5.5 C
London
December 26, 2025
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

কনজেশন চার্জে বড় পরিবর্তনঃ ইলেকট্রিক গাড়ির পূর্ণ ছাড় তুলে নিলেন সাদিক খান

লন্ডনে কনজেশন চার্জ ব্যবস্থায় বড় পরিবর্তন কার্যকর হতে যাচ্ছে আজ থেকে। মেয়র সাদিক খানের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সেন্ট্রাল লন্ডনে প্রবেশে ইলেকট্রিক গাড়ির জন্য থাকা শতভাগ ক্লিনার ভেহিকল ডিসকাউন্ট (CVD) আনুষ্ঠানিকভাবে বাতিল করা হয়েছে। এর ফলে দীর্ঘদিন ধরে যে সুবিধা ইভি চালকেরা পেয়ে আসছিলেন, তার অবসান ঘটল।

 

যদিও বড়দিনে কনজেশন চার্জ কার্যকর থাকে না, তবুও আজ থেকেই ছাড়ের মেয়াদ শেষ হয়েছে। ফলে চার্জ পুনরায় চালু হলেই ইলেকট্রিক গাড়ির চালকদের দৈনিক সড়ক কর দিতে হবে। এই পরিবর্তনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল গত নভেম্বর মাসে, তখন মেয়র স্পষ্ট করেন যে এই ছাড় কখনোই স্থায়ী ছিল না।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বর্তমানে এক লাখ ১২ হাজারের বেশি যানবাহন ক্লিনার ভেহিকল ডিসকাউন্টের আওতায় নিবন্ধিত। স্কিম চালুর সময় এই সংখ্যা ছিল মাত্র বিশ হাজারের কিছু বেশি। সাদিক খানের মতে, ছাড় অব্যাহত থাকলে আগামী বছর গড়ে প্রতিদিন প্রায় ২,২০০টি অতিরিক্ত গাড়ি কনজেশন চার্জ জোনে প্রবেশ করত, যা যানজট আরও বাড়িয়ে দিত।

নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২ জানুয়ারি ২০২৬ থেকে সম্পূর্ণ ছাড়ের পরিবর্তে একটি স্তরভিত্তিক ডিসকাউন্ট ব্যবস্থা চালু হবে। কোনো ছাড় পেতে হলে ইলেকট্রিক গাড়ির মালিকদের অবশ্যই ট্রান্সপোর্ট ফর লন্ডনের অটো পে (Auto Pay) সিস্টেমে নিবন্ধন করতে হবে। নিবন্ধন না করলে কোনো ধরনের ছাড় পাওয়া যাবে না।

একই সঙ্গে কনজেশন চার্জের পরিমাণও বাড়ানো হয়েছে। একই দিন বা আগাম পরিশোধ করলে দৈনিক চার্জ হবে £১৮, আর তিন দিন পরে পরিশোধ করলে দিতে হবে £২১। অটো পেতে নিবন্ধিত ইলেকট্রিক গাড়ির চালকেরা পাবেন ২৫ শতাংশ ছাড়, ফলে তাদের দৈনিক খরচ দাঁড়াবে £১৩.৫০। ইলেকট্রিক ভ্যান ও ভারী যানবাহনের ক্ষেত্রে ছাড় হবে ৫০ শতাংশ, অর্থাৎ দৈনিক £৯।

এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে রাজনৈতিক বিতর্কও শুরু হয়েছে। কনজারভেটিভ লন্ডন অ্যাসেম্বলি সদস্য সুসান হল অভিযোগ করেছেন, মেয়র এই নীতির মাধ্যমে গাড়িচালকদের লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছেন এবং এটি যানজট কমানোর চেয়ে রাজস্ব বাড়ানোর উদ্যোগ বেশি।

তবে সাদিক খান এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেন, এই পদক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য যানজট নিয়ন্ত্রণ, নির্গমন কমানো নয়—যা ইউলেজের লক্ষ্য।
পরিবহন বিশেষজ্ঞরাও সতর্ক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। অটো এক্সপ্রেসের সম্পাদক পল বার্কার বলেন, যারা এতদিন কনজেশন চার্জ না দিয়ে চলেছেন, তাদের জন্য হঠাৎ করে সপ্তাহে প্রায় £৯০ পর্যন্ত খরচ বড় ধাক্কা হতে পারে। বিশেষ করে যারা পরিবেশগত কারণ দেখিয়ে ইলেকট্রিক গাড়িতে রূপান্তর করেছিলেন, তারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

ভবিষ্যতে এই ছাড় আরও কমানো হবে বলেও জানানো হয়েছে। মার্চ ২০৩০ থেকে ইলেকট্রিক গাড়ির ছাড় নেমে আসবে মাত্র ১২.৫ শতাংশে, আর ভ্যান ও ভারী যানবাহনের ক্ষেত্রে তা হবে ২৫ শতাংশ। এছাড়া মার্চ ২০২৭ থেকে কেবল ইলেকট্রিক গাড়ি চালানো বাসিন্দারাই ৯০ শতাংশ রেসিডেন্টস ডিসকাউন্টের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

সব মিলিয়ে, কনজেশন চার্জ ব্যবস্থায় এই পরিবর্তন লন্ডনের পরিবহন নীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় হিসেবে দেখা হচ্ছে। যানজট নিয়ন্ত্রণের যুক্তি তুলে ধরা হলেও, বাড়তি আর্থিক চাপ সাধারণ চালকদের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

সূত্রঃ জিবি নিউজ

এম.কে

আরো পড়ুন

ইংল্যান্ডের স্কুল শিক্ষার্থীদের মাস্ক ব্যবহার নিয়ে বিতর্ক

প্যালেস্টাইন অ্যাকশনকে ‘সন্ত্রাসী’ ঘোষণার পথে যুক্তরাজ্য, নিন্দা ঝড় রাজনৈতিক মহলে

‘অ্যান্ড্রু সমস্যা’ সমাধানেই উইলিয়ামের রাজসিংহাসন আরোহণ সহজ হতে পারে