ইংলিশ চ্যানেলজুড়ে ছোট নৌকার সংখ্যা কমানো এবং অনিয়মিত অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে নানা পরিকল্পনা নিয়েছে যুক্তরাজ্য সরকার৷ এর অংশ হিসেবে মানবাপাচারের বিরুদ্ধে অভিযান, ডিপোর্টেশন ফ্লাইটের সংখ্যা বাড়ানো, অনিয়মিত অভিবাসীদের শ্রমিক হিসাবে কাজের সুযোগ দেয়া নিয়োগকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা ঘোষণা করেছে ব্রিটিশ সরকার৷
সম্প্রতি ব্রিটেনের কয়েকটি জনমত জরিপে দেখা গেছে, গত আট বছরের মধ্যে অভিবাসন নিয়ন্ত্রণকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসাবে দেখছেন দেশটির জনগণ৷ ইংল্যান্ডের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সাউথপোর্ট শহরে তিন নারীকে হত্যার পর শুরু হওয়া মুসলিম এবং অভিবাসীবিরোধী দাঙ্গার পর বিষয়টি আরো প্রকট হয়েছে৷
দাঙ্গার সময়ে সাউথ ইয়র্কশায়ারের রদারহ্যামে আশ্রয়প্রার্থীদের একটি হোটেলে আগুন দেওয়ারও চেষ্টা হয়৷
ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা হোম অফিস জানিয়েছে, মানবপাচারকারীদের চক্র ভেঙে দিতে একশ জন তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তাকে নিয়োগ করা হবে৷ তারা ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি বা এনসিএ-এর হয়ে কাজ করবেন৷
পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৮ সালেই সবশেষ বেশিসংখ্যক অভিবাসীকে ফেরত পাঠিয়েছিল যুক্তরাজ্য৷ পরের বছরগুলোতে সেই সংখ্যা ক্রমশ কমেছে৷ কিন্তু এখন থেকে সংখ্যাটি বাড়ানোর দিকে নজর দিতে চায় সরকার৷
যেসব নিয়োগকর্তা অনিয়মিত অভিবাসীদের কর্মী হিসাবে নিয়োগ করেন তাদের আর্থিক জরিমানা করাসহ ব্যবসা বন্ধের আদেশও দেয়া হতে পারে৷ শুধু তাই নয়, তাদেরকে আইনের মুখেও দাঁড় করানো হবে বলে জানিয়েছে সরকার৷
হোম অফিস আরো জানিয়েছে, যেসব অনিয়মিত অভিবাসী দেশটিতে কর্মরত আছেন, তাদের মধ্যে যারা নির্বাসনের উপযোগী তাদের ফেরত পাঠানোর আগে আটক করা হবে৷
এক বিবৃতিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়েভেট কুপার বলেন, ‘‘আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ক্ষমতায়ন এবং ডিপোর্টেশন ফ্লাইটের সংখ্যা বাড়ানোর মধ্য দিয়ে আমরা এমন একটি ব্যবস্থাপনা তৈরি করব যা এই সমস্যা নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে৷ কারণ দীর্ঘদিন ধরে চলা বিশৃঙ্খলার কারণে পুরো ব্যবস্থাটি ধ্বংস হয়ে গেছে৷’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘সীমান্ত রক্ষায় আমরা আরো শক্তিশালী ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করছি৷’’
৫ জুলাই যুক্তরাজ্যের ক্ষমতা নেয় লেবার পার্টি৷ এরপর থেকে এখন পর্যন্ত পাঁচ হাজার ৭০০ জনেরও বেশি আশ্রয়প্রার্থী ফ্রান্সের উপকূল থেকে ইংলিশ চ্যানেল পেরিয়ে যু্ক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন৷ ফলে মানবপাচার চক্র ভেঙে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়া লেবার পার্টি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে৷
নির্বাচনে ভূমিধস জয় নিয়ে ক্ষমতাগ্রহণের পর আশ্রয়প্রার্থীদের রুয়ান্ডায় পাঠাতে বিগত সুনাক সরকারের নেয়া পরিকল্পনা বাতিলের ঘোষণা দেয় লেবার পার্টি৷
প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার গত মাসে জানিয়েছেন, জলবায়ু পরিবর্তন এবং দারিদ্র্যসহ অভিবাসনের মূল কারণগুলো মোকাবিলায় অন্যান্য দেশের সঙ্গে একযোগে কাজ করবে যুক্তরাজ্য৷
সূত্রঃ রয়টার্স, এএফপি
এম.কে
২৯ আগস্ট ২০২৪