অনিয়মিত অভিবাসন বন্ধে স্লোভেনিয়া এবং হাঙ্গেরির সঙ্গে থাকা সীমান্তে নজরদারি আবারও বাড়াতে চায় অস্ট্রিয়া। গত বছর, দেশটিতে ২০২১ সালের তুলনায় তিনগুণ আশ্রয় আবেদন নথিভুক্ত হয়েছে।
অস্ট্রিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গেরহার্ড কার্নার দেশটির সরকারি রেডিও ওআরএফকে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ বাড়ানোর বিষয়টি আমরা আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ইউরোপীয় কমিশনকে অবহিত করব।”
স্লোভেনিয়া এবং হাঙ্গেরি সীমান্তে নজরদারি ব্যবস্থা আরও ছয় মাসের জন্য বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) সেনজেন জোনের সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে ছয় মাসের জন্য সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ পুনর্বহাল করার অনুমতি দেয়। তবে সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার নবায়ন শুধু অনুমোদিত, যৌক্তিক কারণ ও ব্যতিক্রমী পরিস্থিতিতে করা যায়।
গত বছর অস্ট্রিয়া এবং ফ্রান্সের মতো সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে ২০১৫ সালে প্রবর্তিত সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার সমালোচনা করেছিল ইইউ-এর কোর্ট অফ জাস্টিস (সিজেইইউ)। এই ধরনের ব্যবস্থা ছয় মাসের বেশি মেয়াদের হওয়া উচিত নয় বলেও মতামত জানায় আদালত৷
সীমান্ত নিয়ন্ত্রণের কারণ ব্যাখ্যায় দেশটির ভূখণ্ডে অনিয়মিত অভিবাসীদের অবৈধ আগমন বেড়ে যাওয়ার বিষয়টিকে সামনে রাখছে ভিয়েনা৷
তুরস্ক, বুলগেরিয়া, উত্তর মেসিডোনিয়া এবং সার্বিয়া হয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নে ঢুকতে প্রধান স্থান হিসেবে পশ্চিম বলকান রুট অভিবাসনপ্রত্যাশীদের কাছে দীর্ঘদিন ধরে জনপ্রিয়।
ইউরোপীয় বহিঃসীমান্ত নজরদারি সংস্থা ফ্রন্টেক্স জানিয়েছে, ২০২২ সালের ইউরোপের বহিঃসীমান্তে তিন লাখ ৩০ হাজার অবৈধ পারাপার নথিভুক্ত করেছে। যা ২০২১ সালের তুলনায় ৬৪ শতাংশ বেশি৷ এই সংখ্যাটি ২০১৬ সালের পর থেকে সর্বোচ্চ৷
ইইউ কমিশনের মতে, ২০২১ সালের তুলনায় গত বছর ইইউতে আশ্রয়ের আবেদন ৪৬.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ইউ-তে প্রায় নয় লাখ ২৪ হাজার আবেদন জমা পড়েছে।
অপরদিকে, ২০২২ সালে তিনগুণ আশ্রয় আবেদন নথিভুক্ত করেছে অস্ট্রিয়া। ইইউ দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ আশ্রয় আবেদন বৃদ্ধিতে শীর্ষে আছে দেশটি।
স্লোভাকিয়া থেকে অস্ট্রিয়ায় অনিয়মিত অভিবাসীদের আগমন নিয়ন্ত্রণ চলতি বছরের মার্চ মাসে যৌথ পুলিশ টহল স্থাপন করে দুই দেশ। ভিয়েনা নিজেদের ভূখন্ডের বাইরেও কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সার্বিয়ায় উত্তর মেসিডোনিয়ার সীমান্তে ১০০ পুলিশ সদস্য মোতায়েন করেছে অস্ট্রিয়া।
অস্ট্রিয়া বছরের পর বছর ধরে অনিয়মিত অভিবাসনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দেশটির দৃঢ় পদক্ষেপের পক্ষে কথা বলে আসছে। চ্যান্সেলর কার্ল নেহামার গত ডিসেম্বরে বলেন, ইইউ সীমান্ত রক্ষার জন্য কাঁটাতারের বেড়া অপরিহার্য।