেতে পেরেছিলেন। এ সময় তিনি তাঁর ট্রেনিং কনট্র্যাক্ট শেষ করেন, আরেকটি ফার্মে যোগ দেন এবং ল’ সোসাইটির মানসিক স্বাস্থ্য ট্রাইব্যুনাল প্যানেলের স্বীকৃতি অর্জন করেন। পাশাপাশি কালো, এশীয় ও সংখ্যালঘু নারীদের আইন পেশায় এগিয়ে নিতে ‘দ্য BAME ওম্যান ইন ল’ প্ল্যাটফর্ম’ গড়ে তোলেন।

কোয়োফি মনে করেছিলেন তার অভিজ্ঞতা, কাজের ক্ষেত্র এবং অবদান ভিসা পাওয়ার জন্য যথেষ্ট হবে। কিন্তু আবেদন জমা দেওয়ার ১৮ মাস পর গত আগস্টে তাকে জানানো হয়—আবেদনটি গৃহীত হয়নি এবং আপিলেরও কোনো সুযোগ নেই। ফলে ১৭ আগস্ট তাকে যুক্তরাজ্য ছাড়তে বাধ্য করা হয়। দ্রুত সব গুছিয়ে তাকে ফিরে যেতে হয় ঘানায়, যেখানে তিনি আইনি পেশায় যুক্ত হতে পারবেন না যতক্ষণ না পুনরায় আইন স্কুল করা হয়।

তিনি জানান, যুক্তরাজ্যে ফিরে যাওয়ার বিকল্প হিসেবে গ্লোবাল ট্যালেন্ট ভিসার কথা থাকলেও তা প্রধানত শিল্প-সংস্কৃতি খাতের জন্য, আইনজীবীদের জন্য নয়।

কোয়োফির এই অভিজ্ঞতা আবারও আলোচনায় এনেছে লিগ্যাল এইড সেক্টরের জটিলতা এবং নিম্ন বেতন কাঠামোকে। মানসিক স্বাস্থ্য আইনজীবীদের ফি ১৯৯৬ সালের পর কোনো বৃদ্ধি পায়নি, বরং ২০১১ সালে ১০% কমানো হয়। ল’ সোসাইটির তথ্য অনুযায়ী, মানসিক স্বাস্থ্য মামলায় কাজ শুরু করা লিগ্যাল এইড অফিসের সংখ্যা ২০১১ সালের তুলনায় প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে।

কোয়োফির ক্ষেত্রে যেমন দেখা গেছে, লিগ্যাল এইড সেক্টরে বেতন এতটাই কম যে যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও অনেক আইনজীবী স্কিল্ড ওয়ার্কার ভিসার শর্ত পূরণ করতে পারছেন না। এতে সেক্টরের ক্রমাগত জনবল সংকট আরও ঘনীভূত হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সূত্রঃ দ্য ল’ গ্যাজেট

এম.কে

আরো পড়ুন

হালাল টেক, মুসলিম-বান্ধব ওয়েবসাইট এবং অ্যাপের বিকাশ

টিকার চেয়ে লকডাউন বেশি কার্যকর: বরিস জনসন

বৃটেনের রাস্তায় রুঢ় আচরণের শিকার ঋষি সুনাক