যুক্তরাজ্য ক্রমেই অপরাধীদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়ে পরিণত হচ্ছে— সাম্প্রতিক ঘটনা সেটি আবারও প্রমাণ করল। বার্লিনে একটি ফাস্টফুড দোকান থেকে পেশাদারিত্বের অভাবে বরখাস্ত হওয়া আফগান বংশোদ্ভূত অভিবাসী পারভিজ হানিফইয়ার এখন লন্ডনের একটি হোটেলে আরাম করে বসবাস করছেন। অথচ কয়েকদিন আগেই তিনি টিকটকে প্রকাশ করেছিলেন স্ত্রী হত্যার উস্কানিমূলক ভিডিও।
হানিফইয়ার প্রায় তিন বছর জার্মানিতে ছিলেন। সেখানকার বার্লিন শহরের একটি কাবাব ও চিকেন দোকান ‘মাঞ্চিস’-এ কাজ করতেন তিনি। কিন্তু ভাষাগত অদক্ষতা ও নিয়মিত দেরি করায় গত বছরের ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে পরীক্ষামূলক সময় শেষ হওয়ার আগেই চাকুরি চলে যায়। সূত্র জানায়, তার আচরণ মোটেও পেশাদার ছিল না।
চাকুরি হারানোর পরও হানিফইয়ার জার্মানিতে বিনা ভাড়ার দাতব্য আশ্রয়কেন্দ্রে থাকার সুযোগ ও কাজ করার অনুমতি পেয়েছিলেন। তবুও তিনি সেটি ছেড়ে একটি ডিঙ্গি নৌকায় করে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান। জানা গেছে, তিনি জার্মানিতে নগদ টাকায় কাজ করছিলেন, কিন্তু যুক্তরাজ্যে এসে বিনামূল্যে থাকার ও খাওয়ার সুবিধা নেওয়ার উদ্দেশ্যেই এই যাত্রা।
যুক্তরাজ্যে পৌঁছে হানিফইয়ার সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় হয়ে ওঠেন। সম্প্রতি তিনি টিকটকে এক ভিডিওতে পুরুষদের উদ্দেশ্যে স্ত্রী যদি সংসার ছাড়তে চান তবে তাকে কীভাবে হত্যা করা যায়— সে বিষয়ে বিস্তারিত নির্দেশনা দেন। এই ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি করে। পরে গণমাধ্যমের অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে টিকটক কর্তৃপক্ষ তার অ্যাকাউন্ট স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয়।
সমালোচকদের মতে, এই ঘটনা আবারও দেখিয়ে দিল, যুক্তরাজ্যের আশ্রয় নীতি কতটা দুর্বল এবং কীভাবে অপরাধপ্রবণ ব্যক্তিরা সেই সুযোগ নিয়ে নিরাপদ আশ্রয় গড়ে তুলছে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কাজ ও থাকার সুযোগ পেয়েও অনেকে যুক্তরাজ্যে আসছে মূলত সুবিধা ও ভাতা নেওয়ার জন্য, যা ব্রিটিশ সমাজে বিতর্ক ও অসন্তোষ আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।
সূত্রঃ দ্য সান
এম.কে
১৬ আগস্ট ২০২৫