TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

আন্তর্জাতিক আইন বিতর্কের মধ্যেও প্যালেস্টাইনকে স্বীকৃতি দিতে প্রস্তুত যুক্তরাজ্য

প্যালেস্টাইন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিলে তা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করতে পারে—ব্রিটেনের শীর্ষ আইনজীবীদের এমন সতর্কবার্তার জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী জনাথন রেইনল্ডস বলেছেন, এই উদ্বেগ “মূল বিষয় থেকে বিচ্যুত”।

প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টার্মার ঘোষণা করেছেন, ইসরায়েল যদি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় এবং দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের সম্ভাবনা পুনরুজ্জীবিত করে, তবে যুক্তরাজ্য প্যালেস্টাইন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে। এর আগে ৪৩ জন ক্রস-পার্টি পিয়ারস অ্যাটর্নি জেনারেল লর্ড হারমারকে চিঠি দিয়ে স্বীকৃতি না দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

চিঠিতে তারা উল্লেখ করেছেন, প্যালেস্টাইনের সীমান্ত অনির্দিষ্ট, কার্যকর সরকার নেই এবং হামাস—একটি সন্ত্রাসী সংগঠন—গাজার নিয়ন্ত্রণে। তাদের মতে, ১৯৩৩ সালের মন্টেভিদিও কনভেনশনের মানদণ্ড পূরণ না করায় প্যালেস্টাইন রাষ্ট্র স্বীকৃতির যোগ্য নয়। যদিও যুক্তরাজ্য এই কনভেনশনে স্বাক্ষর করেনি, আইনজীবীরা বলেন এটি প্রচলিত আন্তর্জাতিক আইনের অংশ হয়ে উঠেছে।

বিবিসি রেডিও ৪-এ জনাথন রেইনল্ডস বলেন, “সহকর্মীদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, এটি মূল বিষয় থেকে বিচ্যুত। আমাদের উদ্দেশ্য কেবল যুদ্ধবিরতি নয়, বরং একটি স্থায়ী শান্তি প্রক্রিয়া শুরু করা, যা দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান ছাড়া সম্ভব নয়।”

তিনি স্পষ্ট করেন, হামাসকে কোনো আলোচনার অংশ করা হবে না। “হামাস একটি সন্ত্রাসী সংগঠন, আমরা তাদের সঙ্গে কোনো শর্তে আলোচনা করি না। আমাদের দীর্ঘদিনের অবস্থান হলো, সব জিম্মিকে মুক্তি দিতে হবে এবং হামাস ভবিষ্যতে কোনো প্যালেস্টাইন সরকারের অংশ হতে পারবে না,” বলেন রেইনল্ডস।

পিয়ারসদের এই অবস্থান এসেছে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সমালোচনার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে। নেতানিয়াহু বলেন, এই পদক্ষেপ “হামাসের সন্ত্রাসবাদকে পুরস্কৃত করছে।” অন্যদিকে, কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কারনি দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের অংশ হিসেবে প্যালেস্টাইনকে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন।

যুক্তরাজ্য জানিয়েছে, আসন্ন সেপ্টেম্বরের জাতিসংঘ সম্মেলনে ইসরায়েল যদি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় এবং পশ্চিম তীরে ভূমি দখল বন্ধ করে, তবে তারা প্যালেস্টাইনকে স্বীকৃতি দেবে। স্টার্মার আরও শর্ত দিয়েছেন, হামাসকে জিম্মি মুক্তি, নিরস্ত্রীকরণ এবং ভবিষ্যৎ শাসন থেকে সরে দাঁড়াতে হবে।

এদিকে আন্তর্জাতিক আইন বিষয়ক বিতর্ক তীব্র হচ্ছে। ৮০০-এর বেশি আইনজীবী অভিযোগ করেছেন, ইসরায়েল গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং গণহত্যা চালাচ্ছে, যা জেনেভা কনভেনশন লঙ্ঘনের শামিল। এই প্রেক্ষাপটে যুক্তরাজ্যের সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বড় কূটনৈতিক প্রভাব ফেলবে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা।

সূত্রঃ বিবিসি

এম.কে
৩১ জুলাই ২০২৫

আরো পড়ুন

স্থুলতা মহামারী আকার ধারন করতে যাচ্ছে যুক্তরাজ্যে

যুক্তরাজ্যের নটিংহ্যাম কাউন্সিলের দেউলিয়া ঘোষণা

যুক্তরাজ্যের দুই-তৃতীয়াংশ পরিবার জানুয়ারি নাগাদ জ্বালানি দারিদ্র্যের মধ্যে পড়তে পারে