ইটালির দ্বীপ সিসিলিতে প্রত্নতত্ত্ববিদদের সঙ্গে কাজ করছেন ছয় অভিবাসী। তারা ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইটালিতে আসেন বলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের এক বিশেষ প্রতিবেদনে জানা যায়।
খবরে জানা যায়, ইটালির সিসিলি দ্বীপের সেগেস্টা পার্কে কাজ করছেন সুইজারল্যান্ডের জেনেভা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতাত্ত্বিকরা। তাদের সহযোগিতা করছেন সিসিলির ছয় অভিবাসী। প্রকল্পটি এখন পর্যন্ত বেশ সফল। তারা একটি হেলেনিক আমলের একটি পুরানো রাস্তা খুঁড়ে বের করেছেন।
প্রকল্পের একজন প্রত্নতত্ত্ববিদ আলেসিয়া মিসট্রেটা। তিনি বলেন, “এই তরুণেরা যে একাগ্রতা নিয়ে কাজ করছে তা সত্যিই প্রশংসার যোগ্য। কয়েক বছর আগে একইরকম আরেকটি উদ্যোগ নিয়েছিলাম মার্সালার লিলিবেও প্রত্নতাত্ত্বিক পার্কে।”
সেগেস্টা প্রত্নতাত্ত্বিক পার্কের পরিচালক লুইগি বিওন্দো। এ বিষয়ে তিনি বলেন, “গুরুত্বপূর্ণ কিছু খুঁজে পাবার পর এই তরুণদের চোখগুলো দেখার মত। তারা বুঝতে পারছে ঐতিহাসিক গুরুত্ব আছে এমন কিছু তারা করছে।”
প্রকল্পটির নাম ‘আর্কিওলজি ফর সলিডারিটি’ বা সংহতির জন্য প্রত্নতত্ত্ব। এর অর্থায়ন করছে মার্সালার কাসা বেলভেদেরে মাইগ্রেশন রেসেপশন সেন্টার ও সেগেস্ট প্রত্নতাত্ত্বিক পার্ক।
মার্সালার কাসা বেলভেদেরে মাইগ্রেশন রেসেপশন সেন্টার ও সেগেস্ট প্রত্নতাত্ত্বিক পার্কের একজন মুখপাত্র বলেন, তরুণ এই অভিবাসীরা প্রতিদিন সূর্যাস্তের আগে ঘুম থেকে ওঠেন। নাশতা সেরে মার্সালার মাইগ্র্যান্ট সেন্টার থেকে বাসে চেপে রওনা হন সেগেস্টার পথে। সেখানে পৌঁছে প্রত্নতাত্ত্বিকদের সঙ্গে কাজ শুরু করেন। এই ছয়জনই মুসলিম এবং রমজান মাস হওয়ায় তাদের দুপুরের পর লম্বা বিরতি দেয়া হয়।
তারা খুব আনন্দ নিয়ে কাজ করেন। তারা ছবি তুলে পরিবারের কাছে পাঠান। কারো কারো আশা এই অভিজ্ঞতা থেকে দীর্ঘস্থায়ী কাজের সুযোগ হয়তো মিলবে।
ছয় অভিবাসীর একজন সাব-সাহারা থেকে আসা মনডে। তিনি ২০১৭ সালে সিসিলি আসেন। এখন বেশ ভালো ইটালিয়ান বলতে পারেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমকে মনডে বলেন, “আমি মাঠে কাজ করতাম। কিন্তু এই কাজটা ভিন্ন। শুধু শক্তি প্রয়োজন হয় না, বুদ্ধিও দরকার। আমরা একটি প্রত্নতাত্ত্বিক এলাকায় কাজ করছি, যা সিসিলির ইতিহাসের অংশ। বিষয়টি রোমাঞ্চকর।”
মনডে আরো বলেন, “শুধু ভাষা শেখার জন্য নয়, আমি পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চাই যেন যে দেশে আছি তার সংস্কৃতি সম্পর্কে আরো জানতে পারি। আমি এমন কিছু করতে চাই, যা এখানে কাজে লাগবে।”